ভেতরে জঙ্গি আফিফের লাশ, গ্রেনেড-সুইসাইডাল ভেস্ট

জধানীর দক্ষিণখানের আশকোনায় জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের অভিযানের পর আজ রোববার ভবনটিতে ফের প্রবেশ করেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

রোববার সকাল পৌনে ১১টার দিকে তিনতলা ভবনে প্রবেশ করে ২৫ সদস্যর একটি বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল। ঘটনাস্থলে রাখা হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের দুটি গাড়ি। এর আগে সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য ওই ভবন ঘিরে রাখে।

কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) স্পেশাল অ্যাকশন ডিভিশনের ডিসি প্রলয় কুমার জোয়ার্দার জানিয়েছেন, রোববার সকাল থেকে তারা ভবনের ভেতরে সার্চ শুরু করেছেন। ভেতরে তিনটি কক্ষ আছে। একটি কক্ষ টিয়ার শেল গ্যাস দ্বারা পূর্ণ। এটিতে এখনো প্রবেশ করতে পারেননি। ওই রুমে জঙ্গিনেতা তানভীর কাদরীর ছেলে আফিফ ওরফে শহীদ কাদরীর লাশ পড়ে আছে। বাকি দুটি কক্ষে তারা প্রবেশ করতে পেরেছেন।

তিনি বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিস ওই গ্যাসপূর্ণ কক্ষের ভেতরে গিয়ে গ্যাস নিঃসরণ করবে। পরে কক্ষটিতে প্রবেশ করবে বোমা ডিসপোজাল ইউনিট। মোট পাঁচটি গ্রেনেড পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দুটি ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোনো সময় বিস্ফোরণ হতে পারে। এ ছাড়া, দুটি সুইসাইডাল ভেস্ট আছে। বোমা ডিসপোজাল ইউনিটের কাজ শেষে সিআইডি ভবনে প্রবেশ করে তদন্ত করবে।’

প্রলয় কুমার আরো বলেন, ‘আফিফ কাদরী কীভাবে মারা গেছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপেন গোলাগুলি হয়েছে, টিয়ার গ্যাসও নিক্ষেপ করা হয়েছে। তার কাছেও পিস্তল ছিল।’

সিটিটিসির এডিসি ও বোমা ডিসপোজাল ইউনিটের প্রধান ছানোয়ার হোসেন বলেন, ‘লাশের পাশে ও দরজার পাশে সুইসাইডাল ভেস্ট আছে। দরজার পাশের ভেস্টটি জেবুন্নাহার শিলার। তিনি গতকাল আত্মসমর্পণ করেছেন।’

ছানোয়ার হোসেন আরো বলেন, ‘ড্রেসিং টেবিলের ওপরে ও খাটের ওপরে দুটি গ্রেনেড আছে। গ্রেনেডের পিনগুলো খোলা। যেকোনো মুহূর্তে বিস্ফোরণ হতে পারে। রান্নাঘরের তাকের ওপর একটি গ্রেনেড আছে।’

তিনি বলেন, ‘জঙ্গিরা মারা যাওয়ার আগে আমাদের জন্য কোনো ফাঁদ তৈরি করে গেছে কি না, তা এখনো বোঝা যাচ্ছে না।’

পরে দুপুর আড়াইটার দিকে ফায়ার সার্ভিসের উত্তরা ইউনিটের সিনিয়র স্টেশন অফিসার শফিকুল ইসলাম জানান, তারা সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত কাজ করে ওই কক্ষ থেকে গ্যাস নিঃসরণ করেন। স্মোক রিজেকটরের মাধ্যমে জানালায় ভ্যাকুয়েশন তৈরি করে গ্যাস বের করা হয়। এখন বোমা ডিস্পোজাল ইউনিটসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ভেতরে অবস্থান করছে।

তিনি আরো জানান, তাদের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে আছে। এ ছাড়া, পাঁচটি ইউনিট আশপাশে স্ট্যান্ডবাই করে রাখা হয়েছে।

গ্যাস নিঃসরণে বিলম্ব হওয়ার কারণ জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘ভেতরে বদ্ধ রুম ছিল। গ্যাসটা ভারী। তা ছাড়া, ঘরে আসবাবপত্র থাকার কারণে গ্যাস নিঃসরণে বিলম্ব হয়। ভেতরে কাঁদানে গ্যাস ও গ্রেনেডের ধোঁয়া ছিল।’

এদিকে, ফায়ার সার্ভিসের দল ভবন থেকে বের হয়ে গেলে বোমা নিষ্ক্রিয়করণ শুরু হয়। ২টা ৪৮ মিনিটে ও ২টা ৫৪ মিনিটে দুটি বোমা নিষ্ক্রিয় করা হয়।



মন্তব্য চালু নেই