মানসিক চাপে ভুগছেন? ভ্রমণে বেরিয়ে পড়ুন

সারা সপ্তাহের অফিস থেকে বাসা আর বাসা থেকে অফিস করার পর ছুটির দিনগুলোতে শরীর ও মন- দুটোই কেমন যেন বিকল হয়ে পড়ে। পারিবারিক, সামাজিক, পেশাগত ও নানাবিধ সমস্যাগুলো কেমন যেন একটু একটু করে চেপে ধরতে থাকে আমাদের। আরো অনেকের মতন আপনিও কি এভাবেই মানসিকভাবে প্রচন্ড চাপের ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন প্রতিদিন? কেনাকাটা, বই পড়া বা টিভি দেখার মাধ্যমে ঝেড়ে ফেলতে চাইছেন মাথা থেকে চাপগুলোকে? তাহলে আপনাকেই বলছি- বেরিয়ে পড়ুন!

সম্প্রতি একটি গবেষণায় জানা যায় যে, অন্যান্য কৌশলের চাইতে ভ্রমণের মাধ্যমে মানসিক অবস্থাকে ভালো অবস্থানে নিয়ে আসা যায় দ্রুত। এ বিষয়ে চিকিত্সক লিন্ডা পাপাডোপোওলস জানান- বাইরে বেরিয়ে চারপাশটাকে উপভোগ করা বা ভ্রমণ করা মানুষকে খোলা বাতাস আর সূর্যের রশ্মির অনেক কাছে নিয়ে যায়। যেটি কিনা আমাদের মস্তিষ্কে সেরোটোনিনের উত্পাদন বাড়িয়ে তোলে আর মানসিক চাপকে দূর করে দেয়।

অনেক সময় চারপাশের সবকিছু অনেক বেশি একঘেয়ে হয়ে যায়। ফলে কোনরকম সমস্যা না থাকলেও প্রতিদিনের এই এক রকমের নিয়ম মানসিকভাবে কষ্ট দেয় আমাদের। সেটাকেও আপনি এক তুড়িতে উড়িয়ে দিতে পারবেন ভ্রমণের মাধ্যমে। নতুন সব মানুষের সাথে পরিচিত হতে পারবেন, নতুন খাবার, নতুন দৃষ্টিভঙ্গী- এ সবের মিশেলে মানসিক চাপের বোঝাটা একটু হলেও কমবে আপনার।

সারাদিন অফিসের চেয়ারে বসে কাজ করা আর ক্লান্ত মস্তিষ্কের দরুন যাচাই-বাছাই ছাড়াই অতিরিক্ত ফাস্ট ফুড গ্রহন অনেকের স্থুলতাকে বাড়িয়ে তোলে। প্রতিদিনের ঝামেলায় ঠিকঠাক ব্যায়ামটাও করা হয়না। ফলে ব্যায়াম না করার কারণেই হোক কিংবা অন্যকিছুর জন্যে- শরীরের এই বাড়তি মেদ মানসিকভাবে নিজেকেই নিজের কাছে অভিযুক্ত করে তোলে। সারাদিন অফিস করে কী করে এই মেদকে কমাবেন, না কমালে দিন দিন কী আপনার মেদ বেড়ে যাবে, সৌন্দর্য কি নষ্ট হযে যাবে- এরকম হাজারটা প্রশ্ন আর চিন্তার চাপটা অহেতুক হলেও এসে পড়ে আপনার মাথাতেই। আর বাড়িয়ে তোলে মানসিক চাপ।

ভ্রমণে বের হলে আপনি নিজেকে যথেষ্ট ব্যায়ামের ভেতর দিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। গতানুগতিক ধারার বাইরে শরীর আর মন দুটোই রেহাই পাবে ভ্রমণের ফলে। এতে করে আপনার শরীরের মেদ হয়তো প্রচুর পরিমাণে কমে যাবেনা একবারেই। তবে মানসিক চাপটা কমবে।

যদি আপনি হয়ে থাকেন সৃষ্টিশীল মানুষ, তাহলে গতানুগতিক জীবনের ধারায় মানসিকভাবে অনেকটাই দূর্বল হয়ে যাওয়াটা আপনার জন্যে স্বাভাবিক। নতুন কিছু না করতে পারাটাও আপনার কাছে মানসিক চাপ হিসেবে আসতে পারে। তাছাড়া, সবার জন্যেই এই প্রতিদিনের একঘেয়ে জীবন হয়ে উঠতে পারে তাদের কাজের পক্ষে ক্ষতিকর। ঠিকঠাক কাজ না করতে পারাটা সৃষ্টি করে বাড়তি মানসিক চাপের। আর এই সমস্যা থেকে দূরে থাকতেও বাইরে ঘুরে আসুন। আপনার সমস্ত মানসিক চাপ এক নিমিষেই গায়েব হয়ে যাবে। কে জানে, হয়তো আপনার একটু সময় লাগবে। তবে দিনশেষে মানসিক চাপের হাত থেকে আপনাকে মুক্তি দেবেই এই কৌশলটি।



মন্তব্য চালু নেই