‘ভোট সকাল ৯টার মধ্যে শেষ হয়ে যাবে’

আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনের ভোট সকাল ৯টার মধ্যে শেষ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাহায্য চাওয়ায় নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার সম্ভাবনা আর নেই। উনি (প্রধান নির্বাচন কমিশনার) উনার দায়িত্ব ভুলে গেছেন। উনি চাকরি করেন, কিন্তু এটা তো চাকরি নয়। সুষ্ঠু নির্বাচন করা কমিটমেন্ট রয়েছে। এটা সাংবিধানিক দায়িত্ব।’

রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাতীয় পার্টির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাপা চেয়ারম্যান এ সব কথা বলেন।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আশঙ্কা করে বলেন, ‘এই নির্বাচন আওয়ামী লীগের জন্য অগ্নিপরীক্ষা। আমার মনে হচ্ছে, এই নির্বাচন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মতো হবে। সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট যেভাবে সকাল ৯টার মধ্যে শেষ হয়ে গিয়েছিল, আমার আশঙ্কা এই নির্বাচনও তেমন হবে। আওয়ামী লীগ অগ্নিপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারবে না।’

এরশাদ বলেন, ‘আমাদের দলের দু’জন প্রার্থীকে জেলে পাঠানো হয়েছে। এই নির্বাচন কমিশনের মেরুদণ্ড নেই। এটা আবারও প্রমাণিত হয়েছে। উনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাহায্য চেয়েছেন। যাতে প্রধানমন্ত্রী উনার মন্ত্রী-এমপিদের লাগাম টেনে ধরেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তো প্রধানমন্ত্রীর চেয়েও শক্তিশালী। উনি ইচ্ছা করলেই ডিসি, এসপিদের বদলি করতে পারেন।’

প্রধানমন্ত্রীর এই বিশেষ দূত বলেন, ‘আমাদের দলের দেড়শ’ প্রার্থী ছিলেন। ভয়ে অর্ধেক বসে পড়েছেন। এই নির্বাচন সকাল ৯টার মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। জনগণ এই নির্বাচন মানবে না। কিন্তু দেশ ঠিকভাবেই চলবে। কারণ, এখন কথা বলার অধিকার নেই।’

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘এখন বুদ্ধিজীবীরা চুপ। তারা কথা বলছেন না। কোথায় আছি আমরা? এটা কি গণতন্ত্র? বুদ্ধিজীবীরা কথা বলছেন না। প্রথম আলোর মতো পত্রিকা কিছু লেখে না। কারণ, তারও ভয়ে নিশ্চুপ।’

সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমাকে বলা হয়েছিল, আপনি ক্ষমতা ছেড়ে নির্বাচন দিন। এখন কি প্রধানমন্ত্রীকে এই কথা কেউ বলতে পারবে? কিন্তু আমি দিয়েছিলাম। আমার সময় ছয়জন মানুষ মারা গেছেন। ছয়জনের নাম মনে রাখা সহজ। এখন তো প্রতিদিন কত মানুষ মারা যাচ্ছেন। তার কোনো হিসাব নেই। কেউ মনে রাখে না। তাদের কান্না বাতাসে হারিয়ে গেছে। এই গণতন্ত্র আমরা চাইনি।’

এরশাদ বলেন, ‘আমাকে কথায় কথায় নূর হোসেনের খুনী বলা হয়। নূর হোসেনের বুকে লেখা ছিল গণতন্ত্র মুক্তি পাক। কিন্তু পেছনের লেখা কে লিখেছিল? আমি যদি ক্ষমতায় যেতে পারি, নূর হোসেনের পেছনে যিনি গণতন্ত্র মুক্তি পাক লিখে তাকে হত্যা করেছে তার বিচার করব।’

বক্তব্য শেষে এরশাদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হিসেবে সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জহিরুল আলম রুবেলের নাম ঘোষণা করেন।

জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা। এতে বক্তব্য দেন বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জি এম কাদের, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, এস এম ফয়সল চিশতী, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূইয়া প্রমুখ।



মন্তব্য চালু নেই