ভারতীয়দের ঘৃণা করতেন চার্চিল

চল্লিশের দশকে উইনস্টন চার্চিল যদি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী না হতেন তাহলে হয়তো দেশটির ইতিহাস অন্যরকমই হতো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তার শক্তিশালী নেতৃত্বের বদৌলতে জার্মানির আগ্রাসন থেকে রক্ষা পেয়েছিল ব্রিটেন। ব্রিটিশ ভারতে সেনা কর্মকর্তা হিসেবে পেশাগত জীবন শুরু করেছিলেন চার্চিল। রাজনীতিবিদ ছাড়াও চার্চিলের পরিচয় তিনি একজন ইতিহাসবিদ এবং নোবেলবিজয়ী লেখক। এতো কিছুর পরও চার্চিলও ছিলেন একজন প্রচন্ড সাম্প্রদায়িক মানুষ। বিশ্বযুদ্ধে জয়ের ধাক্কায় এটি চাপা পড়ে গেলেও সম্প্রতি ব্রিটিশ দৈনিক দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট চার্চিলের ওই সব সাম্প্রদায়িক চিন্তাভাবনার বিষয়গুলো নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ভারতীয়দের প্রচন্ড ঘৃনা্ করতেনস চার্চিল । তাদের সম্পর্কে তার মন্তব্য ছিলো ‘ এরা জংলি এলাকার জান্তব মানুষ।’

১৯৩০ সালে মহাত্মা গান্ধী যখন ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে অহিংস আন্দোলন করছিলেন, চার্চিল তখন ভারতে সেনাবাহিনীর তরুণ কর্মকর্তা। গান্ধী সম্পর্কে তার মন্তব্য, ‘দিল্লি গেটে হাত-পা চিৎ করে শুইয়ে তার (গান্ধী) ওপর দিয়ে বিশাল হাতির ওপর বসে থাকা নতুন ভাইসরয়ের যাওয়া উচিৎ।’

তিনি বলেন, ‘ আমি ভারতীয়দের ঘৃণা করি’। গান্ধীর অহিংস আন্দোলন জোরদার হতে শুরু করলে চার্চিল বলেন, ‘ এরা (ভারতীয়রা) জংলি এলাকার জান্তব মানুষ।’

১৭৭৬ ও ১৮৮৭ সালে দখলদার ঔপনিবেশিকরা আমেরিকার রেড ইন্ডিয়ান ও অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের ওপর যে নৃশংস অত্যাচার চালিয়েছিল তার সমর্থন করতে চার্চিল। ১৯৩৭ সালে ফিলিস্তিন রাজকীয় কমিশনকে চার্চিল বলেছিলেন, ‘আমি স্বীকার করি না… যে আমেরিকার রেড ইন্ডিয়ান অথবা অস্ট্রেলিয়ার কালো লোকজনের বিষয়ে কোন ভুল করা হয়েছে… বিষয়টা হচ্ছে একটি শক্তিশালী জাতি, একটি উন্নত জাতি… এসেছে এবং তার জায়গা দখল করেছে।’

১৯৪৩ সালে বাংলায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের সময় খাদ্য সহায়তা দিতে রাজী ছিলেন না চার্চিল। ওই সময় ভারতে নিযুক্ত ব্রিটিশ কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রী চার্চিলের কাছে খাদ্য সহায়তা চেয়ে পাঠান। জবাবে তিনি সোজাসাপ্টা ত্রান দিতে অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, এটা (বাঙ্গালিদের) ভুল। কারণ তারা ‘ইদুরের মতো সন্তান জম্ম উৎপাদন’ করেছে। তিনি বলেন, প্লেগ ভালোভাবে জনসংখ্যা কমাচ্ছে।

যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুদের ওপর বিষাক্ত গ্যাস প্রয়োগেরও সমর্থন করতেন চার্চিল। ১৯৩৭ সালে হাউস অব কমন্সের শরৎকালীন অধিবেষনে চার্চিল বলেন, ‘অসভ্য জাতিদের বিরুদ্ধে বিষাক্ত গ্যাসের ব্যবহারের বিষয়টি আমি প্রচন্ডভাবে সমর্থন করি।



মন্তব্য চালু নেই