ভোটারদের তথ্য মিলবে ইসির ওয়েবসাইটে

প্রায় ৯ কোটি ভোটারের তথ্য নির্বাচন কমিশনের ডাটাবেজে রয়েছে। জনগণের সুবিধার্থে এখন থেকে সব ভোটারের জাতীয় পরিচিতি নম্বর ও ভোটার নম্বরসহ বিস্তারিত তথ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। ভোটাররা রেজিস্ট্রেশন করে প্রাপ্ত পাসওয়ার্ড দিয়ে নিজ নিজ তথ্য ওয়েবসাইটে দেখতে পারবেন।
বৃহস্পতিবার বৈঠক করে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এদিন সকাল ১১টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
উল্লেখ্য, নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভোটার তালিকার ডাটাবেজ দেখতে পান এবং তথ্য হালনাগাদও করতে পারেন। কিন্তু ইসির ওয়েবসাইটে ভোটারদের কিছুই দেখার সুযোগ নেই।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, জাতীয় পরিচিতি নম্বর ও ভোটার নম্বর ওয়েবসাইটে প্রকাশে মত দিয়ে কমিশনার আবদুল মোবারক একটি অনানুষ্ঠানিক নোট প্রধান নির্বাচন কমিশন বরাবর পাঠান। ওই নোটের ভিত্তিতে ভোটারের তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে এ ব্যাপোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
ওই নোটে বলা, জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে ফেললে থানায় ডায়েরি করতে হয়। কিন্তু পরিচিতি নম্বর স্মরণে না থাকলে থানা ডায়েরি নেয় না। ডায়েরি না থাকায় জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগও (এনআইডি) আবেদন গ্রহণ করে না। নির্বাচনের সময় ভোটার নম্বর না জানা থাকলে সংশ্লিষ্ট সহকারি প্রিজাইডিং অফিসাররা ভোটার তালিকায় খুঁজতে অনীহা প্রকাশ করেন। এ কারণে জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে থাকা সত্ত্বেও অনেক ভোটার ভোট দিতে ব্যর্থ হন। এছাড়া ব্যাংক একাউন্ট খোলা, স্কুল কলেজে ভর্তির দরখাস্ত করা, ট্রেড লাইসেন্স ও অন্যান্য লাইসেন্সের জন্য ভোটার পরিচিতি নম্বর প্রয়োজন হয়। জনগণকে এসব ভোগান্তি থেকে বাঁচানো জন্য সব তথ্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা যেতে পারে।
এ ব্যাপারের এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহউদ্দিন বলেন, ‘বৃহষ্পতিবারের বৈঠকে ভোটারের পরিচিতি ও ভোটার নম্বর ওয়েবসাইটে প্রকাশের প্রস্তাব করা হবে। তবে এ ব্যাপার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের।’
তিনি জানান, ইতোমধ্যে সফটওয়ার তৈরি করা হয়েছে। কমিশন সিদ্ধান্ত নিলেই তারা এ সেবা চালু করতে পারবেন।
এভাবে ভোটারদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি বা বিকৃত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ সেবা পেতে হলে প্রত্যেক ব্যক্তিকে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। এরপর তার দেয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে তাদের একটি করে পাসওয়ার্ড দেয়া হবে। তারপর সেই ব্যক্তিকে একসেসের অনুমতি দেয়া হবে।’
ইতোমধ্যে ব্যক্তির তথ্য নেয়ার জন্য এনবিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। বৈঠকে এ ব্যাপারেও আলোচনা হবে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। সেসময় ভোটার ছিল ৮ কোটি ১০ লাখ ৫৮ হাজার ৬৯৮। ২০০৯ সালের হালনাগাদ হয় একবার। ২০১২ সালে হালনাগাদে ভোটার বাড়ে প্রায় ৭০ লাখ। বর্তমানে ৯ কোটির বেশি ভোটারের তথ্য ইসির ডাটাবেজে সংরক্ষিত রয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই