মানুষের জন্য কুকুরের মায়া

পৃথিবীতে যত প্রাণী রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে প্রভুভক্ত প্রাণী মনে করা হয় কুকুরকে। কুকুর এবং মনিবের ভালোবাসা নিয়ে শোনা যায় অনেক গল্প। কিন্তু যে কুকুর নিয়ে এই লেখা সে মনিবের জীবন বাঁচায়নি, বাঁচিয়েছে ভূমিকম্পে বিল্ডিংয়ের নীচে চাপা পড়া অপরিচিত ৭ জনের জীবন। যদিও নিজের জীবন বাঁচাতে পারেনি কুকুরটি।

কুকুরটির নাম দাইকো। গত ১৬ এপ্রিল ইকুয়েডরে ঘটে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্প। দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্প হিসেবে ধরা হচ্ছে এটিকে। এতে প্রায় ৬০০ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ২ হাজার।

ভূমিকম্পের ধ্বংসস্তুপের মাঝে আটকে থাকা মানুষ উদ্ধার করতে অন্যান্যদের সঙ্গে কাজ করছে দেশটির দমকল বাহিনী। এই বাহিনীর কে-নাইন ইউনিটের সঙ্গে ছিল সাদা রঙের ল্যাব্রাডোর কুকুর দাইকো। প্রায় সাড়ে তিন বছর ইউনিটের সঙ্গে কাজ করছিল সে। উদ্ধারকাজে দাইকো এতটাই তৎপর ছিল যে, নিজের প্রতি খেয়াল ছিল না। সম্ভবত খেয়াল করেনি ইউনিট প্রধানও। ফলে কঠোর পরিশ্রম থেকে ক্লান্তি এরপর হঠাৎ মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে দাইকো।

দেশটির উত্তরাঞ্চলের ইবারা শহরের দমকল বাহিনী তাদের ফেসবুক পেইজে ৪ বছর বয়সের দাইকোর মৃত্যুর খবর প্রকাশ করে। খবরটি দ্রুত ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে। তারা জানায় গত শুক্রবার মৃত্যু হয় দাইকোর। পাশাপাশি দাইকোর প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে উদ্ধারকাজে কুকুরটির অবদানের বিভিন্ন ছবিও ফেসবুকে শেয়ার করে তারা।

Dog11461808600

ধ্বংসস্তূপের নীচে প্রচণ্ড গরম এবং পরিশ্রম সব মিলিয়ে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে দাইকোর। ‘ম্যাসিভ করোনারি মায়োকর্ডিয়াল ইনফার্কশন অ্যান্ড অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ফেইলর’ দাইকোর মৃত্যুর কারণ বলে দমকলবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

দাইকোর মৃত্যু অনেককেই কাঁদিয়েছে। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে সবাই। বিশেষ করে দমকল বাহিনীর প্রতিটি সদস্য স্মৃতিচারণ করে বলেছে, দাইকো যখন ছুটে ছুটে গিয়ে স্তূপের ভেতর থেকে জীবিত মানুষের খোঁজ নিয়ে আসছিল তখন আমরা সবাই ওকে উৎসাহ দিয়েছি। বুঝতেই পারিনি সে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। দাইকোও বুঝতে দেয়নি কিছু। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সে দায়িত্ব পালন করে গেছে।



মন্তব্য চালু নেই