মাস্টার্স ডিগ্রি সবার জন্য নয়: ইউজিসি

মাস্টার ডিগ্রি ঢালাওভাবে সবার জন্য উন্মুক্ত রাখার পক্ষে নয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষা কার্যক্রম কেবল বাছাই স্নাতকদের জন্য উন্মুক্ত রাখার সুপারিশ করেছে উচ্চশিক্ষা তদারককারী প্রতিষ্ঠানটি।

ইউজিসির সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে (৪১তম বার্ষিক প্রতিবেদন ২০১৪) এই সুপারিশ করা হয়।

প্রতিবেদনটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়েছে। জাতীয় সংসদের আসছে অধিবেশনে এই সুপারিশমালা তোলা হবে বলে জানা গেছে।

সুপারিশে বলা হয়, চার বছর মেয়াদি স্নাতক ডিগ্রি ‘প্রান্তিক ডিগ্রি’ হিসেবে গণ্য হয়। তাই মাস্টার্স পর্যায়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুধু মেধাবী স্নাতকদের জন্য উন্মুক্ত রাখা প্রয়োজন।

কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এই নীতি অনুসরণ করছে না উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ফলে মাস্টার্স পর্যায়ে উচ্চশিক্ষার কাঙ্ক্ষিত গুণগত মান নিশ্চিত করা যেমন সম্ভব হচ্ছে না, তেমনি উচ্চমানের শিক্ষা লাভ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সত্যিকারের মেধাবীরা।

ইউজিসি তার পর্যবেক্ষণে জানায়, অনেক সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং স্নাতক পর্যায়ের কলেজগুলোতে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা কিংবা যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক নেই। তার পরও মাস্টার্স ডিগ্রি কোর্স চালু করা হয়েছে। এসব কারণে ওই প্রতিষ্ঠানগুলোতে মাস্টার্স পর্যায়ে মানসম্মত শিক্ষাদান হচ্ছে না।

সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধাসংবলিত প্রতিষ্ঠানে মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য মাস্টার্স প্রোগ্রাম সীমিত রাখার সুপারিশ করে ইউজিসি।

উচ্চশিক্ষা তদারককারী প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিবছর দেশের সদ্য স্নাতক ডিগ্রিপ্রাপ্ত সেরা শিক্ষার্থীরা পোস্ট গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার জন্য দেশ ছেড়ে যাচ্ছেন। তাদের বেশির ভাগই আর দেশে ফেরেন না। ফলে এসব মেধাবী তরুণের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দেশ। সেই সঙ্গে ব্যাহত হচ্ছে দেশে এমফিল ও পিএইচডি পর্যায়ে গবেষণার উৎকর্ষ সাধন।

মেধাবী স্নাতকদের দেশেই পোস্ট গ্রাজুয়েট শিক্ষা নিতে আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে উচ্চতর গবেষণার সুযোগ-সুবিধা উন্নয়ন এবং শিক্ষার্থীদের জন্য আকর্ষণীয় বৃত্তি প্রবর্তন করা প্রয়োজন বলে মনে করে ইউজিসি।

ইউজিসির এই সুপারিশ সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক শিক্ষাবিদ আনিসুজ্জামান ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না থাকলে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাস্টার্স প্রোগ্রাম চালু করা সমীচীন নয়। কারণ সেখানে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ থাকে না। তবে শিক্ষা সংকুচিত হয় এমন উদ্যোগ গ্রহণ করাও ঠিক হবে না বলে মনে করেন তিনি।

অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, “আমি চাইব, শিক্ষা যাতে দিন দিন প্রসার লাভ করে এমন উদ্যোগ নেয়া হবে। পাশাপাশি শিক্ষা লাভের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধাও নিশ্চিত করতে হবে।”



মন্তব্য চালু নেই