‘মহাকাশ বর্জ্য’ ভবিষ্যতের জন্য মারাত্মক হুমকি

পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা ‘মহাকাশ বর্জ্য’ ভবিষ্যতের মহাকাশ অভিযানের জন্য মারাত্মক হুমকি বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাজ্যের এক বিজ্ঞানী।

শুক্রবার মহাকাশ বর্জ্য নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে একটি কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ আশঙ্কা প্রকাশ করেন ইউনিভার্সিটি অব সাউদাম্পটনের মহাকাশ বিজ্ঞান গবেষণার প্রধান হিউ লিউইস। তিনি বলেন, ‘মহাকাশ বর্জ্যের সমস্যা মোকাবিলা করা মানবজাতির জন্য সবচেয়ে বড় পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ।’

পৃথিবীর কক্ষপথে শনাক্ত করা ধ্বংসাবশেষ নিয়ে আলোকপাতের লক্ষ্যে লন্ডনের রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির চালু করা সৃজনশীল ওই কর্মসূচির প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন ওই বিজ্ঞানী।

এ পর্যন্ত মহাকাশে ২৭ হাজার টুকরা বর্জ্য শনাক্ত করা হয়েছে। তবে ধারণা করা হয়, পৃথিবীর কক্ষপথে এ রকম প্রায় ১০ কোটি টুকরা রয়েছে। ১৯৫৭ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন মহাকাশে প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ স্পুটনিক ১ স্থাপনের পর থেকে বিভিন্ন সময়ে মহাকাশ অভিযানে ওই বর্জ্য ফেলে আসা হয়। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, এই মহাকাশ বর্জ্য ভবিষ্যতের মহাকাশ অভিযানের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিজ্ঞানী হিউ লিউইস বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন কৃত্রিম উপগ্রহের সেবার ওপর নির্ভরশীল। তবে এই কৃত্রিম উপগ্রহগুলো কতটা অরক্ষিত—তা আমরা ভাবি না। মহাকাশ বর্জ্যের কারণে এসব কৃত্রিম উপগ্রহ ধ্বংস বা অকেজো হয়ে যেতে পারে। তা ছাড়া ভবিষ্যতে মহাকাশে কাজ করা বা বাস করার স্বপ্ন ও উচ্চাকাঙ্ক্ষাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।’

‘অ্যাডরিফ্ট’ নামের এই কর্মসূচি মহাকাশ বর্জ্যের বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে অডিও, চলচ্চিত্র এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করছে। এ নিয়ে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা ক্যাথ লে কুটার। তথ্যচিত্রটি নির্মাণ করা হয় ২০০৬ সালে নাসার ‘ডিসকভারি’ অভিযানে যাওয়া ব্রিটিশ-আমেরিকান আবহাওয়াবিদ ও মহাকাশচারী পিয়ের্স সেলার্সের ওপর। ওই অভিযানের সময় সেলার্স তাঁর ব্যবহৃত একটি চামচ মহাকাশে ফেলে আসেন। বস্তুটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে সংঘর্ষে বিস্ফোরিত হওয়ার আগে প্রতি ঘণ্টায় ২৭ হাজার কিলোমিটার বেগে ভ্রমণ করে।

ওই তথ্যচিত্রটিতে সেলার্স বলেন, ‘মহাকাশ বর্জ্য হলো একটি স্বয়ংক্রিয় নভোচারী। এটি অত্যন্ত দ্রুত গতিতে চলমান থাকে। এই বর্জ্য মানুষের শত্রু।’

কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তথ্যচিত্রটির নির্মাতা লে কুটার বলেন, তথ্যচিত্রটিতে ‘গুরতর সমসাময়িক সংকট’ নিয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। তিনি বলেন, এটি (মহাকাশ বর্জ্য) এখন ভবিষ্যতের মহাকাশ অভিযানের জন্য মারাত্মক হুমকি। পৃথিবীটা আমরা যারা বাস করছি তাদের জন্যও হুমকি। পাশাপাশি এই মহাকাশ বর্জ্য কৃত্রিম উপগ্রহকেও ধ্বংস এবং অকেজো করে দিতে পারে।



মন্তব্য চালু নেই