মন্ত্রী-এমপিদের নিয়ে ইমেজ সঙ্কটে আ’লীগ

৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচন ও সিটি নির্বাচনে অনিয়মের পর এবার দলের মন্ত্রী এমপিদের নিয়ে ইমেজ সংঙ্কটে পড়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলের মন্ত্রী এমপিদের দুর্নীতি ও আচরণে অনেকটাই হতাশ দলের হাইকমান্ড।

সম্প্রতি সিটি নির্বাচনে দলীয় অনেক নেতার কেন্দ্রেই আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী হেরেছে। এদিকে ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বিশাল অঙ্কের অর্থ আয়ের অভিযোগের পুরোনো মামলা নতুন করে সচল হয়েছে। খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকট কামরুল ইসলাম ব্রাজিল থেকে পঁচা গম আমদানি করে বিতর্কের জম্ম দিয়েছেন। এমপি পিনু খানের ছেলের জোড়া খুনসহ সৈয়দ আশরাফকে মন্ত্রালয় থেকে অব্যাহতি দেয়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে চুলচেড়া বিশ্লেষণ।

গত ৭ জুলাই একনেকের একটি বৈঠকে ৬ হাজার ৭৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকার একটি প্রকল্প উপস্থাপন করা হয়। ওই বৈঠকে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম উপস্থিত না থাকায় প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়ায় জটিলতা দেখা দেয়। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার উপর ক্ষুদ্ধ হন। তবে সৈয়দ আশরাফকে এই কারণেই মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে না অন্য কোন কারণ রয়েছে। বর্তমানে সে অঙ্ক কষছে সমাজের সব শ্র্রেনীর মানুষ।

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ১৩ জুন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক নূরুল আলম সূত্রাপুর থানায় ২৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়ার দায়ে মামলা করেন।

এছাড়াও ২০০৮ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারি অবৈধভাবে ৬ কোটির বেশি টাকার সম্পদ অর্জনের মামলায় ১৩ বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে মায়া ২০০৯ সালের ২৫ মে হাইকোর্টে আপিল আবেদন দায়ের করেন।পরবর্তীকালে ২০১০ সালের ২৭ অক্টোবর অবৈধ সম্পদ অর্জন মামলায় মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার সাজার রায় বাতিল করে হাইকোর্ট। দুদক এর বিরুদ্ধে আপিল করে। বর্তমানে তার সে মামলা আবার পুরোদমে শুরু হয়েছে।

এদিকে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ব্রাজিল থেকে পচা গম আমদানি করে সরকারকে নতুন বিতর্কেত মধ্যে ফেলে দিয়েছে। তার এ কর্মকান্ড নিয়ে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এখন প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন সংগঠন মানবন্ধন করে সরকারে কাছে তার অপসারণ দাবি করছেন।

এদিকে গত ১৩ এপ্রিল রাতে ইস্কাটন এলাকায় মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমপি পিনু খানের পুত্র বখতিয়ার আলম রনি এলোপাতাড়ি ছোড়েন। এতে নিহত হন রিকশাচালক হাকিম ও সিএনজি অটোরিকশাচালক ইয়াকুব। আলোচিত এই জোড়া খুনের ঘটনায় দেশব্যাপী চলছে আলোচনার ঝড়।

সম্প্রতি এসব ঘটনায় মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বকারী দল আওয়ামী লীগ সরকার বেশ অসস্তিতে রয়েছেন। তবে দলীয় সূত্রে জানা গেছে, যারা বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন আওয়ামী লীগ প্রধান তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগে এক নেতা বলেন, সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে কিছু ভূল ত্রুটি হয়। আর যা হয়েছে এগুলো খুব বড় কিছু নয়। তবে শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে খুব শীঘ্রই সকল সমস্যার সমাধান হবে।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষেদের সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, সম্প্রতি যেসব ঘটনা ঘটেছে, এতে একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে কিছুটা হলেও বিব্রত। তবে এর মধ্যে কয়েকটি বিষয়ের বিচার কার্য চলমান। এর পূর্ণাঙ্গ রায় হলে যারা অপরাধী সংশ্লিষ্টরা এর যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন। আর দলীয়ভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবেন।



মন্তব্য চালু নেই