পৌর নির্বাচন

ভোটযুদ্ধে লড়বেন ৩৮৫ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী

আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিসহ ২০টি রাজনৈতিক দলের মনোনীত ৬৭১ জন প্রার্থীদের সঙ্গে ভোটযুদ্ধে লড়বেন ৩৮৫ জন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী।

৫ ও ৬ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে দলভিত্তিক চূড়ান্ত তালিকা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

ইসি জানায়, আপিলের আগ পর্যন্ত নির্বাচনে মোট ১ হাজার ৫৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে স্বতন্ত্র ৩৮৫ জন। এ ছাড়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২৩১, বিএনপির ২২৪ ও জাতীয় পার্টির ৮৫ জন মেয়র প্রার্থী রয়েছেন। যাচাই-বাছাইয়ে বাতিল করা হয়েছে ১৫৮ জনের মনোনয়নপত্র। তবে বাতিল হওয়া প্রার্থীরা ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রার্থিতা বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন।

বিধি অনুযায়ী, তিন দিনের মধ্যে আপিল নিষ্পতির বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে হিসেবে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত শুনানি করেছে ইসি। তবে আপিলের পর প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার তথ্য এখনো ইসিতে আসেনি।

ইসির উপ-সচিব সামসুল আলম বলেন, ‘এবারই প্রথম দলীয় ব্যানারে পৌরসভা নির্বাচন হচ্ছে। ‘আপিলের পূর্ব পর্যন্ত ২০টি রাজনৈতিক দলের ৬৭১ জন এবং ৩৮৫ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন বলে তথ্য এসেছে। তবে আপিল শুনানি ও প্রত্যাহারের শেষ দিন পার হলে আমরা চূড়ান্ত প্রার্থীর সংখ্যা পাবো।’

এদিকে, স্বতন্ত্র ব্যানারে চার শতাধিক প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিলেও তাদের একটি বড় অংশ মূলত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিদ্রোহী প্রার্থী। দল থেকে সমর্থন ও মনোনয়ন না পেয়ে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন তারা।

ইসি সূত্র জানায়, নির্বাচনে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোর বৈধ প্রার্থীর মধ্যে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির ২ জন, জাতীয় পার্টির (জেপি) ৬ জন, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির ৪ জন, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির ৭ জন, বিকল্পধারা ১, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ২৪, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল ১, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি ১৬ জন, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল-পিডিপির ১ জন, ইসলামী ঐক্যজোটের ২ জন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ৫৬, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ৩ জন, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ১ জন এবং খেলাফত মজলিশের ৫ জন মেয়র প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

গত ৩ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন পর্যন্ত মেয়র পদে ১ হাজার ২১৩ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের ২৩৮ জন, বিএনপির ২৩৩ জন এবং জাতীয় পার্টির ৯১ জন মেয়র প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। এ ছাড়া লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি ২ জন, জাতীয় পার্টির (জেপি) ৬ জন, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির ৪ জন, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির ৯ জন, বিকল্পধারার ১, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) ২৬, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ ১ জন, ইসলামী ঐক্যজোটের ৩ জন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ৬১, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ৪ জন, বাংলাদের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ১ জন ও খেলাফত মজলিশের ৭ জন মনোয়নপত্র দাখিল করেছিলেন।

এ ছাড়া দলের বাইরে স্বতন্ত্রভাবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন ৫০৩ জন।

এদের যাচাই-বাছাই শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তারা আওয়ামী লীগের ৭ জন মেয়র প্রার্থী, বিএনপির ৯ জন, জাতীয় পার্টির ৬ জন মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করেন। এ ছাড়া স্বতন্ত্র ১৫৮ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। এ ছাড়া বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির ২ জন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের ২ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি ৩ জন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপের ১, ইসলামী ঐক্যজোটের ১, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ৫ জন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ১ জন এবং খেলাফত মজলিশের ২ জন মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।

৫ ও ৬ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হলেও দলভিত্তিক তালিকা করতে দেরি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপ-সচিব সামসুল আলম বলেন, ‘তথ্যে গরমিল থাকায় দলভিত্তিক তালিকা প্রস্তুত করতে ইসির একটু সময় লেগেছে।’

‘নতুন কর্মকর্তা, যান্ত্রিক ত্রুটি ও অদক্ষতার কারণে দলভিত্তিক তালিকা করতে বেশি সময় লেগেছে,’ বলেন সামসুল আলম।

এদিকে ইসির পক্ষ থেকে বিএনপির ৯ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, তাদের ১২ জন মেয়র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।

বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক সৈয়দ ইমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘ফেনীর জেলার পশুরাম ও সদর, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম, চাঁদপুরের ছেংগারচর, মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম, মাদারীপুরের শিবচর, মৌলভীবাজার সদর, ঝিনাইদয়ের মহেশপুর, গোপালগঞ্জ সদর, সিলেটের গোলাপগঞ্জ, টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী, বগুড়ার সারিয়াকান্দীতে মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।

এ ছাড়া টু্ঙ্গীপাড়া ও মাদারীপুরের কালকিনিতে ক্ষমতাসীন দলের হুমকির মুখে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি।

তিনি জানান, মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীরা ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসকের কাছে আপিল করেছেন। আপিল শুনানি শেষে তারা প্রার্থিতা ফিরে না পেলে তারা উচ্চ আদালতে যাবেন।

আগামী ৩০ ডিসেম্বর ২৩৫টি উপজেলা ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে বৈধ প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারবেন। ১৪ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থীর প্রতীক বরাদ্দ দেবে ইসি। যদিও ৯ ডিসেম্বর থেকে সীমিত আকারে প্রচারণা শুরু করেছেন। দ্য রিপোর্ট



মন্তব্য চালু নেই