মসুলে আইএসের কফিনে শেষ পেরেক

বছরখানেক আগে কেবল আরব বিশ্বই নয়, সারা দুনিয়ায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চেয়েছিল জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। শুধু কথায়ই নয়, সিরিয়া, ইরাক, ইয়েমেনসহ আরব বিশ্বের কয়েকটি দেশের জনগণের ওপর তথাকথিত ইসলামিক বিপ্লবের ঝাণ্ডা তুলে রীতিমতো অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে গিয়েছিল জঙ্গি সংগঠনটি।

কিন্তু একের পর এক মার্কিন ও রাশিয়ার সেনাবাহিনীর হামলার পর জঙ্গি সংগঠনটির আগের ‘ত্রাসের রমরমা’ নেই। রাশিয়ার বিমান হানায় আগেই হারিয়েছিল সিরিয়ায় অবস্থিত আইএসের রাজধানী রাকার দখল। এরপর সংগঠনটির নেতারা এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন ইরাকের মসুল শহরে। শহরটির প্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে দিয়ে ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করেছিল।

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও ইরাকি বাহিনীর যৌথ অভিযানে জঙ্গি সংগঠনটির মূল চাঁইদের শেষ আশ্রয়স্থলটিও যেতে বসেছে। ইরাকি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, আইএসের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে মসুলে তাদের বাহিনীর বিজয় সমাগত।

এর আগে গত সপ্তাহে ইরাকের মসুলের পশ্চিমাঞ্চল নিজেদের দখলে নিতে বেশ বড় ধরনের অভিযান শুরু করে ইরাকের সরকারি বাহিনী। গতকাল রোববার দিনভর এলাকাটি ঘিরে ফেলার অভিযান চালায় সরকারি বাহিনী।

বিবিসি জানিয়েছে, ইরাকি সেনা, পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবী, শিয়া ও কুর্দি সশস্ত্র যোদ্ধারা ওই অভিযানে অংশ নিয়েছে। গত মাসেই আইএসের কাছ থেকে মসুলের পূর্বাঞ্চল কেড়ে নেয় ওই বাহিনী।

সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল আবদুলামির ইয়ারাল্লাহ জানিয়েছেন, মসুল বিমানবন্দরের কাছে ‘আতবাহ’ ও ‘আল-লাজ্জাগাহ’সহ কয়েকটি গ্রাম নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন সেনাসদস্যরা।

স্থল অভিযানের পাশাপাশি আইএসকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন যৌথ বাহিনী।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, টেলিভিশন বার্তায় ওই অভিযানের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি। তিনি বলেছেন, ‘আমরা অভিযানের নতুন ধাপ শুরু করতে যাচ্ছি। আমরা মসুল স্বাধীন করতে আসছি। আপনারা আতঙ্কিত হবেন না। আইএসের সন্ত্রাসের হাত থেকে আমাদের নাগরিকদের মুক্ত করতে আমাদের বাহিনী অভিযান চালাচ্ছে।’

এদিকে জাতিসংঘ জানিয়েছে, মসুলের পশ্চিমাঞ্চলে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ মানুষ আটকা আছে। এসব মানুষের নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেওয়ার কথা জানিয়েছে জাতিসংঘ।



মন্তব্য চালু নেই