মনে পড়ে সেই বাসন্তিকে

সকালে পেটে সামান্য দানাপানি না জুটলেও খুব দায়িত্ব নিয়ে খড়কুটা কুড়ানোর কাজটি করতে ঘর থেকে বের হন তিনি। নিয়ম করে খড়ি কুড়ানোই তার রোজ দিনকার কাজ। আপন মনে কথা বলেন আর হাসেন। তার ভাষা বোঝার সাধ্য যে কারো নেই। নতুন মুখ দেখলে তার দিকে রাজ্যের জিজ্ঞাসা নিয়ে তাকিয়ে থাকেন। না খাওয়া রোগাক্লিষ্ট শরীরটা ঢেকেছেন পুরনো ময়লা শাড়িতে। মাথার চুল ছোট। এখন তাকে চেনা দায়। তিনিই হলেন ৭৪-এর জেলে পল্লীর বাসন্তি। মনে পড়ে তাকে?

চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষে রোগা লিকলিকে শরীরে একটি জাল জড়িয়ে সম্ভ্রম ঢেকে সারাবিশ্বে আলোচনায় এসেছিলেন বাসন্তি। সেই জন্মগত বাকপ্রতিবন্ধী বাসন্তি আজ অভাব-অনটনে মানুষের দয়ায় জীবন-যাপন করছেন।

কুড়িগ্রাম শহর থেকে ২৯ কিলোমিটার দূরে চিলমারী উপজেলা। চিলমারী সদর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার গেলে মিলবে বাসন্তি গ্রাম। যা ইতোমধ্যেই নদের গর্ভে চলে গেছে। বর্তমানে বাসন্তির বসবাস উপজেলার রমনা ইউনিয়নের মণ্ডলপাড়ায়। ১৯৪৬ সালে বজরা দিয়ারখাতা গ্রামের জেলে পরিবারে বাসন্তির জন্ম। বাবা কন্দুরাম দাস আর মা শুটকি বালা। তাদের ঘরে চার সন্তানের মধ্যে দুই ছেলে আর দুই মেয়ে। এদের মধ্যে সবার বড় আশুরাম দাস (৮৫) তার ছোট সুনতিবালা (৮০) পরে বাসন্তি (৭০) আর সবার ছোট ভাই বিশুরাম দাস (৬২)। বাসন্তির বাবা-মা দেশ স্বাধীনের আগেই মারা যান।

সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে-সঙ্গে দেশের অনেক কিছু বদলে গেলেও সেই ১৯৭৪ এর দুর্ভিক্ষে ব্যাপক আলোচিত ক্ষুধা ও দারিদ্রের মূর্ত প্রতীক কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার আলোচিত বাসন্তির কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। বাকপ্রতিবন্ধী বাসন্তির বয়স এখন ৭০ ছুঁই ছুঁই। কবে, কখন, তার বিয়ে হয়েছে, আর কখনইবা স্বামীকে হারিয়েছেন কিছুই হয়তো মনে পড়ে না তার। হয়তো খিদের তাড়নায় জীবনের স্বর্ণালি-বর্ণালি সময়গুলোকেই গিলে ফিলেছেন তিনি। দাম্পত্য জীবনে সন্তানের মুখ দেখা হয়নি তার। বাসন্তি সচেতন নন এমনকি নিজের ব্যক্তিগত বিষয়েও চিরকাল অসচেতনই রয়ে গেছেন। অভাব যেন তার সচেতনতাকে গিলে খেয়েছে।

একদিকে অভাব আর অপরদিকে ব্রহ্মপুত্র নদের রাক্ষুসে খিদের ভাঙনে নিঃস্ব আজ বাসন্তির পরিবার। বাসন্তির ভাই নানা রোগে আক্রান্ত। দিনভিক্ষা করে চলছে তাদের সংসার। বাসন্তির ভাতিজা মিলন চন্দ্র দাসের (২০) অভাবি সংসারে কেনোরকমে খেয়ে না খেয়ে বেঁচে আছেন। শুধুমাত্র বয়ষ্ক ভাতাই জুটেছে তার কপালে।

স্বামী-সংসার হারানোর আগেও তাকে মা-বাবার ওপর নির্ভরশীল থাকতে হয়েছে। পরগাছার মতো বেড়ে ওঠা বাসন্তি বর্তমানে তার এক বড় ভাই আশুরাম দাসের ওপর নির্ভরশীল। বছর দেড় দুয়েক আগে তার নামে নামকরণ করা `বাসন্তি` গ্রামটি ব্রহ্মপুত্র নদের গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় মাথা গোঁজার আশ্রয়টুকুও হারিয়ে যায় তাদের। ভগবানের রূপ নিয়ে আশ্রয় দেন সন্তোষ দাস। তিনিও নদের ভাঙনের শিকার হয়ে পাঁচ শতক জমি কিনে বাড়ি করেন। সেখানে বাসন্তি গড়েন ছোট টিনের ছাপড়া।

শতেক টিনের ফুটোয় যেন তার ঘরের সম্ভ্রম হানি হয়। তবুও এ ঘরটিকেই আপন করে তার বেঁচে থাকা। তার আপন ভুবনের মধ্যমনি হয়ে রয়েছে কাঠের একটি চকি। বাঁশের পায়ায় দাঁড়িয়ে থাকা সে চকি তার অনেক সুখ-দুঃখের সাক্ষী। সেখানেই কোনোরকমে দিনাতিপাত করেন বাসন্তি। তার ছোট্ট কুটিরের পাশে সামান্য জমিতে রয়েছে আরো চারটি পরিবারের বসবাস। যেন গাদাগাদি করে জীবন পার করা নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের।

দারিদ্রতার সঙ্গে সংগ্রাম করে অভাব-অনটনের মাঝে চিকিৎসার অভাবে বড় বোন সুনতিবালা অনেক আগে আর ছোট ভাই বিশুরাম দাস মাত্র বছর দুয়েক আগে দূরারোগ্য ব্যধিতে মারা যান। ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত বজরা দিয়ারখাতা গ্রামের অভাবী জেলে পরিবারের নানান প্রতিকূলতার মধ্যে তিনি বড় হয়ে উঠতে থাকেন। এরপর বাসন্তির পরিবারসহ জেলে পরিবারগুলো ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনের মুখে সবকিছু হারিয়ে আশ্রয় নেন রমনা ইউনিয়নের খড়খড়িয়া গ্রামে। এখানে আশ্রয় নিয়ে জেলে পরিবারগুলো ব্রহ্মপুত্র নদে জাল দিয়ে মাছ ধরে সে মাছ বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতে থাকেন।

তখন বাসন্তির ভরা যৌবন। ১৯৭০ সালের শেষের দিকে বাসন্তির পরিবারের লোকজন তাকে একই গ্রামের বাবুরামের সঙ্গে বিয়ে দেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে পাক সেনারা চিলমারীতে আসার আগেই স্বামী বাবুরাম বাসন্তিকে ছেড়ে তার চেয়ে বয়সে বড় ওই এলাকার সাইব রানী নামের এক নারীর সঙ্গে প্রেমের টানে ভারতের সুখচরে চলে যান।

এরপর বাসন্তির বড় ভাই আশুরাম দাস, ছোট ভাই বিশুরাম দাসসহ জেলে পরিবারগুলো ব্রহ্মপুত্র নদ পাড়ি দিয়ে চলে যান মুক্তাঞ্চল রৌমারী। এদের মধ্যে অনেকেই ভারতের আত্মীয়-স্বজন, শরণার্থী শিবির ও মাইনকার চরে আশ্রয় নেন। এভাবেই তারা যুদ্ধের নয় মাস অতিবাহিত করেন।
basontiদেশ স্বাধীনের পর বাসন্তিসহ জেলে পরিবারগুলো ফের নিজ ভিটে-মাটিতে ফিরে আসে। যুদ্ধের দীর্ঘ নয় মাসে পাক সেনাদের তাণ্ডবলীলায় জেলে পল্লীটি সম্পূর্ণ আগুনে পুড়ে ভস্মিভূত হয়ে যায়।

খোলা আকাশের নিচে বসবাস করতে থাকেন জেলে পল্লীর সবাই। ভাইদের সঙ্গে বাসন্তি নিজ মাতৃভূমিতে ফিরে এলেও তার স্বামী বাবুরাম আর ফেরত আসেননি। অসহায় প্রতিবন্ধী বাসন্তির দেখা-শোনার দায়িত্ব পড়ে তার ভাইদের ওপর। যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে দেশ পুনর্গঠনে মুজিব সরকার জোরে শোরে কাজ শুরু করে। এর অংশ হিসেবে নিঃস্ব জেলে পরিবারগুলোকে পুনর্বাসন করতে সরকারের পক্ষ থেকে তাঁবু, খাদ্যদ্রব্য, মাছ ধরার জাল, দড়ি ও আর্থিক সাহায্য-সহযোগিতা করা হয়। এভাবেই চলছিল জেলে পরিবারের জীবনযাত্রা।

আলোচিত বাসন্তিকে পুনর্বাসনের জন্য সরকারিভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল। জোড়গাছ মাঝিপাড়ায় ২০৪টি পরিবারের মধ্যে ১৭৬টি হিন্দু পরিবার এবং ২৮টি মুসলমান পরিবারকে নিয়ে সরকারিভাবে বাসন্তি গ্রাম করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একই পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৯৯৬ সালের প্রথম দিকে দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচির আওতায় উল্লেখিত ২০৪টি পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য

সুদমুক্ত ঋণ প্রদান করা হয়। এ ঋণের পরিমাণ ছিল ৬ লাখ ১২ হাজার টাকা। মোট ছয়টি দলে ভাগ করে ঋণ দেয়া হলেও বাসন্তিকে কোনো দলেই রাখা হয়নি।
পরে জমি অধিগ্রহণ না করতে পারায় সরকারিভাবে বাসন্তি গ্রাম নির্মাণের পরিকল্পনাটি ভেস্তে যায়। সরকারি উদ্যোগ ব্যর্থ হওয়ার পর কারিতাস নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে প্রায় একটি গ্রাম গড়ে তোলে। এনজিওটি বাসন্তির নামে একটি ঘর বরাদ্দ দেয়। ওটাই ছিল বাসন্তির একমাত্র ঠিকানা। কিন্তু ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে বাসন্তি গ্রামটি আবারও ভাঙনের মুখে পড়ে। ঘর সরিয়ে আনা হয় নতুন চরে। ক্ষুধার জ্বালায় গ্রামটির অনেক পরিবার কারিতাসের ঘরগুলো বিক্রি করে দেয়।

সংসারে বাসন্তির অবদান বলতে প্রতিমাসে পাওয়া বয়ষ্ক ভাতার ৪শ টাকা বড় ভাইয়ের হাতে তুলে দেন। অসুস্থ একমাত্র বড় ভাইয়ের অভাব-অনটনের সংসারে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে তার।

সরেজমিন দেখা যায়, বাসন্তি গ্রামে শুধু থৈ থৈ পানি। বাসন্তি দুপুরে জোড়গাছ ঘাট বাজারে খড়ি কুড়াতে গেছেন। অনাহারে-অর্ধাহারে শরীরের কাঠামো ভেঙে পড়েছে। ছোট শিশু কিংবা বৃদ্ধ সবার কথা শুনে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে হাসতে থাকেন। ছবি তুলতে গেলে তিনি মুখ ফিরিয়ে নেন।

ক্যামেরা হাতে বাসন্তির সামনে থাকার সময় ওই মুহূর্তে গ্রামের অনেক নারী-পুরুষ জড়ো হতে থাকেন। তারা বাসন্তির দুঃখ ভরা জীবনের কথার পাশাপশি তাদের জীবনের করুণ কাহিনী তুলে ধরেন। নদীতে শুকনো মৌসুমে পানি থাকে না, মাছও পাওয়া যায় না। আর এলাকায় তেমন কাজও নেই। তখন আমাদের দিন কাটে খেয়ে না খেয়ে। আমরা কাজ চাই, কাজ করে খেতে চাই। বাসন্তির মুখের দিকে তাকিয়ে মনে হয় এ যেন তারই বাকহীন কথা।

বাসন্তির বড় ভাই আশুরাম দাস জানান, নদীতে আগের মতো আর মাছ পাওয়া যায় না, হাতে কোনো কাজও নেই। আমরা চলতে পারছি না।

আমি আমার স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়ে এবং ছোট বোন বাসন্তিকে নিয়ে অন্ন জোগাড় করে খুব কষ্ট করে খেয়ে বেঁচে আছি। বেশ কিছুদিন আগে ঋণ করে মেয়েটির বিয়ে দিয়েছি। সেই ঋণের টাকা পরিশোধ করবো নাকি পরিবারের পাঁচ সদস্যের পেট রক্ষা করবো। দুই বছর ধরে পায়ের অসুখ নিয়ে ভুগছি টাকার অভাবে ভালো করে চিকিৎসা করাতে পারি না। আর বাকপ্রতিবন্ধী বাসন্তির পাওয়া বয়ষ্ক ভাতার টাকা দিয়েতো ওর এক মাসের খাবারও হয় না।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সাংবাদিক আর সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা জানান, বাসন্তিসহ তার এক ভাই-ভাবী, ছেলেমেয়েসহ অনেকজন। এতে দেখা যায়, শুধু বাসন্তির নামের কার্ডে যে টাকা পাওয়া হয়, তা দিয়ে সবাই মিলে খেয়ে কদিন থাকতে পারেন? যদি তার ভাইয়ের কার্ড দেয়ার ব্যবস্থার সঙ্গে তার ভাতিজাদের একটা কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিলে তাতেও কিছুটা দুঃখ ঘুঁচতো। এসময় এলাকাবাসীর অনেকে দাবি করেন, তার চিকিৎসা হওয়া দরকার।

চিলমারী উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আব্দুল কুদ্দুস সরকার বলেন, বাসন্তির ঘটনাটি একটি সাজানো ঘটনা। সে সময় সরকারকে বেকায়দায় ফেলানোর জন্য এ ঘটনাটি ঘটানো হয়। তবে বর্তমানে বাসন্তিকে বয়ষ্ক ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া এলাকার লোকজনের সহযোগিতায় তিনি জীবন-যাপন করছেন।

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে ১৯৭৪ সালে আকস্মিকভাবে বড় ধরনের বন্যা শুরু হলে দেখা দেয় দুর্ভিক্ষ। দেশ জুড়ে শুরু হয় ঘরে ঘরে অভাব। আকালের মরণ ছোবলে শত শত মানুষ তখন ভুখা-নাঙ্গা। প্রতিদিন পত্রিকার পাতা জুড়ে খবর বেরোয় মৃত মানুষের সচিত্র দলিল।

সারা দেশের আকাশ বাতাস তখন ক্ষুধার্ত মানুষের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে। তৎকালীন জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন মজুমদার দুর্ভিক্ষের খোঁজ-খবর নিতে আসেন। সঙ্গে আসেন দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার ফটো সাংবাদিক আফতাব উদ্দিন। তিনি ইত্তেফাক পত্রিকায় ফটো সাংবাদিক হিসেবে যোগদেন ১৯৬২ সালে। স্বাধীনতা বিরোধী একটি চক্র জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আসা দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার ফটো সাংবাদিক আফতাব উদ্দিনকে কৌশলে ডেকে নিয়ে কুপরামর্শ দেন।

এসময় জেলা প্রশাসক রুহুল আমীন মজুমদারকে তৎকালীন রমনা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আনসার আলী দুর্ভিক্ষ সম্পর্কে অবগত করেন। কিন্তু জেলা প্রশাসক তখনও বুঝে উঠতে পারছে না এই দুর্ভিক্ষ সম্পর্কে।

পরে এ ফটো সাংবাদিক ইউপি চেয়ারম্যান আনসার আলীকে ইউনিয়ন পরিষদ সভাকক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে দু’জনে নাটক সাজানোর জন্য চলে যান জেলে পল্লীতে। সেখানে পরিকল্পিতভাবে বাসন্তীর সমস্ত শরীরে মাছ ধরার জাল পড়িয়ে লজ্জা নিবারণের মিথ্যে সান্তনা বুকে নিয়ে একটি মেয়ে কলা গাছের ভেলায় চড়ে কলাগাছের মাঞ্জা বা পাতা সংগ্রহ করছেন, বন্যার পানিতে আরেকজন সাদৃশ্য নারী শ্রীমতি দূর্গতি রাণী বাঁশ হাতে ভেলার অন্য প্রান্তে বসে নিয়ন্ত্রণ করছেন ভেলাটিকে।

পরে এ ছবি ও একটি প্রতিবেদন দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়া মাত্রই দেশে-বিদেশে তোলপাড় শুরু হয়। ছবিটি প্রকাশিত হওয়ার পর বিশ্ব মানবতার মনকে নাড়া দিয়ে ওঠে। ওই ছবিটিকে সম্বল করে জনতার সামনে তৎকালীন সরকারের ব্যর্থতার বিষয়টি প্রতিষ্ঠা করার প্রয়াসে এতটুকুও ত্রুটি রাখেনি স্বাধীনতা বিরোধীরা। বাসন্তির জাল পরা ছবিটিকে ঘিরে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে ক্ষমতাসীন মুজিব সরকার। সরকারের পক্ষ থেকে ছবিটিকে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র বলে আখ্যায়িত করা হয়।

বাসন্তিকে জাল পরানো হয়েছিল, নাকি দারিদ্র্যের কারণে তিনি নিজেই জাল পরে সম্ভ্রম রক্ষা করেছিলেন, তা নিয়ে অনেক বিতর্ক চলে। কিন্তু ৭৪-এর দুর্ভিক্ষের পর বাসন্তির আর কোনো খবর পাওয়া যায়নি। পৃথিবীর গভীরতর বেদনার ক্ষতগুলো যেমন প্রতিদিন কালো অক্ষরের ফুল হয়ে ফুটে থাকে খবরের কাগজের পাতায় পাতায়। তেমনি এদেশের রাজনীতির ইতিহাসে একটি বেদনাময় অধ্যায়ের নাম ‘বাসন্তি’। এমন কি বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে বাসন্তি একটি মারাত্মক রাজনৈতিক ইস্যূতে পরিণত হয়ে যান। চিলমারীর আর একবার পরিচিতি ঘটে বাসন্তির এলাকা বলে। -জাগোনিউজ



মন্তব্য চালু নেই