মরিচের দাম পেয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষকরা বেজায় খুশি

শরিফুল ইসলাম, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি ॥ লাল গালিচায় ঢেকে গেছে ঠাকুরগাঁও জেলার সর্বত্র ।যেদিকে তাকাই মাঠের পর মাঠ পেরিয়ে শুধু লাল গালিচার দৃশ্য।দেখতে লাল গালিচা মনে হলেও আসলে কিন্তু তা নয়।ক্ষেতের পাশে কিংবা মিলের চাতালে মরিচ শুকানোর দৃশ্য।এভাবেই চলছে ঠাকুরগাঁওয়ে মরিচ সংগ্রহ ও শুকানোর হিড়িক।

ঠাকুরগাঁও জেলার মাটি উঁচু ও বন্যামুক্ত।চলতি বছর ঠাকুরগাঁও জেলায় ৭৫০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়।কিন্তু চাষীরা লক্ষ্যমাত্রার চাইতে অতিরিক্ত ১১৫ হেক্টর জমিতে মরিচ বপন করে।অর্থাৎ ৮৬৫ হেক্টর জমিতে মরিচের চাষ করা হয়।

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে ,চাষকৃত জমি হতে ১ হাজার ২শ ৫২ মেট্রিক টন মরিচ উৎপাদন হবে যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে জেলার বাইরে পাঠানো হবে।

প্রতি বছর ঠাকুরগাঁও জেলার কৃষকেরা ধান গম ইত্যাদি চাষ করে যেখানে লোকসান গুনছেন সেখানে একমাত্র মরিচ চাষ করে এ বছর লাভের মুখ দেখেছেন।তাই পরিবারের সবাইকে নিয়ে কৃষকদের চলছে মরিচ সংগ্রহের প্রানান্তকর চেষ্টা।

ঘনিমহেশপুর গ্রামের কৃষক নজিব উদ্দীন জানান,এক বিঘা জমিতে মরিচ(বিন্দু ও বাঁশগাড়া) লাগানো,নিরানী,সেচ ও পরিচর্যা থেকে ক্ষেত থেকে মরিচ সংগ্রহ পর্যন্ত ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১০ হতে ১২ হাজার টাকা । আর ওই জমিতে মরিচ উৎপাদন হচ্ছে কমপক্ষে ১৫ মন।প্রতিমন মরিচ ৪ হাজার টাকা দরে বিক্রি করে কৃষকরা বিঘা প্রতি মুনাফা অর্জন করছেন কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা।একই কথা জানালেন ওই এলাকার কৃষক ফয়জুল হক,আঃ রশিদ সহ অনেকে।

এদিকে ক্ষেত থেকে মরিচ সংগ্রহ কাজে ব্যাপক সংখ্যক নারী ও শিশু-কিশোরের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।প্রতিজন শ্রমিক কমপক্ষে ৬ ঢাকি মরিচ তুলতে সক্ষম হচ্ছেন।প্রতি ঢাকি ৪০ টাকা হিসেবে দিনে আয় করছেন আড়াইশ থেকে থেকে আড়াইশ টাকা।স্কুলের ছেলে মেয়েরাও ছুটির দিনে এ কাজ করে বাড়তি আয় করছেন। এ হিসেবে মরিচ ক্ষেতে প্রায় ৫০ হাজার নারী ও কিশোর কিশোরীর কর্মসংস্থান হয়েছে।তারা আয়কৃত অর্থে পরিবারের দারিদ্রতা নিরসনে ভুমিকা রাখছেন।

এ ব্যাপারে কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ আরশেদ আলী জানান,মরিচ মসলা জাতীয় ফসল।মরিচের ভাল দাম পাওয়ায় কৃষকদের আগ্রহ বেড়ে চলেছে।

এ জেলার মাটি বন্যামুক্ত হওয়ায় উৎপাদিত মরিচ উন্নত মানের হওয়ায় এর চাহিদা সর্বত্র।এখানে মরিচ ভিক্তিক শিল্প গড়ে তোলা হলে এ জেলার চাষিরা একদিকে যেমন লাভবান হবে তেমনি মসলার আবাদ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে।



মন্তব্য চালু নেই