ভারত আটকে রাখলেই ভালো: তিস্তার পানি চায় না আ.লীগ!

এক সময়ের প্রমত্তা তিস্তা যখন মরা খালে পরিণত হয়ে গোটা উত্তরাঞ্চল মরুভূমিতে রূপান্তরের পথে চলেছে ঠিক তখনই ‘তিস্তায় পানি চাই না, পানি চুক্তির দরকার নেই’ এমন দাবি তুললেন আওয়ামী লীগ নেতারা! শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় হাতীবান্ধা উপজেলা আওয়ামী লীগ এই দাবিতে পারুলিয়ার চরে প্রখর রোদে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করে।

তিস্তার পানি চুক্তি নিয়ে সারাদেশ আন্দোলিত এমন সময় আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন নিয়ে বিভিন্ন মহলে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।  হাতীবান্ধা উপজেলা সিপিবির সভাপতি আবদুর রউফ বলেন, ‘হয়তো বা তারা কোনো মহলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছেন।‘

তিস্তা পূর্ব তীর রক্ষা কমিটির ব্যানারে সাংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সারওয়ার হায়াত খান বলেন, ‘এবার তিস্তার পানি না আসায় লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার ২৬টি ইউনিয়নের ১ লাখ ২০ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টাসহ বিভিন্ন চাষাবাদ হয়েছে। এছাড়া ৬০ হাজার পরিবার বাড়ি ফিরে পেয়েছে। যে কারণে তিস্তার পানি না আসাই উত্তম।‘

তিনি যুক্তি তুলে ধরে বলেন, ‘সৌদি আরবে নদী নেই, সেখানে জীববৈচিত্র্যের ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়ে না। আমাদের এ অঞ্চলে নদী না থাকলে এলাকাজুড়ে চাষাবাদ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া যাবে। তাছাড়াও বন্যা ও নদী ভাঙনের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকেও এ অঞ্চলের মানুষ রক্ষা পাবে।‘

অধ্যক্ষ সারওয়ার হায়াত তিস্তার পানি চুক্তির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘তিস্তার পানি চাই না, পানি চুক্তির দরকার নাই। ভারতের গজালডোবা ব্যারেজে সব পানি আটকে রেখে তিস্তা নদী আবাদযোগ্য করা হোক।‘

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পদক নূর মোহাম্মদ, পাটিকাপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহাদাত হোসেন, সম্পাদক আবদুল লতিফ, ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্পাদক আসাদুজ্জামান লাভলু, যুবলীগ নেতা আমিনুর রহমান।

উল্লেখ্য, তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার সকালে তিস্তা ব্যারেজ অভিমুখে লংমার্চ শুরু করে বিএনপি। লংমার্চটি গাইবান্ধা পৌঁছার আগেই হঠাৎ করে তিস্তায় পানির ঢল নামে, চালু হয় সেচ প্রকল্পগুলো। এ নিয়ে তখন বিএনপি ও সরকার তাদের নিজ নিজ কৃতিত্ব দাবি করে।

সরকার বলে, তাদের অব্যাহত কূটনৈতিক তৎপরতার কারণেই ভারত পানি ছেড়েছে। আর বিএনপি বলে, এটা তাদের লংমার্চের প্রাথমিক সাফল্য।

এর কয়েকদিন আগে তিস্তা ব্যারেজ অভিমুখে লংমার্চ করে বাম দলগুলো। তারা বলে, ভারত এর মাধ্যমে প্রতারণা করছে। তারা তাদের আন্দোলন দমাতেই এমন কৌশল নিয়েছে বলে বামদের ধারণা।

অবশ্য পরদিন ২৩ এপ্রিল থেকেই তিস্তায় পানি কমতে শুরু করে। সেই মৃতপ্রায় তিস্তা এখন আবার আগের অবস্থায় ফিরে গেছে।



মন্তব্য চালু নেই