মামীর সঙ্গে পরকীয়ার জের ধরে একই বিছানায় শুতে ব্যর্থ: আদালতে ভাগ্নে মাহফুজ

যৌন আবেদনের ব্যর্থ হয়ে দুই মামাতো ভাই-বোন, দুই মামীসহ একই পরিবারের পাঁচজনকে হত্যা মামলার একমাত্র আসামি ভাগ্নে মাহফুজের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেছেন আদালত। আর চার্জ গঠনের দিনই আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ঘুরে ফিরে মাহফুজকে গুনগুন করে গান গাইতেও দেখা গেছে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।

এছাড়াও চার্জ গঠনের শুনানির সময় আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট এসএম ওয়াজেদ আলী খোকন আসামি মাহফুজের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগপত্রটি আদালতকে শোনান। পরে পিপি আসামি মাহফুজকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনি এই ৫ জনকে হত্যা করেছেন?’ তখন মাহফুজ হাসি দিয়ে মাথা নেড়ে ‘না’ বলেন।

পিপি আবার প্রশ্ন করেন, ‘আপনি ন্যায় বিচার চান?’ তখনও মাহফুজ হাসি দিয়ে মাথা নেড়েই বলেন ‘হ্যাঁ’। শুনামির সময় আসামির হাসি মাখা মুখ দেখে উপস্থিত আইনজীবীরাও বিস্ময় প্রকাশ করেন।

মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে মামলাটির চার্জ গঠন করা হয়। চার্জ গঠন করে পরবর্তীতে সাক্ষী গ্রহণের জন্য আদেশ দেন আদালত।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাহফুজকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের কাঠগড়ায় হাজির করা হয়। পরবর্তীতে পৌনে ১২টার দিকে মামলাটির চার্জ গঠনের শুনানি হয়।

উল্লেখ্য, গত ৫ মে মামলাটি বিচারের জন্য জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে বদলি হয়ে এলে ২৫ মে আদালত তা গ্রহণ করেন। এদিকে মঙ্গলবার আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে তার পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট এসএম ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, মঙ্গলবার জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে ৫ খুনের ঘটনায় করা মামলাটির চার্জ গঠন করা হয়েছে। আদালত সাক্ষীর জন্য আদেশ দিয়েছেন। সাক্ষীর ধার্য্য তারিখ পরবর্তীতে জানানো হবে।

পিপি আরো জানান, এ মামলায় আসামি মাহফুজের পক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে স্টেট ডিফেন্স হিসেবে সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট সুলতানুজ্জামানকে মামলাটি পরিচালনার জন্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৬ জানুয়ারি রাতে শহরের বাবুরাইল এলাকা থেকে তাসলিমা (৩৫), তার ছেলে শান্ত (১০), মেয়ে সুমাইয়া (৫), তাসলিমার ছোটভাই মোরশেদুল (২২) ও তার জা লামিয়ার (২৫) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পরদিন ১৭ জানুয়ারি সকালে নিহত তাসলিমার স্বামী শফিকুল ইসলাম বাদি হয়ে ভাগ্নে মাহফুজ, ঢাকার কলাবাগানের নাজমা ও শাহজাহানের নাম উল্লেখ করে তাদেরকে সন্দেহ করে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওইদিন রাতেই মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

পরদিন গ্রেপ্তার করা হয় শফিকুল ইসলামের ভাগ্নে মাহফুজ ও নাজমাকে। পরে ২১ জানুয়ারি আদালতে মাহফুজ ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। আদালতে মাহফুজ স্বীকারোক্তি ছিল অনেকটাই গা শিউরে উঠার মতো। মামীর সঙ্গে পরকীয়ার জের ধরে একই বিছানায় শুতে ব্যর্থ হয়ে ক্ষোভ থেকেই একে একে পাঁচজনকে হত্যা করে সে। যদিও আজ চার্জ গঠনের সময় হত্যার বিষয়টি সে অস্বীকার করেছে।



মন্তব্য চালু নেই