মস্তিষ্কের কোষ ধ্বংস করে যে ৫ টি কাজ

শরীরের সবচেয়ে নাজুক অংশ হচ্ছে মস্তিষ্ক। এজন্য এর ভালোভাবে যত্ন নেয়া উচিৎ। আপনি জেনে অবাক হবেন যে আমাদের সবারই মস্তিষ্ক কোষ ধ্বংস হয়ে থাকে। মজার বিষয় হল মস্তিষ্কের কোষ কমার ফলে তেমন কোন তাৎপর্যপূর্ণ সমস্যা হয়না এবং মস্তিষ্ক নিজেই নিজের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারে। মস্তিষ্কের নতুন কোষ গঠনের এই প্রক্রিয়াকে নিউরোজেনেসিস বলে। কিন্তু বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে বিভিন্ন কারণে নিউরোজেনেসিস বাধাগ্রস্থ হয় এবং মস্তিষ্কের কোষ ধ্বংস হয়। মস্তিষ্ক কোষ ধ্বংস করে এমন কিছু কাজের কথাই জানবো আজ।

১। ধূমপান
সিগারেটের ধোঁয়ায় কার্বন মনোক্সাইড থাকে। এটি একটি মারাত্মক গ্যাস যা রক্তের আয়রনের সাথে যুক্ত হয়ে মস্তিষ্ক সহ শরীরের অন্যান্য অঙ্গে অক্সিজেন সরবরাহ করতে দেয় না। অক্সিজেনের অভাবে মস্তিষ্কের কোষ ধ্বংস হয়ে যায়।

২। অ্যালকোহল
আমেরিকার নিউ জার্সির রুটগারস ইউনিভার্সিটির করা এক গবেষণায় জানা যায় যে, অ্যালকোহল পান করলে প্রাপ্তবয়স্কদের মস্তিষ্কের কাঠামোগত ক্ষতি হয়। মস্তিষ্কের কোষের বৃদ্ধি কমে যায় প্রায় ৪০%। তারপর ও কি এই পানীয়টি পান করা উচিৎ?

৩। কীটনাশক
বর্তমানে আমরা যে ফলমূল ও শাকসবজি খাই তার বেশীরভাগের মধ্যেই কীটনাশক দেয়া থাকে। এই কীটনাশকগুলো মস্তিষ্ক কোষের উপর প্রভাব বিস্তার করে এবং এর ফলে নিউরনের মৃত্যু হয়।

৪। বায়ু দূষণ
বায়ু দূষণের ফলে আমাদের শরীরের বায়ু চলাচলের পথে ক্রমাগত প্রদাহ হতে থাকে। ফলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন পৌঁছাতে সমস্যা হয়। আর মস্তিষ্কে ঠিক ভাবে অক্সিজেন না পৌঁছালে মস্তিষ্ক কোষ ধ্বংস হয়ে যায়।

৫। নিদ্রাহীনতা
নিদ্রাহীনতা বা কম ঘুমের কারণেও মস্তিষ্কে অক্সিজেনের সরবরাহ কমে যায় বলে মস্তিষ্কের কোষ ধ্বংস হয়ে যায়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতি রাতে ৭ থেকে ৯ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন। এর ফলে ঘুমের পর্বগুলো ঠিকভাবে সম্পন্ন হয়। পর্যাপ্ত ঘুমের মাধ্যমেই মস্তিষ্কে স্মৃতি সংরক্ষিত হয় এবং এনার্জি লেভেল পুনরুজ্জীবিত হয়। এ কারণেই যদি কারো ক্রমাগত কম ঘুম হয় তাহলে সে মনোযোগ ও সিদ্ধান্তহীনতার সমস্যায় ভুগে। এক গবেষণায় জানা যায় যে, দীর্ঘ সময় জেগে থাকার ফলে মস্তিষ্কের এনার্জি উৎপন্নকারী অঞ্চলের নিউরন লোকাস করলিয়াস মৃত্যুর দিকে ধাবিত হয়। এনার্জি উৎপন্নকারী এই কোষগুলোর অনুপস্থিতিতে আমাদের শরীর পরদিন ঠিকভাবে কাজ করতে পারেনা। অন্য আরেকটি গবেষণায় জানা যায় যে, কম ঘুমের কারণে সেরিব্রাল কর্টেক্স ও হিপ্পোক্যাম্পাস সংকুচিত হয়ে যায় বিশেষ করে ৬০ বছরের বেশি বয়সের মানুষদের। তাই বয়স বাড়ার সাথে সাথে ঘুম ও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে পরামর্শ দেয়া হয়।

এছাড়াও ডিহাইড্রেশন, স্ট্রেস, মাদক, আলঝেইমার্স, লাইম ডিজিজ, মাথায় আঘাত পাওয়া ও কিছু ঔষধের প্রতিক্রিয়াতেও মস্তিষ্কের কোষ ধ্বংস হতে পারে।



মন্তব্য চালু নেই