ভারতের সংসদে শত্রু সম্পত্তি বিল পাশ

অনেক দিন ধরে আটকে থাকার পর অবশেষে ভারতের লোকসভায় পাশ হল শত্রু সম্পত্তি বিল ৷ দেশভাগের সময় যারা ভারত ছেড়ে পাকিস্তান ও চীনে চলে গিয়েছিলেন, তাদের উত্তরসূরীরা আর এদেশে তাদের পূর্বপুরুষদের ফেলে যাওয়া সম্পত্তির উপর দাবি রাখতে পারবেন না ৷ ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের পরে পাকিস্তান ও চীনে যাওয়া ভারতীয়দের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার ভাবনা শুরু হয় বহু বছর আগেই।

১৯৬৮ সালেই পাশ হয় ‘শত্রু সম্পত্তি আইন’। ওই সম্পত্তি দেখাশোনার ভার যায় কেন্দ্রের ‘কাস্টোডিয়ান অব এনিমি প্রপার্টিজ’-এর হাতে। কিন্তু ওই আইনের কিছু দিক নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদালতের দ্বারস্থ হন রাজা মেহমুদাবাদের বংশধররা। উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে রাজা মেহমুদাবাদের বেশ কিছু সম্পত্তি রয়েছে। ফলে শেষ পর্যন্ত আইন সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

প্রসঙ্গত, বিলটি লোকসভায় আগেই পাশ হয়েছিল। কিন্তু, রাজ্যসভার স্থায়ী কমিটি বিলে কিছু সংশোধন করে পাশ করে। ফলে, তা ফের লোকসভায় আসে। এদিন লোকসভায় ধ্বনিভোটের মাধ্যমে সংশোধিত বিলটি পাশ হয়। বিল অনুযায়ী, কোনও সম্পত্তি যদি শত্রুর তরফে, শত্রু-ব্যক্তিবিশেষ বা শত্রু-সংস্থার দ্বারা দখল বা পরিচালিত হয়, তাই ‘শত্রু-সম্পত্তি’ হিসেবে গণ্য হবে। এবার থেকে এই সব সম্পত্তির মালিকানা চলে আসবে কেন্দ্রের হাতে। এর জন্য ভারতে ‘শত্রু-সম্পত্তির জিম্মাদার’ হিসেবে একটি আলাদা দফতর গঠন করা হয়েছে। তারাই শত্রু-সম্পত্তি সামলাবে।

বংশধরদের সম্পত্তির অধিকার না দেওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল বলে সংসদে যুক্তি দেন বেশ কিছু সাংসদ। সেই যুক্তি উড়িয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ বলেন, ‘‘পাকিস্তান সে দেশ ছেড়ে স্থায়ী ভাবে ভারতে চলে আসা মানুষের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে। ন্যায়বিচারের খাতিরেই ভারতে এই পদক্ষেপ হওয়া উচিত।’’ এই আইন কেবলমাত্র শত্রু-উত্তরাধিকারদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। এধরনের শত্রু-সম্পত্তিতে কোনও ভাড়াটে থাকলে, তাদের ওপর এই আইন প্রযোজ্য হবে না। সেক্ষেত্রে ভাড়াটে আইন দিয়েই তা বিচার হবে।



মন্তব্য চালু নেই