ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি : জড়িতদের শাস্তির দাবিতে উত্তাল চবি

সাফাত জামিল শুভ, চবি প্রতিনিধি : চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ভর্তি পরীক্ষায় অভিনব জালিয়াতির মাধ্যমে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়ের সূত্রপাত ঘটল। ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের অধিভুক্ত ‘সি৩’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অত্যন্ত সুকৌশলে জালিয়াতির উঠেছে। ইতোমধ্যে ন্যাক্কারজনক এ ঘটনাটি দেশজুড়ে সচেতন শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলে ব্যাপক সমালোনার জন্ম দিয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, গত সোমবার বিকেলে বাণিজ্য অনুষদের অধীনে সি-২ ও সি-৩ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচিত সেই প্রশ্নপত্রে কৌশলে সঠিক উত্তরগুলো ঝাপসা করে দেওয়া হয়। এমন সূক্ষভাবে কাজটি করা হয় যাতে, চক্রে জড়িত শিক্ষার্থী ছাড়া অন্য কেউ বিষয়টি আন্দাজ করতে না পারে।প্রশ্নপত্রের সেট-২ এর প্রথম প্রশ্নটির উত্তর হবে অপশন ‘ডি’। লক্ষ্য করলে দেখা যায় অত্যন্ত সুকৌশলে এই ‘ডি’ লেখাটি ঝাপসা করে দেয়া হয়েছে। এভাবে একশটি প্রশ্নেরই উত্তরের অপশনই ঝাপসা করে দেয়া হয়েছে, যা মনযোগ দিয়ে লক্ষ্য করলেই চোখে পড়বে। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রে বিষয়টি অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা বুঝতে না পারলেও পরে বাইরে বেরিয়ে উত্তর মেলানোর সময় অসামঞ্জস্য ধরা পরে। পরীক্ষা শেষে তাদের কেউ কেউ এটা নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে অভিযোগ জানায়। মঙ্গলবার দিনভর এ নিয়ে চলে আলোচনা-সমালোচনা। সন্ধ্যায় এই ইউনিটের ফল প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর দেখা যায় যিনি প্রথম হয়েছেন তিনি ১২০ নম্বরের মধ্যে ১১৮.৯৯ পেয়েছেন।অর্থাৎ ভর্তি পরীক্ষায় প্রায় ১০০ তে ১০০ পেয়েছেন! এছাড়া মেধা তালিকায় থাকা প্রথম ১৫জনই ১০০ এর উপর নম্বর পেয়েছেন যা অনেকটা অস্বাভাবিক। ফলে প্রশ্ন জালিয়াতির অভিযোগের বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়।

ws

ধারণা করা হচ্ছে, শিক্ষক-কর্মকর্তা পর্যায়ের কোন শক্তিশালী সিন্ডিকেট ন্যাক্কারজনক এ জালিয়াতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত। যদিও আলোচনা-সমালোচনার এক পর্যায়ে উক্ত ইউনিটের মৌখিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে বাণিজ্য অনুষদের ডিন জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে মৌখিক পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়টি প্রকাশ করা হয়। আগামী ৭ নভেম্বর এই সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

এরই মধ্যে বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে পুনরায় ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ এবং সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে প্রশ্ন জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আলোচিত এ পরীক্ষা নিয়ে নিন্দার ঝড় বইছে।



মন্তব্য চালু নেই