মশার কামড়ে বদলে যাওয়া এক নারীর জীবন

‘মশা মারতে কামান দাগা’- কথাটি আমরা বহুবার শুনেছি। কিন্তু কেন কথাটি বলা হয় অনুভব করতে পেরেছি কি? নিয়ম করে প্রশাসনকে আমরা মশা মারতে দেখেছি। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনাও কম শুনিনি। কারণ এ কাজে সফলতা অনেক সময়ই ‘সোনার হরিণ’! সুতরাং মশা মন্ত্রী থেকে শুরু করে উজির, কোটাল, জনগণ সবারই শত্রু। তবে অ্যাঙহারাদ উইলিয়ামসের সঙ্গে মশার শত্রুতা অন্য সব গল্পকে ছাড়িয়ে গেছে।

উইলিয়ামস তখন ১৩ বছরের কিশোরী। এ সময় একদিন তার পায়ে মশা কামড়ায়। এমন তো হামেশাই ঘটে। এ কারণে বিষয়টি সে তেমন গুরুত্ব দেয়নি। আর এটাই কাল হয় তার জীবনে। উইলিয়ামস ভাবতেও পারেনি এ ঘটনাই পাল্টে দেবে তার জীবন। আপনিও হয়তো পড়ে অবাক হচ্ছেন একটি মশা আবার মানুষের জীবন পাল্টে দেয় কীভাবে?

তাহলে শুনুন সেই ঘটনা। উইলিয়ামস কিছুদিন পরেই বুঝতে পারে মশা কামড়ানোর জায়গাটা ফুলতে শুরু করেছে। ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। ডাক্তাররা তো দেখে অবাক! মেডিক্যাল চেকআপের পর তারা বলেন, এক বিশেষ ধরনের মশার কামড়ের জন্য এমন হয়েছে। তারা আশ্বাস দেন, পরে ঠিক হয়ে যাবে।

আসল ঘটনা হলো, ঠিক হয়নি। উল্টো বাঁ পা-টা আরও ফুলতে শুরু করে। ফের আরও বড় ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার বাঁ পায়ে বিশেষ এক ধরনের দামি ব্যান্ডেজ বেঁধে দেয় ডাক্তার। এতেই হয় আসল বিপদ। এবার বাঁ পায়ের ফোলাটা কমে ঠিকই, কিন্তু পায়ের ওজন বেড়ে যায়। উইলিয়ামসের বাঁ পায়ের ওজন ডান পায়ের চেয়ে ১২ কেজি বাড়ে। ভারী পা-টা নিয়ে টেনে টেনে স্কুলে যেতে হতো তাকে।

পায়ের কারণে উইলিয়ামস ধীরে ধীরে সবার করুণার পাত্রে পরিণত হতে থাকে। সহপাঠীরা তো রীতিমত ঠাট্টা করতে শুরু করে। বাবা-মাও বিব্রত হন কারণ কোনো ডাক্তারই রোগ সারাতে পারছিলেন না। কিন্তু উইলিয়ামস ভেঙে পড়েননি। একটা সামান্য মশা তার জীবন থমকে দেবে এটা মেনে নিতে পারছিলেন না তিনি। শুধুমাত্র মনের জোড়েই সব প্রতিকূলতা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করেন তিনি এবং সফল হন। এটাই তার জীবনের গল্প।

সব বাধা টপকে নিজেকে শিক্ষিকা হিসেবে তৈরি করেন উইলিয়ামস। শুধু তাই নয়, নিজেই স্কুল খোলেন। সেই স্কুলে পড়ানো হয় মানসিক জোর বাড়ানোর কৌশল। অনেক বড় বড় কর্পোরেট হাউসে বক্তৃতা দিতে ডেকে পাঠানো হয় তাঁকে। উইলিয়ামস নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে সবার মনের জোর বাড়ান। একটা মশার কামড় উইলিয়ামসের জীবনটা সত্যি বদলে দিয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই