মহত্ব সুস্বাস্থ্যের লক্ষণ!

মহৎ হতে কে না চায়? একটুখানি মহত্বের জোরে আপনি হয়ে উঠতে পারেন হাজারো মানুষের মধ্যে অনন্য। কিন্তু কখনো কি ভেবেছেন এই মহত্বই আপনাকে দিতে পারে সুস্বাস্থ্য? গবেষণা জানাচ্ছে সুস্বাস্থ্যের সাথে শুধু খাদ্য বা জীবনযাপনই নয়, সম্পর্ক রয়েছে মহত্বেরও। আমেরিকার স্টোনি ব্রুক ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক স্টিফেন পোস্ট এমনটিই জানিয়েছেন তাঁর বই ‘হোয়াই গুড থিংস হ্যাপেন টু গুড পিপল’-এ। তিনি বলছেন এমনকি এইচআইভি আক্রান্ত মানুষও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে পারেন একটুখানি মহত্ব দেখিয়ে।

১৯৯৯ সালে দীর্ঘ জীবনলাভ নিয়ে গবেষণা করেন ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ডগ ওমান। তিনি দেখেন যে বয়স্ক মানুষ যারা যৌবনে দানশীল কাজে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেছেন তাদের মধ্যে ৪৪% মানুষ যারা স্বেচ্ছাসেবী ছিলেন না তাদের থেকে অন্তত পাঁচ বছর বেশি বেঁচেছেন।

দানশীলতা বা মহত্বের কারণে স্বাস্থ্য উন্নত হওয়ার অন্যতম কারণ এটি দুশ্চিন্তা ও চাপ দূর করে। ২০০৬ সালে জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যা ভেল পিফারি ও টেনেসি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাথলিন লোলার এক গবেষণায় জানান যে যারা সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেন তাদের রক্তচাপ তুলনামূলকভাবে স্বাভাবিক থাকে।

ক্ষমা, মহত্ব, দানশীলতা আপনার আত্মমর্যাদাকে দৃঢ় করবে। এগুলো আপনার মধ্যে এমন বোধ সৃষ্টি করবে যে আপনি একজন ভালো মানুষ কারণ আপনি অন্যান্যদের সহযোগিতা করেন। এছাড়া এ ধরণের স্বেচ্ছাসেবী কাজ আপনাকে আপনার অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত করছেন বলে বিশ্বাস করাবে। আপনি যখন অন্যের জন্য কিছু করবেন, আপনার মনে হবে আপনি আপনার পাপের ভার কমাচ্ছেন। এসব মানবিক গুণ নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুঃশ্চিন্তা লাঘব করতে সাহায্য করে। এটি আত্মবিশ্বাস এনে দেয় যে আপনি যখন অন্যের ভালো করছেন তখন আপনার জন্যও ভালো কিছুই অপেক্ষা করছে। আর আপনার নিজেরও যদি অভিজ্ঞতা থাকে খারাপ কোনো পরিস্থিতির, তাহলে সেই একই পরিস্থিতিতে অন্যকে সাহায্য করলে ভুলতে পারবেন নিজের দুঃখটুকুও।

এভাবে একটুখানি বদান্যতার বিনিময়ে আপনি হয়ে উঠবেন সবার মাঝে বিশেষ একজন। আর এই আত্মবিশ্বাস আপনাকে দেবে সুস্বাস্থ্য। তাই বলে নিজেকে অপরিহার্য্য ভাবা শুরু করবেন না, মহত্ব দানশীলতা আপনাকে বাকি সবার থেকে উন্নত মানুষে পরিণত করবে ঠিকই কিন্তু লক্ষ্য রাখতে হবে তা থেকে আপনার মনে অন্যের প্রতি যেন তুচ্ছতাচ্ছিল্য সৃষ্টি না হয়।



মন্তব্য চালু নেই