মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে শিগগিরই ‘জিটুজি প্লাস’ চুক্তি

মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর জন্য শিগগিরই ‘জিটুজি প্লাস’ চুক্তি সই হবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম। তবে এ ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতাসম্পন্নদেরই বিবেচনা করা হবে বলে জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার প্রবাসীকল্যাণ ভবনে ‘আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এসব তথ্য জানান। এ সময় প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হজরত আলী, বিএমইটির ডিজি বেগম শামসুন নাহারসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী বলেন, মালয়েশিয়ায় বড় পরিসরে কর্মী পাঠাতে অচিরেই ‘জিটুজি প্লাস’ চুক্তি সই হবে। যেসব রিক্রুটিং এজেন্সির ট্র্যাক রেকর্ড ভালো, মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণে যাদের অতীত অভিজ্ঞতা আছে, তারাই কর্মী পাঠাবে। এখানে কোনো সিন্ডিকেট হবে না।

চুক্তির সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমরা সর্বশেষ অবস্থায় এসে পৌঁছেছি। এমওইউ সই শুধু বাকি আছে। সেটা হলেই লোক যাওয়া শুরু করবে।’

প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় কিন্তু জিটুজি পদ্ধতিতে এখনো কর্মী যাচ্ছে। বড় পরিসরে যাচ্ছে না। অতিরিক্ত লোক যাওয়ার পরে সেখানে খেতে পাবে না, বাসস্থান পাবে না, বসে থাকবে- এটা আমরা চাই না। বড় পরিসরে কর্মী যাবে। তবে কর্মীর কর্ম ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই যাবে। এটা নিশ্চিত হওয়ার পরই আমরা জিটুজি প্লাস সমঝোতা সই করব।’

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে নুরুল ইসলাম বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় সিন্ডিকেটের বিষয়টি আমার জানা নেই। মালয়েশিয়ার কোম্পানি আমাদের বলেনি যে সিন্ডিকেট হবে। আমরা যে সমঝোতা সই করতে যাচ্ছি, সেখানে কিন্তু বায়রা বলি নাই। আমরা বিআরএ (বাংলাদেশ রিক্রুটিং এজেন্সি) বলেছি। আমরা কারো পক্ষে নেই। বাংলাদেশ রিক্রুটিং এজেন্সির যত ভালো ভালো কোম্পানি আছে, ট্র্যাক রেকর্ড যাদের ভালো, মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণে যাদের অভিজ্ঞতা আছে এসব এজেন্সির নাম মালয়েশিয়ায় পাঠাব।’

সৌদি সামরিক জোটে বাংলাদেশ যোগ দিলে বাংলাদেশের কর্মীরা আইএসের টার্গেট হবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ সরকারের নীতির ফলে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের একটা সমঝোতা হচ্ছে। এ সমঝোতার আগেই আমি সৌদিতে যাব। সমঝোতা হলে অসুবিধা কিসের। আমাদের দেশে তো আর আইএস নেই। সমস্ত পৃথিবীতে মুসলমানদের ক্ষতি করে ফেলছে তারা। আইএস কি কোনো দেশ স্থাপন করতে পারবে? স্ট্যান্ড নিতে পারবে? এটা একটা উগ্রবাদী সংগঠন, এটা নিয়ে কথা বলতে চাই না।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় ৯৬ লাখ নাগরিক অভিবাসী হিসেবে ১৬০টি দেশে সুনামের সঙ্গে কাজ করছে। চলতি বছরের ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫ লাখ ২৩ হাজার ৫৯৮ জন কর্মী বিদেশে গেছে। চলতি বছরের বাকি সময়ে এ সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৫ লাখ হবে এবং এ সংখ্যা প্রতিবছর বৃদ্ধি পাবে বলে আমরা আশা করছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘এ বছর আমাদের প্রবাসী ভাই-বোনদের প্রেরিত রেমিট্যান্সের অঙ্ক ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে গিয়ে দাঁড়াবে। রেমিট্যান্স থেকে প্রাপ্ত আয় দেশের মোট জাতীয় উৎপাদনে (জিডিপি) তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখছে।’

অভিবাসী দিবসের কর্মসূচি সম্পর্কে মন্ত্রী জানান, ‘বিশ্বময় অভিবাসন, সমৃদ্ধ দেশ, উৎসবের জীবন’ প্রতিপাদ্যে এবার আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস পালিত হবে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিবাসনের গুরুত্ব আগের তুলনায় এখন অনেক বেশি।

এ ছাড়া অনুষ্ঠানে জানানো হয়, অভিবাসী দিবস উপলক্ষে শুক্রবার দিনব্যাপী কর্মসূচি রয়েছে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের। এর মধ্যে সকাল ৮টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা থেকে র‌্যালি, সকাল সাড়ে ৯টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অভিবাসী মেলাসহ দিনব্যাপী কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।



মন্তব্য চালু নেই