শ্রমিক নেওয়া স্থগিত

মালয়েশিয়ার সিদ্ধান্তে বিভ্রান্তির কিছু নেই

মালয়েশিয়া বিদেশি শ্রমিক নেওয়া স্থগিত রাখার যে ঘোষণা দিয়েছে তাতে বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।

শুক্রবার মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমেদ বলেন, বিষয়টি যেহেতু বাংলাদেশকে অফিসিয়ালি জানানো হয়নি তাই এ নিয়ে বিভ্রান্ত হতে হবে না।

এর আগে মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বারনামা এক প্রতিবেদনে বলেছে, বিদেশি শ্রমিক নেওয়া স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন সে দেশের উপ-প্রধানমন্ত্রী আহমেদ জাহিদ হামিদি। শুক্রবার সেনাবাহিনীর একটি ক্যাম্পে এক বৈঠকের পর তিনি এ কথা বলেন।

কিন্তু এ ঘোষণার আগের দিনই বাংলাদেশ থেকে ১৫ লাখ শ্রমিক নিতে সমঝোতা স্মারকে সই করেছে মালয়েশিয়া। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইস্কাটনে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে বেসরকারি রপ্তানিকারকদের যুক্ত করে সরকারি ব্যবস্থাপনায় (জিটুজি প্লাস) বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়।

তবে মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রীর কথায় বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই বলে নিশ্চিত করেছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমেদ। তিনি বলেন, ‘তিনি (উপ-প্রধানমন্ত্রী) মালয়েশিয়ার একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রী। তবুও শুধুমাত্র তার বক্তব্য সরকারের সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে না। কারণ এখন পর্যন্ত অফিসিয়ালি আমাদের কিছু জানানো হয়নি।’

তিনি আরো বলেন, ‘সরকারের সিদ্ধান্ত একদিনে গৃহীত হয় না। দীর্ঘমেয়াদে আলোচনার মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হলে গতকালই (বৃহস্পতিবার) আমাদের সঙ্গে এই চুক্তি করা হতো না।’

দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে আপাতত বিভ্রান্ত হতে হবে না উল্লেখ করে জাবেদ আহমেদ বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি, মালয়েশিয়া সরকার তাদের এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে আমাদের অফিসিয়ালি এখনও কিছু জানায় নি।’

এদিকে বাংলাদেশ থেকে ১৫ লাখ শ্রমিক নিতে সমঝোতা স্মারকে সই করার পরদিনই মালয়েশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী এই বক্তব্য দেওয়ায় অনেকের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে।

এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বিদেশী শ্রমিক বলতে শুধুমাত্র বাংলাদেশি শ্রমিককে বুঝায় না। অন্য অনেক দেশের শ্রমিক মালয়েশিয়ায় থাকে। তাছাড়া দেশটির উপ-প্রধানমন্ত্রী বক্তব্যে বলেছেন, কতো শ্রমিক আমাদের প্রয়োজন সে বিষয়ে সরকার সন্তোষজনক তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত বিদেশি কর্মী নেওয়া স্থগিত থাকবে। তার এই বক্তব্য থেকেই বোঝা যায়, এটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়।’

তিনি আরো বলেন, যেহেতু মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মালয়েশিয়া সরকারের পক্ষ থেকে এখনো অফিসিয়ালি কিছু জানানো হয়নি, সেহেতু এই বক্তব্যে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার ঢাকায় প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি ও মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী রিচার্ড রিয়ট পাঁচ বছরের জন্য বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার সমঝোতা স্মারকে সই করেন। চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ থেকে ১৫ লাখ শ্রমিক নেয়ার কথা।

দীর্ঘদিন মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ থাকার পর ২০১২ সালে শেষের দিকে গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট (জিটুজি) চুক্তি করে বাংলাদেশ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় তিন বছরে এ প্রক্রিয়ায় মাত্র ১০ হাজারের মতো কর্মী যায় মালয়েশিয়ায়। সে দেশে যেতে ১৪ লাখের বেশি কর্মী নিবন্ধন করেন। কিন্তু এতে গতি না থাকায় সমুদ্রপথেই মানুষ মালয়েশিয়ায় যেতে থাকে। যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে সমালোচিত হয়। বৃহস্পতিবার চুক্তির মাধ্যমে এই জট খুলছে বলে ধারণা করা হয়েছিল।



মন্তব্য চালু নেই