ভালো কোলেস্টেরলেও হতে পারে হৃদরোগ

মানবদেহে ভালো এবং মন্দ এই দুই ধরনের কোলেস্টেরল বিদ্যমান, এটি আমরা সকলেই জানি। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ; সুস্থ থাকতে মন্দ কোলেস্টেরল হিসেবে পরিচিত এলডিএলের মাত্রা যতো সম্ভব কম রাখতে হবে। অপরদিকে বাড়াতে হবে এইচডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা।

এইচডিএল কোলেস্টোরল হিসেবে পরিচিত জলপাই এবং মাছের তেল। হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস করে এলডিএল কোলেস্টোরল। কিন্তু সম্প্রতি এমন অনেক হৃদরোগী দেখা গেছে, যাদের দেহে এইচডিএলের মাত্রা অনেক বেশি থাকা সত্ত্বেও হার্ট অ্যাটাকের আক্রান্ত হয়েছে।

এ থেকে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, অনেকের দেহে এইচডিএলের মাত্রা বেশি থাকা উপকারি নয়, বরং অপকারি। মানবদেহে বিরল ধরনের এক জেনেটিক পরিবর্তনের কারণে তাদের শরীরে এইচডিএল ধূমপানের মতোই ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।

জেনেটিক এই পরিবর্তন ‘এসসিএআরবি ১’ নামে পরিচিত। এক হাজার ৭শ’ জনের উপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখা যায়, তাদের শরীরে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি। কিন্তু এর পরেও তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি ৮০ শতাংশ বেশি।

যকৃতের মাধ্যমে আমাদের শরীরে বেশিরভাগ কোলেস্টোরল বিশেষ করে স্যাচুরেটেড ফ্যাট রক্তে মিশে যায়। অপরদিকে এলডিএল যকৃত থেকে কোষে কোলেস্টোরলকে বয়ে নিয়ে যায়। এর ফলে কোষের আবরণ শক্তিশালী এবং হরমোন তৈরি হবে। এইচডিএল ঠিক এর বিপরীত কাজ করে। যেমন- অতিরিক্ত কোলেস্টেরল কোষ থেকে যকৃতে ফিরিয়ে নেয়। এর ফলে মানবদেহ থেকে পুনঃপ্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে বিষাক্ত দ্রব্য বেরিয়ে আসছে।

বিজ্ঞানীরা গবেষণায় দেখেছেন, অনেক ক্ষেত্রে এইচডিএলের এই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ হয়।

ইউনিভার্সিটি অব ক্যামব্রিজের গবেষক এবং চিকিৎসক অ্যাডাম বাটারওরথ বলেন, ‘এই গবেষণা প্রতিবেদন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমরা সব সময় জেনে এসেছি ভালো কোলেস্টেরলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। এই গবেষণায় দেখা গেছে, অনেকের ক্ষেত্রেই ভালো কোলেস্টেরলের কারণেই হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ছে। সুতরাং এখন আর আমরা এটি বলতে পারি না যে, ভালো কোলেস্টেরলেই রোগীর হৃদরোগের ঝুঁকি কমবে।’

এক্ষেত্রে তিনি এইচডিএল-সি ঔষধ তৈরি এবং উন্নয়নের বিষয়ে জোর দেন। কারণ এই ঔষধে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। এক্ষেত্রে গবেষণায় চিকিৎসকদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে, যেনো নিয়মিত রোগীদের রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে এইচডিএল এবং এলডিএলের মাত্রা পরীক্ষা করে দেখা দেয়।



মন্তব্য চালু নেই