মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের নোটিশে তোলপাড়

অবশেষে নীরবতা ভেঙ্গেছে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস। দেশটিতে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের বৈধতার বিষয়ে বুধবার রাতে দূতাবাসের ফেসবুক পেইজে শ্রমিকদের অবগতির জন্য একটি (পোস্ট) নোটিশ দেয়া হয়েছে।

এদিকে, ওই নোটিশকে কেন্দ্র করে ফেসবুকে তুলকালাম অবস্থা চলছে। দূতাবাসের ওই নোটিশ পোস্টের ৬ ঘণ্টার মধ্যে কমপক্ষে ৫০০ ফেসবুক ইউজার শেয়ার করেছেন। কমেন্টস করেছেন অনেকেই। তবে কারো কমেন্টসেরই উত্তর দেয়নি দূতাবাস। এর মধ্যে কয়েকজন প্রবাসী টেলিফোনে দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো গাইডলাইন পাননি বলে দূতাবাসের ফেসবুক পেজে অভিযোগ করে কমেন্টস করেছেন।

আশরাফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি স্টুডেন্ট ভিসায় মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পর ভিসার মেয়াদ শেষে রিনিউ করেননি। ফলে তিনি ‘অবৈধ’হয়ে পড়েছেন। তিনি যে এলাকায় থাকেন সেখানে নিয়মিত পুলিশি অভিযান চলছে। তাই দেশে ফিরতে চাইছেন। কিন্তু কীভাবে আউটপাস নিয়ে দেশে ফিরবেন তা জানতে চেয়ে ওই নোটিশ দেয়ার পরই কমেন্টস করেছেন কিন্তু ৬ ঘণ্টা পরও উত্তর পাননি।

হোসাইন কবির বিন সুলতান নামে একজন কমেন্টস করেছেন, তিনি ২০১১ সালের জুন মাসে সিক্সপি প্রোগ্রামে ফিঙ্গার প্রিন্ট করেছিলেন, অ্যাপ্রুভালও হয়েছিলো। কিন্তু লেভির টাকা জমা দেয়নি দালালেরা। তাই ওই সময় বৈধ হতে পারেন নি। তিনি এখন কী করবেন জানতে চেয়েছেন। কিন্তু কমেন্টসের ৪ ঘণ্টা পরও রিপ্লাই পাননি।

অবৈধদের বৈধ হতে রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ দিয়েও কেনো ধরপাকড় করা হচ্ছে, এরকম প্রশ্ন করেছেন কয়েকজন। তবে তাদের প্রশ্নেরও রিপ্লাই দেয়নি দূতাবাস। এছাড়া ইতোমধ্যে পুলিশ যাদের ধরেছে তাদের মুক্তির বিষয়েও কোনো উদ্যোগ নেয়নি বলে জানা গেছে।

এদিকে বাংলাদেশ দূতাবাসের ওই নোটিশে বলা হয়েছে, মালয়েশিয়ার সরকার ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে তিন মাসব্যাপী একটি প্রকল্প চালু করেছে।

দূতাবাসের ওই নোটিশে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রায় তিন লাখসহ অন্যান্য দেশের ২০ লক্ষাধিক শ্রমিক মালয়েশিয়ায় আছে যাদের বৈধভাবে কাজের কেনো অধিকার নেই। উক্ত অবৈধদের বৈধ করতে বাংলাদেশসহ ১৫টি সোর্স কান্ট্রিকে ১টি গ্রুপে এবং ইন্দোনেশিয়া-মিয়ানমারকে আলাদা করতে রেজিস্ট্রেশনের জন্য মোট ৫টি কোম্পানিকে দায়িত্ব দিয়েছে মালয়েশিয়ার সরকার।

নোটিশে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ হাই কমিশনের লেবার সেকশন এবং মালয়েশিয়ান রি হাইয়ারিং প্রকল্পের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিবন্ধনের জন্য ২টি সেক্টরে ভাগ করেছে, একটি এমপ্লয়মেন্ট তথা শ্রমিকদের অন্যটা টুরিস্ট/ সোশ্যাল ভিজিট।

যারা বৈধ হওয়ার জন্য নিবন্ধন করাতে পারবেন:

ক্যাটাগরি এ:
যে সব বাংলাদেশি শ্রমিক মালয়েশিয়া আসার সময় যে কোম্পানির মাধ্যমে এসেছিল এখনো সেই কোম্পানিতে আছে যদি তারা ৬ মাসের বেশি সময় ধরে অবৈধ বা ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া আছে। তারা ওই কোম্পানিতে বা অন্য কোম্পানিতে মালিকের মাধ্যমে নিবন্ধিত হওয়ার পর ৫ বছর পর্যন্ত ভিসা রিনিউ করাতে পারবে।

যে সব বাংলাদেশি শ্রমিক মালয়েশিয়া আসার সময় যে কোম্পানির মাধ্যমে এসেছিল বর্তমানে অন্য কোম্পানিতে আছে এবং ৬ মাসের বেশি সময় ধরে অবৈধ বা ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া আছে। তারা ওই কোম্পানিতে বা অন্যকোনো কোম্পানিতে মালিকের মাধ্যমে নিবন্ধিত হওয়ার পর ৩ বছর পর্যন্ত ভিসা রিনিউ করাতে পারবে।

সোশ্যাল‬ ভিজিট বা টুরিস্ট:
যারা সোশ্যাল ভিজিট বা টুরিস্ট ভিসায় এসেছিল তারা আগস্ট ২০১৫ থেকে ভিসার মেয়াদ না থাকলে বৈধ হবার জন্য নিবন্ধন করাতে পারবে যে কোনো কোম্পানির মালিকের মাধ্যমে। ভিসা কত বছরের রিনিউ হবে এইটা কোম্পানি ঠিক করবে।

‎যারা‬ যারা নিবন্ধন করাতে পারবেনা:
নৌ পথে অথবা থাইল্যান্ড/ ইন্দোনেশিয়া/ সিঙ্গাপুর বর্ডার হয়ে মালয়েশিয়া প্রবেশ করলে বা নন গেজেটেড এন্ট্রি হলে, স্টুডেন্ট ভিসায় মালয়েশিয়া প্রবেশ করলে, ২০১১ সালের ১৫ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত মালয়েশিয়া সরকারের ৬-পি কর্মসূচির আওতায় নিবন্ধন করা থাকলে, কোম্পানি কোনো শ্রমিককে কালো তালিকাভুক্ত বা ব্ল্যাক লিস্ট করে রাখলে, প্রফেশনাল ভিসায় অবস্থান করার পর অবৈধ হয়ে গেলে।



মন্তব্য চালু নেই