মাগুরায় ইউপি চেয়ারম্যান ও তার বাবা আটক

মাগুরা প্রতিনিধি: যুদ্ধাপরাধ মামলা বাদীকে অপহরণ করে প্রত্যাহারের চেষ্টার অভিযোগে বুধবার সদর উপজেলার গোপালগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান রাজিব ও তার বাবা আবজাল হোসেন বাশি মিয়াকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ অভিযুক্তদের বাড়ি থেকে মামলা বাদী অপহৃত খোদেজা খাতুনকে উদ্ধার করেছে।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজমল হুদা জানান, সদর উপজেলার সংকোচখালী গ্রামের হাসেম আলীর মেয়ে খোদেজা খাতুন মুক্তিযুদ্ধের সময় তার বাবাকে নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগে ২০০৮ সালে গোপালগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবজাল হোসেন বাশি মিয়াসহ অন্যদের নামে আদালতে দুটি মামলা দায়ের করেন।

মামলাটি তুলে নেওয়ার জন্য আসামী পক্ষ দীর্ঘদিন বাদীকে নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে আসামীরা কৌশলে বাদিকে তাদের বাড়িতে নিয়ে আটকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। এলাকাবাসী বিষয়টি মাগুরা সদর থানা পুলিশকে জানালে বুধবার সকালে অভিযুক্তদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বাদীকে উদ্ধারসহ উল্লেখিত দুইজনকে আটক করে।

এ ঘটনায় বুধবার দুপুরে খোদেজা খাতুন বাদী হয়ে চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান রাজিব, তার বাবা সাবেক চেয়ারম্যান আবজাল হোসেন বাশি মিয়া ও মতিয়ার রহমান নামে তাদের এক সহযোগির বিরুদ্ধে সদর থানায় নারী-শিশু নির্যাতন ও অপহরণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন।

পুলিশ বিকেলে আটককৃত দুজনকে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত তাদের জামিন না মন্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

এদিকে গোপালগ্রাম ইউনিয়নের পার্শবর্তী জগদল ইউনিয়নের আজমপুর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস জানান, ১৯৭১ সালে তার ভাই মুক্তিযোদ্ধা কাছেদ মোল্যাকে বাশি মিয়া ও তার বাহিনী নির্মমভাবে হত্যা করে। এ ঘটনায় তার নামে ২০০৯ সালে তিনি একটি মামলা দায়ের করেছেন। তিনি আরো জানান, ১৯৭১ সালে আবজাল হোসেন বাশি মিয়ার নেতৃত্বে রাজাকাররা শত্রুজিৎপুর ইউনিয়নের কালুপাড়া গ্রামের বাসিন্দা তৎকালিন মহম্মদপুর থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বিলায়েত আলী মাষ্টারকে হত্যা করে।

এ ঘটনায় তার ছেলে সরফরাজ আলী মীর ২০০৯ সালে একইভাবে বাশি মিয়াসহ অন্যদের নামে আদালতে একটি মামলা করেছেন। মামলাগুলো বর্তমানে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালে বিচারাধিন। আব্দুল কুদ্দুস জানানা, গোটা এলাকায় বাশি মিয়া ‘বাশি রাজাকার’ হিসেবে চিহ্নিত। সে ও তার বাহিনী ১৯৭১ সালে অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেছে।

কিন্তু অজ্ঞাত কারনে সে এলাকায় ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে বিএনপি থেকে একাধিকবার ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে। একইভাবে এবার তার ছেলেকে গোপালগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান করে পুনরায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন।



মন্তব্য চালু নেই