বৈশ্বিক সন্ত্রাস মোকাবেলায় পরামর্শ চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

বৈশ্বিক সন্ত্রাস ও চরমপন্থা মোকাবেলায় বাংলাদেশের কাছে পরামর্শ চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সন্ত্রাস মোকাবেলায় বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশকে উদাহরণ হিসেবে গ্রহণ করতে পারে বলেও মনে করে দেশটি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতকালে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের রাজনৈতিক বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি ওয়েন্ডি শারম্যান এবং দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল এ বিষয়ে কথা বলেন।

বৃহস্পতিবার রাতে গণভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়, পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক, প্রধানমন্ত্রী কার্যলয় সচিব সুরাইয়া বেগম, বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া স্ট্রেপহেন্স ব্লুম বার্নিকাট উপস্থিত ছিলেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব একেএম শামীম চৌধুরী সাংবাদিকদের বৈঠকের বিষয়ে অবহিত করেন।

শামীম চৌধুরী বলেন, ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমনে বাংলাদেশের সফলতার উচ্চসিত প্রশংসা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেছে দেশটি।’

কোন দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস করতে বাংলাদেশের মাটিকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। বাংলাদেশ এ বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সন্ত্রাসীকে সন্ত্রাসী হিসেবেই বিবেচনা করে। সন্ত্রাসীদের কোন সীমানা ও ধর্ম নেই।’

বৈশ্বিক সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে অবৈধ অস্ত্র পাচার বন্ধের ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৩ সালের রানা প্লাজা ধ্বসের পর থেকে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের উন্নয়নের প্রশংসা করেন ওয়েন্ডি শারম্যান।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর পরিপ্রেক্ষিতে তৈরি পোশাকের দাম বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারিকে সুপারিশ করেন।

সম্প্রতি নেপালের ধ্বংসাত্মক ভুমিকম্পের কথা উল্লেখ করে শারম্যান দুর্যোগ মোকাবেলায়, বিশেষ করে ভুমিকম্প মোকাবেলায় আঞ্চলিক প্রস্তুতির ওপর জোর দেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী কাঠমান্ডু বিমান বন্দরের সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে যুক্তরাষ্টের এই কর্মকর্তাকে জানান, আর্ন্তজাতিক সম্প্রদায় নেপালে সড়ক পথে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছাতে বাংলাদেশের বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারে। বিশেষ করে সৈয়দপুর বিমানবন্দর ও লালমনিরহাট এয়ারস্ট্রিপ।

মিলোনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল অর্জনে বাংলাদেশের সফলতার ভূয়সী প্রশংসা করেন শারম্যান। সম্প্রতি তিন সিটি নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ প্রসঙ্গে শারম্যান বলেন, ‘নির্বাচনে কিছু অনিয়ম যুক্তরাষ্ট্রেও হয়ে থাকে। কিন্তু সরকার সব সময় চেষ্টা করে পরবর্তী সময়ে আরও ভালোভাবে নির্বাচন করার চেষ্টা করে।’

বাংলাদেশ নির্বাচন পদ্ধতিতে আরও উন্নত করবে বলে আশা করেন ওয়েন্ড শারম্যান। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৭৫ এর পর সামরিক শাসকরা দেশের নির্বাচন পদ্ধতিকে ম্যানুপুলেট করে। এখন বাংলাদেশ সেই অবস্থা থেকে অনেক খানি বেরিয়ে এসেছে।’

নির্বাচনে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা খুব ভালো নির্বাচনে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।’

দ্রুত ভোটগ্রহণ ও স্বচ্ছ গণনায় নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের চালুর ওপর গুরুত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী। ইভিএম চালুর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর এ উপলব্ধির প্রশংসা করে শারম্যান আশা করেন বাংলাদেশে একদিন ইভিএম চালু হবে। নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিএনপি নির্বাচন বর্জন করেছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় বিএনপির নির্বাচন বর্জনের ঘটনাকে দুর্ভাগ্যজনক বলে উল্লেখ করেন মার্কিন এ আন্ডার সেক্রেটারি।



মন্তব্য চালু নেই