বোরকা নিষিদ্ধ করলো মরক্কো

মরক্কোতে বোরকা তৈরি, আমদানি ও বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সোমবার এ সংক্রান্ত সরকারি এক চিঠিতে ব্যবসায়ীদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বোরকার মজুদ শেষ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তবে এখনই দেশটিতে বোরকা পরিধান নিষিদ্ধ করা হবে কিনা, তা জানা যায়নি। মঙ্গলবার মরক্কোর স্থানীয় সংবাদপত্রগুলোর বরাত দিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে তথ্য জানায়।

খবরে বলা হয়, এ বিষয়ে মরক্কো সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনও ঘোষণা আসেনি। তবে নাম প্রকাশ না করে কয়েকজন কর্মকর্তা বোরকার দোকানগুলোকে জানিয়েছে, ‘নিরাপত্তা বিবেচনায়’ এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মরক্কোর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ একজন কর্মকর্তা দেশটির সংবাদমাধ্যম ‘লে৩৬০’কে এ খবর নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, এই পোশাকটি ব্যবহার করে চুরি-ডাকাতি করা হয়ে থাকে বলেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মরক্কোতে যে ধরনের বোরকা প্রচলিত তা মুখমণ্ডলসহ গোটা শরীরকে আবৃত করে রাখে। তবে এর ব্যবহার সুবিস্তৃত নয়। দেশটির নারীদের মধ্যে বরং বেশি জনপ্রিয় হিজাব। এটি নারীর মুখমণ্ডলকে ঢেকে রাখে না। সালাফি গোত্রীয় এবং মরক্কোর উত্তরাঞ্চলের রক্ষণশীল নারীরা আবার বেশি পরিধান করেন নেকাব, যা চোখ ছাড়া গোটা মুখমণ্ডলকে আবৃত রাখে।

উত্তর আফ্রিকার দেশ মরক্কোর বর্তমান রাজা ষষ্ঠ মোহাম্মদ ইসলামের উদার সংস্করণকে সমর্থন করে থাকেন। তবে বোরকা তৈরি ও বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞার এই সিদ্ধান্ত দুই ধরনের জনমত তৈরি করেছে। দেশটির একজন ধর্মীয় নেতা হাম্মাদ কাব্বাজ। ‘চরমপন্থা’র সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে গত বছরের অক্টোবরের সংসদ নির্বাচনে দাঁড়াতে দেওয়া হয়নি। তিনি বোরকা নিয়ে গৃহীত এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছেন। একে ‘অগ্রহণযোগ্য’ আখ্যা দিয়ে ‘বাকস্বাধীনতা ও মানবাধিকারে মরক্কো’র অবস্থানকে ঠাট্টা করে বলেন, এখানে ‘সমুদ্র সৈকতে পশ্চিমা ধাঁচের সুইমস্যুট পরাকে অলঙ্ঘনীয় অধিকার বিবেচনা’ করা হয়।

এদিকে নর্দার্ন মরক্কান ন্যাশনাল অবজারভেটরি ফর হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট জানিয়েছে, তারা এই পদক্ষেপকে ‘স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত’ হিসেবে বিবেচনা করছে। এটা ‘নারীর স্বাধীনতার লঙ্ঘন’ এবং ‘নারীর পরিচয় বা ধর্মীয়, রাজনৈতিক বা সামাজিক বিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটাতে পরিধেয় বাছাইয়ের অধিকারে’র লঙ্ঘন।

তবে দেশটির সাবেক পরিবার ও সমাজ উন্নয়নমন্ত্রী নোউঝা স্কালি বোরকা তৈরি ও বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। ‘ধর্মীয় উগ্রবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে’ একে ‘একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ বলে অভিহিত করেন তিনি।



মন্তব্য চালু নেই