ভ্যাট নিয়ে এফবিসিসিআই ও অর্থমন্ত্রীর দ্বিমত

মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাটের স্তর নিয়ে একমত হতে পারছেন না অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) নেতৃবৃন্দ।

পণ্য ও খাত বুঝে কয়েকটি স্তরে ভ্যাট নির্ধারণ ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি। বিশেষ করে, গ্রামীণ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কথা মাথায় রেখে ওই দাবি জানিয়ে আসছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠনটি।

অন্যদিকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে ভ্যাটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে- এমন কথা বলে এলেও পরোক্ষভাবে ওই দাবির সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন তিনি।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়োজিত মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন, ২০১২ করদাতা উদ্বুদ্ধকরণ-বিষয়ক সেমিনারেও অর্থমন্ত্রী আবারও সেই একই মত পোষণ করেন।

সেমিনারে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সব দেশে ভ্যাটের পরিমাণ এক রকম না হলেও একটি স্তর চালু আছে। তাই ভ্যাটের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন পণ্যে কিংবা ব্যবসার ওপর নির্ভর করে আলাদা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক নির্ধারণ করার দাবি গ্রহণযোগ্য নয়।’

তিনি আরো বলেন, সবার সুবিধার জন্য সারা বিশ্বের সঙ্গে মিল রেখে ভ্যাটের ক্ষেত্রে একটি স্তরই চালু থাকবে। আর এটি কার্যকর করতে ব্যবসায়ীসহ করদাতাদের পরামর্শের আলোকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

অন্যদিকে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম আহমেদ আবারও দাবি জানিয়ে বলেন, ‘এক স্তরের ভ্যাট পদ্ধতি গ্রামীণ ব্যবসায়ী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের বিপদে ফেলবে। তাই বিভিন্ন পণ্য ও ধরন অনুযায়ী আলাদা আলাদা মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট নির্ধারণ করা দরকার।’

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘সব পণ্যের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রদান করা আমাদের মতো বড় ব্যবসায়ীদের জন্য সমস্যা নয়। কিন্তু গ্রামের মুদি দোকানদার, মুড়ি বিক্রেতা, সবজি বিক্রেতার পক্ষে পূর্ণাঙ্গ হিসাব রেখে ১৫ শতাংশ ভ্যাট পরিশোধ করা কঠিন কাজ।’

তিনি আরো বলেন, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অধিকাংশই অশিক্ষিত অথবা অল্পশিক্ষিত। এক স্তরের ভ্যাট নীতি তাদের ক্ষতিগ্রস্ত করবে। আর সব পণ্যে সমান মুনাফা না হওয়ায় শিক্ষিত ব্যবসায়ীদের পক্ষেও এক স্তরের তথা ১৫ শতাংশ ভ্যাট দেওয়া কষ্টসাধ্য।

এফবিসিসিআইসহ বিভিন্ন মহলের অভিযোগ, আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শেই নতুন আইন বাস্তবায়নে প্রায় সব পর্যায়ে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই