ভাষা শহীদ দিবসে ফাইট ফর চিলড্রেনের শিশুদের নিয়ে নানা কর্মসুচী

হামিদা আক্তার, (নীলফামারী) : ভাষা শহীদ দিবসে ২১ ফ্রেব্রুয়ারী মঙ্গলবার সারাদিন ব্যাপি নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করা সংস্থা ফাইট ফর চিলড্রেন এর আয়োজনে ভাষা দিবসে নানা কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংস্থাটির এক বছর পূর্তি ও ভাষা দিবস উপরক্ষে কর্মসুচীর অংশ হিসেবে দিনের শুরুতে পথ শিশুদের নিয়ে শহীদ মিনারে সকাল ৯ টায় পুষ্পমাল্য অর্পনের মধ্যে দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি বিনম্্র শ্রদ্ধা জানিয়ে কর্মসুচীর সুচনা করা হয়। সকাল ১০ টায় উপজেলার উত্তরতিতপাড়া আলোর দিশারী বিদ্যা নিকেতন মাঠ প্রাঙ্গনে উক্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় অর্ধশতাধিক ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহনে শিশু চিত্রাংকন প্রতিযোগীতা শেষে শিশু অধিকার নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের মাঝে শিশু অধিকার সনদ বইটি তুলে দেওয়া হয়। দিন ব্যাপি এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে পরিচালনায় ছিলেন ফাইট ফর চিলড্রেনের সভাপতি মোতাওক্কিল বিল্লাহ শাহ ও সদস্য সৌম্য শাহ, সম্পদ, সৈকত, পিযুষ ও বারি, মহববত ও সাংবাদিক হামিদা আক্তার। সার্বিক সহযোগীতায় ছিলেন রনি ইসলাম। শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগীতায় ছাত্র-ছাত্রীরা শহীদ মিনার, স্মৃতি সৌধ ও মোমবাতি অংকনসহ বিভিন্ন চিত্র অংকন করে। এদের মধ্যে থেকে সবচেয়ে ভালো চিত্র অংকন করায় উক্ত বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র সবুজ প্রথম স্থান, পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র আল-আমিন দ্বিতীয় স্থান ও তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র শাকিল তৃতীয় স্থান অধিকারী হওয়ায় তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। শেষে শিশু অধিকার নিয়ে আলোচনায় সভায় উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অবসর প্রাপ্ত সৈনিক আহসান হাবিব বুলবুল বলেন, উপজেরা সংলগ্ন এই এলাকাটি একটি শিক্ষার দিক দিয়ে অবহেলিত। তাই এসব অসহায় অবহেলিত শিশুদের নিয়ে বিদ্যালয়টির পথ চলা শুরু হয়। বিদ্রালয়ে প্লে গ্রুপ থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রী প্রায় এক’শ এর কাছাকাছি রয়েছে। আপনারা শুনলে অবাক হবেন এ বিদ্যালয়ে যে সব শিক্ষক পাঠদান দেন তারা সবাই কেউ বাংলা কেউবা ইংরেজীতে অনার্স পড়–য়া। তারা স্ব- ইচ্ছায় বিনা বেতনে নিজেদের অর্থ ব্যয় করে এসব শিশুদের পাঠদান দিয়ে যাচ্ছে। আমরা শিশুদের কাছে যৎকিঞ্চিৎ অর্থ নেই তা দিয়ে বিদ্যালয়ের উন্নয়নে কাজ করি। মোট কথা এ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সকলেই নিজের খেয়ে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে এসব হতদরিদ্র অসহায় শিশুদের মাঝে। এলাকার বিশিষ্ট সমাজ সেবক দুলাল হোসেন প্রধান শিক্ষকের কথাগুলি স্বীকার করে বলেন সত্যিই তারা এ বিদ্যালয় থেকে কোন অর্থ নেন না। তাদের এই মহান উদ্যোগকে এলাকাবাসী স্বাগত জানিয়ে এলাকায় আরো অনেক বিদ্যালয় থাকলেও তারা এ বিদ্যালয়ে ছেলে-মেয়েদের পাঠিয়েছেন। ফাইট ফর চিরড্রেনের সদস্য ও প্রবীন সাংবাদিক মহববত হোসেন এসব শিশুদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরা একদিন অনেক বড় হবে। তখন তোমাদের এসব শিক্ষকদের কথা মনে পড়বে। যারা নিজের খাবার বিলিয়ে দিয়ে তোমাদের মুখে হাসি ফুটানোর জন্য নিরন্তন কাজ করে চলেছেন। তোমরা এই মহান শিক্ষকদের মুখ উজ্জল করতে ভালোভাবে পড়ালেকা চালিয়ে যেতে হবে।



মন্তব্য চালু নেই