মাতৃদুগ্ধ পানেও বাংলাদেশ এগিয়ে : নাসিম

বাংলাদেশে মাতৃমৃত্যুর হার কমেছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, বাংলাদেশ মাতৃদুগ্ধ পানেও এগিয়ে রয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে মাতৃদুগ্ধ পানের প্রচার ও প্রসারে সংসদ সদস্যদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এক সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।

আগামী অক্টোবর বা নভেম্বর মাসে জেলা ও গ্রাম পর্যায়ে মাতৃদুগ্ধ পানের ব্যাপকতর প্রচার ও প্রসারে জেলা ও গ্রাম পর্যায়ে সেমিনারের উদ্যোগ নেবে বলে জানান মন্ত্রী।

স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বাংলাদেশ এগিয়ে উল্লেখ করে নাসিম সংসদ সদস্যদের নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে মায়েদের সঙ্গে কথা বলার ও স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ দেয়ার আহবান জানান।

সভায় এক প্রতিবেদনে বলা হয়, জন্মের ১ ঘণ্টার মধ্যে শিশুকে মায়ের বুকের শাল দুধ পান করালে শতকরা ৩১ ভাগ নবজাতকের মৃত্যুরোধ হতে পারে। পূর্ণ ৬ মাস বয়স পর্যন্ত মায়ের দুধ পান করালে ১৩ শতাংশ শিশুমৃত্যু এবং ৬ মাস বয়সের পর মায়ের দুধের পাশাপাশি ঘরে তৈরি বাড়তি খাবার খাওয়ানোর অভ্যাস করলে শতকরা ৬ ভাগ শিশু মৃত্যু হ্রাস করা সম্ভব।

বাংলাদেশ ব্রেস্ট ফিডিং ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ড. এস কে রায় এই গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন।
এতে দেখা যায়, যেসব শিশু মায়ের দুধ পান করেনি তাদের তুলনায় যারা নির্ধারিত সময় পর্যন্ত মাতৃদুগ্ধ পান করেছে তাদের বুদ্ধিমত্তা গড়ে ২ দশমিক ৬ গুণ বেশি।

এতে আরো বলা হয়, দেশে প্রতিদিন পাঁচ বছরের কম বয়সী ২৫০ জন শিশু অপুষ্টিতে প্রাণ হারাচ্ছে। শিশু পুষ্টি পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ অবস্থার ৪টি দেশের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ।

গবেষণাপত্রে জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে মায়ের দুধ খাওয়ানোর হার তুলে ধরা হয়। বিডিএইচএসের সূত্র মতে এতে উল্লেখ করা হয়, ২০০৪ সালে জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে মায়ের দুধ খাওয়ানোর হার ছিল শতকরা ২৪ ভাগ, ২০০৭ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৫ শতাংশে, ২০১১ সালে এই হার ৪৭ শতাংশ এবং ২০১৪ সালে ৫৭ শতাংশে এসে দাঁড়ায়। ৬ মাস পর্যন্ত শিশু বুকের দুধই পান করলে দেহ বৃদ্ধি ও মেধা বিকাশের সম্পূর্ণ উপাদান যোগাতে পারে।

এছাড়া শিশুকে বুকের দুধ পান করালে নারীর স্তন ক্যান্সার, গর্ভাময় ক্যান্সার, স্থুলতা, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগ হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়।

জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন, সংসদ সদস্য ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল, মেরিনা রহমান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বিমান কুমার সাহা, শিশু বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই