মদন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স : ৫ বছরেও প্যাকেট বন্দি আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন

আরমান জাহান চৌধুরী, মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি : ৫ বছরেও প্যাকেট বন্দি রয়েছে মদন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন। এর মধ্যে গত ২ বছর আগে আরেকটি আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিন জমা হয়েছে হাসপাতাল স্টোরে। এভাবেই অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে এক্স-রে,ই,সি,জি,দন্ত ও জেনারেটর মেশিন। হাসপাতালে গাইনী বিশেষজ্ঞসহ ১১জন ডাক্তার কর্মরত থাকার পরেও মিলছে না প্রয়োজনীয় সেবা।

প্যাথলজি,দন্ত,এক্স-রে,ই সি জি,আল্ট্রসনোসহ এতদ সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে থাকায় হাপাতালের চারদিকে রাতারাতি ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে রেজিষ্টেশন বিহীন প্রাইভেট প্যাথলজি ক্লিনিক। অনবিজ্ঞ প্যাথলজিস্ট দ্বারা সেবা দেয়া হচ্ছে এই প্যাথলজি ক্লিনিক গুলোতে। হাসপাতালে আগত রোগীদেরকে সকল প্রকার পরীক্ষার জন্য এসব ক্লিনিক গুলোতে প্রেরণ করা হয়। ফলে জনসাধারন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসার উপর আস্থা হারিয়ে ঝোকে পড়ছে ক্লিনিক গুলোর দিকে।

মদন উপজেলার দুই লক্ষাধিক জনবলসহ আটপাড়া,খালিয়াজুরীর অর্ধলক্ষাধিক লোকের স্বাস্থ্য সেবার একমাত্র ভরসা এই ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি। এখানে প্রতিদিন তিন থেকে চারশ রোগী সেবা নিতে আসত। প্রয়োজনীয় সেবা না পাওয়ায় বর্তমানে ২০/৩০ জন রোগীও আসে না এ হাসপাতালে। সরকার স্বাস্থ্য সেবা উন্নয়নে বিপুল পরিমান অর্থ ব্যয় করলেও এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি জনগণের কোন কাজে আসছে না। এ নিয়ে এলাকাবাসী ও সচেতন মহল বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের বরাবর অভিযোসহ উপজেলার মাসিক সমন্বয় সভায় একাধিক বার উত্তাপন করলেও কোন সুফল পাচ্ছে না।

হাসপাতালে ডাক্তারগণ নামে মাত্র আসলেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে চলে যান প্রাইভেট ক্লিনিক গুলোতে রোগী দেখতে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক হাসপাতালে কর্মরত একাধিক কর্মচারী জানান, স্যারেরা হাসপাতালে এসে স্বাক্ষর করে প্রাইভেট ক্লিনিকে চলে যান,আমরা বিশেষ প্রয়োজনে ফোন করলে উনারা আসেন। ফতেপুর গ্রামের ফরিদ চৌধুরী,মনোহরপুর গ্রামের নজরুল ইসলাম ,মাঘানের আবুল কালাম ,কদমশ্রী গ্রামের আব্দুল গণি,আটপাড়া দেওশ্রী গ্রামের ফাতেমা আক্তার জানান, সোমবার মদন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে রোগী নিয়ে আসলে কোন ডাক্তার পাওয়া যায়নি। অনেক্ষণপর বড় ডাক্তার আব্দুল কদ্দুছ স্যারের দেখা পাইলেও কয়েকটি পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন ক্লিনিকে পাঠিয়েদেন।

গাইনী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নাদিয়া নাসরিনকে হাসপাতালে পরিবর্তে প্রাইভেট ক্লিনিকে আল্ট্রাসনোগ্রাম করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন স্যারের কাছে জিজ্ঞাসা করুন।

স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা ডাক্তার আব্দুল কদ্দুছ আল্ট্রা,ইসিজি,এক্স-রে,দন্ত ও জেনারেটর কার্যক্রম বন্ধ থাকার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অচিরেই এ গুলো চালু করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ খুরশীদ শাহরিয়র জানান, মাসিক সমন্বয় সভায় উক্ত বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে স্বাস্থ্য প্রশাসক জনবল সংকটের কথা জানালে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করার জন্য সিন্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

সিভিল সার্জন ডাক্তার মোঃ আব্দুল গণি বলেন,আমি কেবল যোগদান করেছি এ বিষয়ে আমার ভাল জানা নেই,তবে শ্রীঘ্রই এ গুলো চালু করার ব্যবস্থা নেব।



মন্তব্য চালু নেই