রাজশাহীতে মসজিদে বোমা বিস্ফোরনে নিহত ১

হামলার বর্ণনা দিলেন আহতরা

রাজশাহীর বাগমারায় কাদিয়ানি জামে মসজিদে শুক্রবার জুমার নামাজের সময় আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী নিহত হলেও বেঁচে গেছেন তিনজন। যাদের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়েই নামাজ আদায় করছিলেন হামলাকারী যুবকটি।

হামলায় মারাত্মক আহত হওয়া ও ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মুসল্লি ময়েজ তালুকদার (৪০), সাহেব আলী (৩৫) ও পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র নয়নকে (১২) ভর্তি করানো হয়েছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে। চিকিৎসাধীন অবস্থা থেকেই তারা সংবাদকর্মীদের কাছে ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন।

সৈয়দপুর গ্রামের স্কুলছাত্র নয়ন জানান, মসজিদে কোরআন শিক্ষার তালিম চলছিলো কয়েকদিন থেকেই। তার বয়সের গ্রামের কয়েকজনের সঙ্গে সেও কয়েকদিন থেকেই মসজিদে ছিলো। শুক্রবার আজানের পরে নামাজের প্রস্তুতি শুরু হয়। ওজু করে পেছনের সারিতে নামাজ পড়ার জন্য দাঁড়ায় সে। প্রথম রাকাত নামাজ শেষ হওয়ার পরে দ্বিতীয় রাকাতের রুকুতে গিয়েই বিকট শব্দ তার কানে আসে। ডান কোমরে আঘাত অনুভব করে সে। নামাজ থেকে ছিটকে অল্প দূরে পড়ে যায়। এরপরে সে আর কিছুই বলতে পারে না।

আহত আরেক জন হচ্ছেন একই গ্রামের সাহেব আলী তালুকদার। তিনি জানান, মসজিদে ওই যুবককে তিনি অনেক আগে থেকেই লক্ষ্য করেছেন। পেছনে দাঁড়িয়ে আত্মঘাতি হামলাকারী সুন্নত নামাজ পড়ছিলো। নামাজের ফাঁকে তাকে সামনের সারিতে যাওয়ার জন্য বলেন তিনি।

সাহেব আলী আরো জানান, আত্মঘাতি হামলাকারী ওই যুবক সুন্নত নামাজ পড়ার সময় পেছনে থাকলেও জুমার নামাজ শুরুর সময় সামনের সারিতে তার ডান পাশে এসে দাঁড়ায়। সে একেবারেই স্বাভাবিক ও শান্ত ছিলো। কোনো চঞ্চলতা তার মধ্যে দেখা যায়নি। রুকুতে যাওয়ার পরেই বিকট শব্দ। এরপরেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি।

আহত ময়েজ উদ্দিন জানান, মসজিদে মোট দুই কাতারে নামাজ হচ্ছিলো। তিনি দ্বিতীয় অর্থাৎ শেষ কাতারে বসেছিলেন। আত্মঘাতী হামলাকারী তার সামনের সারিতেই ছিলো। মসজিদে প্রবেশের সময় হামলাকারীকে নামাজ পড়তে দেখেছিলেন তিনি। অপরিচিত মুখ হিসেবে কয়েকবার তার দিকে তাকিয়েও ছিলেন। জুমার নামাজে দাঁড়ানোর পর প্রথম রাকাত ভালোভাবেই শেষ হয়। দ্বিতীয়বার রুকুতে একটি শব্দ হয়। এরপরেই দেখা যায় সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে থাকা আত্মঘাতী হামলাকারী রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এরপরেই নিজের তলপেটে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন তিনি এবং দেখতে পান যে তারও শরীর থেকে রক্ত ঝরছে।

শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজ আদায়কালে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার প্রত্যন্ত পল্লী মচমৈল চকপাড়া কাদিয়ানি জামে মসজিদে আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনা ঘটে।। এতে মসজিদের ভেতরেই মৃত্যু হয় হামলাকারীর। আহত হন মুসল্লি ময়েজ তালুকদার (৪০), সাহেব আলী (৩৫) ও পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র নয়ন (১২)।

খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। তারা মসজিদ এলাকা ঘিরে ফেলে। বর্তমানে মসজিদটি ও এর আশপাশের এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছে। আহতরা ভর্তি আছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে। সেখানেই তারা সাংবাদিকদের কাছে ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।

http://ournewsbd.com/%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A7%80%E0%A6%A4%E0%A7%87-%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BF-%E0%A6%AE%E0%A6%B8%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%A6/



মন্তব্য চালু নেই