মাত্র ৫টি উপায়ে কাটিয়ে উঠুন অন্যমনস্কতা

আপনি কি প্রায়ই বাসা থেকে বের হওয়ার সময় চাবি নিতে ভুলে যান? জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাতে বা প্রিয়জনকে দেওয়া কথা রাখতে প্রায়ই কি মনে থাকে না আপনার? আমাদের মস্তিষ্ক রোজ হাজারো কোষ হারায় আর বয়স বাড়ার সাথে সাথে এর হার বাড়ে। সব কিছু মনে রাখা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়, তবে যদি খুব বেশি ভুল হতে থাকে তা হয়ত বাজে প্রভাব ফেলবে আপনার ব্যক্তিজীবনে, এমনকি প্রশ্নবিদ্ধ করবে আপনার ব্যক্তিত্বকে। তাই বরং আসুন কয়েকটি নিয়ম মেনে মনকে ফিরিয়ে আনি মনের ঘরে!

প্রযুক্তির উপর নির্ভরতা কমান
অন্যমনস্কতা দূর করতে সবার প্রথমে প্রয়োজন মস্তিষ্ক সচল রাখা। কখনো কি খেয়াল করেছেন, অতি পরিচিত বানানটি ভুলে গেছেন, কারণ টাইপ করার সময় শব্দের বানানটি চলে আসে সহজেই আপনার ব্যবহৃত স্মার্টফোনের অ্যাপসে? অবাক হচ্ছেন? গোল্ডস্মিথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোক্তা মনোবিজ্ঞানের প্রভাষক প্যাট্রিক ফগান বলেন, ‘প্রযুক্তি এমনকি আমাদের মস্তিষ্কের গঠন এবং কার্যপ্রনালী বদলে দিচ্ছে।’ পেশায় মনোবিজ্ঞানী সুজান গেস্ট মনে করেন, মানুষের উচিৎ মনে রাখার বিষয়গুলোর দায়িত্ব প্রযুক্তিকে না দেওয়া, বরং নিজেই চেষ্টা করা। নতুবা সে অন্যমনস্ক হতে থাকবে।

এক্সারসাইজ করুন
শুনতে হয়ত অদ্ভুত লাগছে যে, মনোযোগ বাড়াতে কেন জিমে যেতে হবে! কিন্তু জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ২০ মিনিট শরীরচর্চা আপনার মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে। নিউরো সাইকোলজিস্ট ডঃ অশোক জানসারির মতে, “শরিরচর্চা মনোযোগের উপর দারুণ প্রভাব ফেলে। এতে শরীর ভাল থাকে, রক্ত সঞ্চালন বাড়ে, এতে আপনার মস্তিষ্ক দ্রুত ফ্রেশ অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারে।” সুইডিশ আরেক গবেষণায় দেখা গেছে, শারীরিক কার্যকলাপ শেখার ক্ষমতা এবং মনে রাখার শক্তি বাড়ায়।

সামাজিক হোন
বন্ধুদের সাথে ঘুরে বেড়ানো কি মনোযোগ একাগ্র রাখতে সাহায্য করে? পি এল ও এস মেডিসিনের এক গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষ একা থাকলে অনেক বেশী অন্যমন্সকতায় ভোগে। বন্ধুদের সাথে থাকা বা আত্মীয় স্বজনদের সাথে সময় কাটানো তাকে অনেক দিকে মনোযোগী হতে বাধ্য করে। কারণ তখন একজন মানুষ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে বাধ্য হয়, কথা বলতে বা বন্ধুদের মন রাখতে তাদের দিকে মনোযোগ দিতে বাধ্য হয়।

খেলা
মোবাইলের মনোযোগ বাড়ানোর গেমস নয়, খেলতে হবে বাস্তবে। ইন্টারনেটের যে খেলাগুলো দাবি করে যে সেগুলো মনোযোগ বাড়ায় সেগুলো আসলে কতটা কার্যকরী তা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক আছে। কিন্তু তার পরিবর্তে খেলতে পারেন চমৎকার সব খেলা, যেমন দাবা। দাবা এমন একটি খেলা যা আপনাকে চিন্তা করতে বাধ্য করবে। মস্তিষ্ক কাজে লাগাতে, কৌশলী হতে বাধ্য করবে। এছাড়া শব্দ নিয়ে খেলাসহ আরও অনেক খেলা আছে যা মনকে একাগ্র করে।

বাদ্যযন্ত্র বাজাতে শিখুন
সঙ্গীতের একটা নির্দিষ্ট তাল আছে। নিয়ম আছে। নিয়মিত কোন বাদ্যযন্ত্রের অনুশীলন আপনার মনকে প্রশান্ত করবে, মস্তিষ্ককে এক জায়গায় কেন্দ্রীভূত করবে। ইউনিভার্সিটি অব এডিনবার্গ এর গবেষণায় দেখা গেছে, নতুন করে কোন বাদ্যযন্ত্রের শিক্ষা মনের বিভাজন কমায়। একটি নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে এই প্রচেষ্টা চালাতে পারেন। যদি সঙ্গীত আপনার প্রিয় না হয়, সেক্ষেত্রে ভাষা শিখতে পারেন। নতুন একটি ভাষা আপনাকে কাজেও লাগবে আবার মনোযোগও বাড়াতে সাহায্য করবে।



মন্তব্য চালু নেই