ব্যান্ডদল যোদ্ধার পথচলা

মনের প্রফুল্লতাকে ধরে রাখতে সঙ্গীতের কোন বিকল্প নেই। বর্তমান সময়ে তরুণ সমাজের কাছে সঙ্গীতের সবচেয়ে প্রিয় মাধ্যম ব্যান্ডদল। আর বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ব্যান্ডদল থাকবে না এমনটা হয় না। তেমনি সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের(গণবি) একটি জনপ্রিয় ব্যান্ড দলের নাম যোদ্ধা। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষ্ঠানেই জনপ্রিয় এ ব্যান্ড দলটির পারফর্ম যেন অনেকটা অলিখিত নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মিউজিক ভালবাসেন এ রকম ৫ জন তরুণ শিক্ষার্থী মিলে গড়ে তোলেন ব্যান্ডদল ‘যোদ্ধা’। ভোকাল-প্রান্ত, লীডগিটার ও সাইড ভোকাল-ইকরাম, গিটার-সাজিদ, বেস গিটার-তাজবী এবং ড্রামস-রিয়াদ। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পূর্বেই শুরু হয় তাদের এক সঙ্গে পথচলা। একদিন হঠাৎ গিটার কিনেন সাজিদ। শুরু হয় গান তোলা। কখনো বাসার ছাদে আবার কখনো সাভারের স্মৃতিসৌধে, নয়তো রাস্তার পাশে চলত তাদের আড্ডা আর গান।

তারপর আসলো ইকরামের গিটার। জোরালোভাবে শুরু হল স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা।

সবার ইচ্ছা ছিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বে। কিন্তু ভর্তিযুদ্ধে হেরে গেলো প্রান্ত, ইকরাম ও তাজবী নামক যোদ্ধারা। তারপর প্রান্ত এলো গণবির ফার্মেসীতে, ইকরাম ইউ.আই.ইউতে ও তাজবী মিরপুর বাংলা কলেজে। সুযোগটা হাতছাড়া হয়নি সাজিদের। সপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হল সাজিদ। শুরু হল বিশ্ববিদ্যালয় জীবন, কিন্তু থেমে থাকল না তাদের প্রচেষ্টা।

‘যোদ্ধা’ নাম নিয়ে নতুন উদ্যমে এবার পথে নামলেন যোদ্ধারা। এবার কখনও জাহাঙ্গীরনগর আবার কখনও গণবি ক্যাম্পাসে বসে আবারো শুরু করলেন তাদের ব্যান্ড চর্চা। মাঝে মাঝে যাওয়া শুরু হল ঢাকার ভাল প্র্যাক্টিস প্যাডে।

একদিন ডাক এলো যোদ্ধার। গণবির ফার্মেসী বিভাগের নবীন বরণ অনুষ্ঠানে পারফর্ম করে ব্যাপক সাড়া ফেলেন তারা। তারপর থেকে প্রতিটি অনুষ্ঠানে যোদ্ধার উপস্থিতি যেন চাই-ই চাই। এছাড়াও আন্ডারগ্রাউন্ড ব্যান্ডদল হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন তারা।

বর্তমানে নিজেদের গান নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। চলছে গানের কথা সংগ্রহের কাজ। ইতিমধ্যে কয়েকটি গানের কাজ সম্পন্ন করেছেন তারা। যোদ্ধা সাধারনত রক, অল্টারনেটিভ রক, মেটাল এবং ফোক গানগুলো করে থাকে।

বাংলাদেশের মিউজিককে নতুনধারার মানসম্মত মিউজিক উপহার দেবার প্রবল ইচ্ছা যোদ্ধার গিটারিস্ট সাজিদের। সে লক্ষেই কাজ করে যাচ্ছেন। সাজিদ ভবিষ্যতে দেশীয় মিউজিক নিয়ে কাজ করার প্রবল আগ্রহ প্রকাশ করেন।

‘কাজ করতে করতে মাঝে মঝে মনে হত, না কিছু হবে না। কিন্তু আমাদের ব্যান্ড দলের সবাই খুব আন্তরিক। আমরা একে অন্যকে উৎসাহ দিতাম। ভুল শুধরে দিতাম। আর এভাবেই আমরা আজ আগামীকে জয় করার স্বপ্ন দেখি।’ নিজের স্বপ্নের কথাগুলো এভাবেই বলছিলেন ব্যান্ডদলের লীড গিটারিস্ট ও সাইড ভোকাল-ইকরাম।

যোদ্ধার ভোকাল গণবির ফার্মেসী বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী প্রান্ত জানান-‘আমাদের ড্রামার নতুন। ও ভাল কাজ করে। তবে আমরা মিস করি আমাদের সাবেক ড্রামার গণবির শিক্ষার্থী পুষ্পেন কে। ও ভাল কাজ করত। ওর জন্য যোদ্ধা খোলা থাকবে সবসময়।’

যোদ্ধার বেস গিটারিস্ট তাজবী বলেন, ‘গান আমরা পান করি না, খাই। গান নিয়ে অনেক স্বপ্ন আমাদের। একে একে সব সাধ পূরণ করব। এখন শুধু প্র্যাক্টিস আর নিজেদের তৈরী করার পালা।’

এভাবেই বিশাল স্বপ্ন নিয়ে একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছে যোদ্ধা। আর বন্ধুর পথের এ যাত্রায় যোদ্ধাদের করতে হচ্ছে মরন পণ লড়াই। তবে তাদের পাশে আছে গণবির শিক্ষার্থীরা। সকলের প্রত্যাশা এগিয়ে যাক যোদ্ধা।



মন্তব্য চালু নেই