ভোটের আচরণবিধি মনিটরিংয়ে মাঠে থাকবে ১২০৪ ম্যাজিস্ট্রেট

পৌরসভা নির্বাচনে ২৩৪টি পৌরসভায় নির্বাচন চলাকালীন সময়ে নির্বাচন বিধি ও আচরণবিধি মনিটরিং এর জন্য ১২০৪ জন জুডিশিয়াল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েনের প্রস্তাব করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের ফাইল কমিশনে অনুমোদনের জন্য দেয়া হয়ছে। কমিশন অনুমোদন দিলে বুধবার আইন বিভাগ ও জন প্রসাশন মন্ত্রণালয়কে চিঠি প্রদান করা হবে।

এ বিষয়ে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব বলেন, ‘১ হাজারের মতো ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের প্রস্তাব কমিশনের কাছে দেয়া হয়েছে। কমিশন অনুমোদন করলে চিঠি আকারে আমরা সংশ্লিষ্টদের পাঠাবো।’

ইসি সচিবালয়ের প্রস্তাবে বলা হয়, পৌরসভা নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন বিধিমালা ২০১০ এর বিধি ৮৬ অনুসারে ২৩৪টি পৌরসভায় নির্বাচনী এলাকা বিধি ৭২,৭৪, ৭৫, ৭৬ এর উপ-বিধি (১) এবং বিধি ৭৮ এর অধীনে অপরাধ আমলে নেয়ার জন্য ১৮ এর কম ওয়ার্ডের পৌরসভায় একজন করে ও ১৮ এর বেশি সংখ্যক ওয়ার্ডের পৌরসভায় দুজন করে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হবে। এতে করে ২৩৪টি পৌরসভায় ২৩৯ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা যেতে পারে।

পৌরসভা নির্বাচন উপলক্ষে মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯ অনুসারে, আইন শৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ প্রতিরোধ কার্যক্রম পরিচালানার জন্য ৯৬৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হবে। এর মধ্যে প্রতিটি পৌরসভার জন্য ২৩৪ জন ম্যাজিস্ট্রেট প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ হতে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে অবস্থান করবে। অর্থাৎ ১৯ দিন তারা মাঠে থাকবে বলে প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়।

এছাড়া প্রতিটি পৌরসভার তিনটি ওয়ার্ডের জন্য একজন করে ৭৩০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আচরণ বিধি সংক্রান্ত মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য নির্বাচনী এলাকায় ভোটগ্রহণের পূর্বের দুই দিন, ভোটগ্রহণ ও পরের দিন অর্থাৎ ২৮ থেকে ৩১ ডিসেম্বর পযন্ত মোট ৪ দিনের জন্য নিয়োগ করা হবে।

ইসির আইন শাখার সূত্রে জানা যায়, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ব্যয় কমানোর কারণে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা কমিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাড়ানোর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এছাড়া প্রতিটি পৌরসভায় ভিজিল্যান্স ও অবজারভেশন টিমে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রেখে পরিপত্র জারি করা হলেও কমিশন কর্মকর্তাদের মৌখিক নির্দেশনায় তা অনুসরণ করেনি রিটার্নিং কর্মকর্তারা।

নির্বাচন কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচনী বিধি লংঘনের ঘটনায় ছয় মাস থেকে সাত বছর পর্যন্ত এবং আচরণবিধি লংঘনের ঘটনায় অনধিক ৬ মাসের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরা নির্বাচনী বিধি ও আচরণবিধি লংঘনের ঘটনায় সর্বোচ্চ সাত বছর পর্যন্ত সাজা দেয়ার এখতিয়ার রাখেন। অপরদিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত সাজা দিতে পারেন। এরসঙ্গে অর্থদণ্ডের বিধানও রাখা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পৌরসভা নির্বাচনে মোট ৩ হাজার ৫৮২টি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হবে। এতে পুর’ষ ভোটার ৩৫ লাখ ৮৬ হাজার ৩৫৬ এবং নারী ভোটার ৩৫ লাখ ৭৬ হাজার ৪০জন। মেয়র পদের সংখ্যা ২৩৪, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদের সংখ্যা ৭৩৮, সাধারণ কাউন্সিলর পদের সংখ্যা ২ হাজার ৯৫২টি। ভোটগ্রহণ করবেন মোট ৬১ হাজার ১৪৩ জন কর্মকর্তা।

ঘোষিত তফসিল অনুসারে, আগামী ৩০ ডিসেম্বর ২৩৫টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ। ১৩ ডিসেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ সময়। এর পরেই চুড়ান্ত প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করা হবে।



মন্তব্য চালু নেই