মনে রাখা আর ভুলে যাওয়ার পেছনের মজার তথ্য

স্মৃতি ছাড়া কি জীবন ভাবা যায়? স্মৃতিগুলো যেন ধাঁধা! যেটা আপনি মনে রাখতে চান না হয়ত সেটাই মনে আছে বছরের পর বছর। আর যেটা ভেবেছেন মনে রাখতে হবে, সেটাই অগত্যা ভুলে গেছেন। আমাদের মস্তিষ্ক এমনই দুষ্টু, এতটুকু পরোয়া করে না কী আমরা মনে রাখতে চাই বা না চাই তার ব্যাপারে। আসুন, বোঝার চেষ্টা করি মস্তিষ্কের এমন কাজের পেছনের যুক্তি কি! আর আমরাই বা মনে রাখার জন্য কী কী করতে পারি।

কিছু জিনিস মনে থাকে কারণ কিছু জিনিস ভুলে যাই

আমাদের মস্তিষ্ক এক্ষেত্রে আমাদের বস। সব যদি আমরা মনে রাখতে চাই, বা আমাদের মস্তিষ্ক জমিয়ে রাখে তাহলে আমরা হয়ত পাগলই হয়ে যাব। আমাদের চারপাশের ঘটনা থেকে যা যা মজার, উৎসাহদায়ক তাই শুধু মনে থাকে। একঘেয়ে বিষয়গুলো সহজে ভুলে যাই আমরা। মস্তিষ্কের এই স্মৃতি বাছাই প্রক্রিয়াকে বলে ‘eraser effect’।

জোর করে মনে রাখা যায়
মস্তিষ্ক একঘেয়ে বলে যা যা বাতিল করে দেয় তার মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে আছে হয়ত পড়াশোনা। যাদের পড়তে একদমই ভাল লাগে না, তারা যেন যতই পড়ে ততই ভোলে। তবে সুখবর হল, জোর করেও মনে রাখা সম্ভব। একই বিষয় বারবার আওড়াতে থাকলে একসময় তা আমাদের স্মৃতিতে জায়গা করে নেয়।

আপনি জানেন না এমন অনেক তথ্য আছে আপনার স্মৃতিতে
একজন এমনেশিয়ার রোগীকে একটা শব্দের লিস্ট দেওয়া হয়েছিল মুখস্থ করতে। তিনি কোনমতেই সেটা পারলেন না। এরপর তাঁকে কিছু শুন্যস্থান পূরণ করতে দেওয়া হল, যেখানে ওই শব্দগুলোই ব্যবহার করতে হবে। তিনি সেটা ঠিকই পারলেন। কীভাবে? আসলে আমাদের মস্তিষ্ক ঠিকই মনে রাখে কিন্তু অনেক সময় আমরা সেটা টেরও পাই না।

অনেক সময় মস্তিষ্ক পুরোনো স্মৃতির সাথে মিলিয়ে নতুন তথ্য গ্রহণ করে
আমরা যখন কোন সিনেমা দেখি তখন সিনেমায় আগত নতুন নায়িকার সাথে পুরোনো কারও মিল খুঁজি। আবার যখন কোন বই পড়ি তার প্রধান চরিত্রের সাথে নিজের যেন মিল পাই। এটা খুবই স্বাভাবিক এবং সবার ক্ষেত্রেই ঘটে। আমাদের মস্তিষ্ক সবসময়ই নতুন তথ্য মনে রাখার সময় তার সাথে জুড়তে থাকে পুরোনো তথ্য।

ছবি মনে রাখতে সাহায্য করে
আপনার যদি কোন কিছু মনে রাখতে কষ্ট হয় তাহলে কোন ছবির সাথে সেটিকে যুক্ত করার চেষ্টা করুন। ছবি আপনাকে মনে রাখতে সাহায্য করবে। আমাদের মস্তিষ্ক দৃশ্যত বিষয়কে বেশী খেয়াল করে। মনে করে দেখুন, গল্পের বইয়ের অনেক কাহিনীর চাইতে বেশী মনে থাকে সিনেমা। বাচ্চাদের আমরা বর্ণ পরিচয়ের সময় ছবির সাথে যুক্ত করে পড়াই। অর্থাৎ, অ তে অজগর পড়ানোর সময় আমরা পাশে একটি অজগরের ছবিও দেই। কারণ একটাই।

খাওয়ার পর আর স্ট্রেসড অবস্থায় মনে থাকে বেশী
ভাল নাস্তা খাওয়ার পর শরীর গ্লুকোজ নিঃসরণ করে। তখন সহজে অনেক কিছু মনে থাকে। তাই ভরা পেটে পড়া মুখস্থ হয় ভাল! স্ট্রেস বেশি থাকলেও একই ঘটনা ঘটে।

শারীরিক শ্রম ভার্সেস মানসিক শ্রম
আপনি যদি শারীরিক শ্রমের চেয়ে বেশী মানসিক শ্রম করাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন তাহলে আপনার মস্তিষ্ক আরও বেশী সজীব থাকবে। গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসরদের স্মৃতি অনেক ভাল থাকে। অবসর গ্রহণের পরও তারা সহজেই নতুন প্যারাগ্রাফ মুখস্থ করতে পারেন।

দীর্ঘদিনের হতাশা স্মৃতিশক্তি কমায়
মানুষের চনমনে মনের সাথে তার গ্রহণক্ষমতাও থাকে চনমনে। দীর্ঘদিন যাবত হতাশা, বিষণ্ণতা মানুষকে বিপর্যস্ত করে দেয়, কমিয়ে স্মৃতিশক্তি।



মন্তব্য চালু নেই