ব্যাংক লুটের দায় কার? অর্থমন্ত্রীকে রওশন

সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ বলেছেন, আমরা এমন একটি সমাজ ব্যবস্থা চাই যেখানে সব ধর্ম ও বর্ণের লোক সমানভাবে বসবাসের সুযোগ পাবেন।এটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারের।

বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে রওশন এরশাদ ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের বাজেটকে সর্বকালের সর্ববৃহৎ বাজেট উল্লেখ করে বলেন, বড় বাজেট না হলে মানুষের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটবে কী করে? গত বছরের বাজেটও ছিল বড়। রওশন এরশাদ যখন বক্তৃতা করছিলেন তখন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ পাশে বসে গভীর মনযোগের সঙ্গে তা শুনছিলেন।

রওশন এসময় বাংলাদেশের রাজনীতির সমালোচনা করে বলেন, বিদ্যমান রাজনীতি থেকে আমাদেরকে বের হয়ে আসতে হবে।আমরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গেলে অনেক সময় আমরা আমাদের প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলি না। তাদেরকে এড়িয়ে চলি। এটা তো খারাপ দৃষ্টান্ত । এভাবে চলতে পারে না। এই রাজনীতি থেকে আমাদেরকে বের হয়ে আসতে হবে।

শেয়ার বাজার ও ব্যাংকব্যবস্থায় লুন্ঠনের তীব্র সমালোচনা করেন বিরোধীয়দলীয় এই নেতা। তিনি বলেন, কয়েক ধাপে আমাদের সরকারি ব্যাংকব্যবস্থা থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট হয়ে গেছে। সেগুলো ফিরে পাবার কোনো আশা নেই। আমাদের ব্যাংকব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে।

জাতীয় পার্টির কোচেয়ারম্যান রওশন বলেন, এগুলো আমাদের জনগণের টাকা, লুট হয়ে যাওয়া এই টাকা পুনরুদ্ধার করতে না পারলে আমাদের ব্যাংক ব্যবস্থার ওপর মানুষের আস্থা হারিয়ে যাবে। অর্থমন্ত্রীর পূর্ববর্তী বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, অর্থমন্ত্রী নিজেই বলেছেন, ব্যাংকব্যবস্থা থেকে পুকুর চুরি নয়, ‘সাগর চুরি’ হয়ে গেছে। রওশন এরশাদ বলেন, অর্থমন্ত্রীর কাছে আমার প্রশ্ন হচ্ছে এর দায় কার? রওশন এরশাদ শিক্ষাখাতে আরো বরাদ্দ দেয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, বরাদ্দ বাড়ালেই চলবে না, শিক্ষার মান বাড়াতে হবে।শিক্ষার গুণগত মান বাড়ানোর ওপর বিশেষ নজর দিতে হবে।দেশের স্বাস্থ্য খাতের অব্যবস্থা নিয়েও কথা বলেন।

সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, আজ আমাদের শিক্ষার্থীরা মাদকের দিকে ঝুঁকে পড়ছে।সর্বত্রই মাদকের ছোঁড়াছুড়ি। অবুঝ শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে হবে। মাদকের হাত থেকে আমাদের ছেলে মেয়েদের রক্ষা করতে না পারলে সব কিছুই শেষ হয়ে যাবে। এ ব্যাপারে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি আপনার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে এ ব্যাপারে দৃঢ় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য বলেন। তারা যেন এ ব্যাপারে সক্রিয় হন। দেশের কর ব্যবস্থার সমালোচনা করে বলেন, আমাদের দেশে মাত্র ১২ লাখ লোক কর দেন। অথচ এদেশে এক কোটি মানুষের কর দেয়ার ক্ষমতা রয়েছে। অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, এদিকে নজর দেন না কেন? অথচ আপনি কৃষকদের ওপর কর দেয়ার কথা বলছেন। তারা আধপেটা খেয়ে আমাদের কৃষিসম্পদকে বাঁচিয়ে রেখেছে। তাছাড়া কৃষক তো পরোক্ষভাবে কর দিচ্ছে। তারাও জিনিসপত্র কিনছে, সেখানে তারা পরোক্ষভাবে কর দিচ্ছে। রওশন যখন বক্তৃতা করছিলেন তখন জাতীয় পার্টির সদস্যরা বারবার টেবিল চাপড়ে তাকে উৎসাহ দিচ্ছিলেন।



মন্তব্য চালু নেই