বেশি দুরে নয়তো : আজিজুর রহমান আজিজের পপ-কবিতা (পপুলার কালচার)

কবি ও উপন্যাসিক আজিজুর রহমান আজিজ প্রায় ১৮০০ কবিতা লিখেছেন। পেশা জীবনে তিনি বাংলাদেশ সরকারের সচিব, প্রধান তথ্য কমিশনার, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নর বোর্ডের গভর্নর এবং জাতীয় জাদুঘরের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন এবং বর্তমানে আম্বালা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি কবি খ্যাতিতেই বেশি পরিচিত, বিশেষ করে তিনি তার প্রজম্ন এবং বন্ধু, অণুসারী ও পরিচিত সম্প্রদায়ের মাঝে “এই শহরের জীবন্ত কবি” (Living Poet in the City) নামেই পরিচিত। আজিজুর রহমান আজিজ একজন বাংলাদেশী কবি, সাহিত্যিক, উপন্যাসিক, সুরকার, এবং গীতিকার। তার লিখা উপন্যাসের সংখ্যা ৩০টি, গানের সংখ্যা প্রায় ১০০০টি, এছাড়া তিনি অনেক গল্প, শিশুতোষ, টিভি সিরিয়াল, নাটক লিখেছেন এবং তার উপন্যাস অবলম্বনে বাংলা চলচ্চিত্র নির্মান হয়েছে। তিনি ১৯৮০ সাল থেকে লেখালেখী করে আসছেন। তার প্রকাশিত গল্প, কবিতা ও উপন্যাস, এবং গান পাঠক সমাজে অনেক জনপ্রিয়। তার লেখালেখির বিষয় হচ্ছে গ্রামীণ ও শহুরে জীবন, নারী, মুক্তিযুদ্ধ, শাহবাগ আন্দোলন, প্রেম-ভালবাসা, ইতিহাস, এবং প্রজম্নের পদাবলী। কবি আজিজুর রহমান আজিজের অতি মনোরম একটি কবিতা “বেশি দুরে নয়তো। কবিতাটি আবৃত্তি করেছেন হাতাশি। এই কবিতা “বেশী দূরে নয়তো”য় দেখানো হয়েছে একজন ত্বত্তগুরু তার ফেলোসঙ্গীকে নিয়ে তার শৈশবের গ্রামে এসেছে এবং গ্রামে ফিরবার সময় মেঠোপথে হাটতে হাটতে গুরুজী তার ফেলোকে তার গ্রাম, গ্রামের প্রকৃতি এবং নিজের জীবনের গল্প বলছে।


বেশি দুরে নয়তো

আজিজুর রহমান আজিজ

—— ( এক)

নামো নামো গাড়ি থেকে নামো
এসে গেছি এইতো,

অইতো
অইতো আর কত দুরে ?

আরে অইতো দেখা যায়
একটু চল পায়ে পায়
ঐদেখা যায় কয়েক পা গেলেই
সেতুর দেখা পাবোই
তার পর সেতুটার হাতল ধরে
ছোট খালটি পার হলেই
একটু পায়ে চলার পথ দেখা যাবে

ডানে বামে হিজল তমাল শিমুল বন
বাঁশ ঝাড় বকুল আম কাঠাল বাগান হাসে

বন মোরগও দেখতে পাবে
ঘুঘুর ডাক আসবে বাঁশ বাগান থেকে
কি? কথা বলছনা কেনো?
তারপর কাঠবিড়ালী কাটতে পারে ভেংচী
ভয় পেওনা তো

আমিতো এই গায়েরই ছেলে
কতবার ছুটেছি ওদের পিছু পিছু
ধরতে জাল ফেলে, পারিনিতো
এক লাফে উঠে গেছে গাছের মগ ডালে

বানর দেখেছ ?

নাতো,তবে ছবিতে দেখেছি
বড্ড দুষ্ট অস্থির চঞ্চল

ঠিক ধরেছো।

বানরও হারমানে কাঠ বিড়ালিদের কাছে

এবার তোমাকে বানর দেখাবো
গহীন আম জামকাঠাল বাগানের ভেতর
সাবধান তুমি যেনো বানরের দিকে ঢিল ছুড়না
যদি ছোড় ওরা দলবেধে এসে
ছিড়ে নিবে তোমার মাথার চুল
কানের দুল
রঙ্গাগাল তোমার করে দেবে আরো লাল
আঁচড় মেরে বইয়ে দিবে রক্তগঙ্গা
কি ভয় পেয়েছো বুঝি ?

না না ভয়ের কিছু নেই

এইতো দেখ এনেছি সাথে করে
বাদাম ভাজা চানাচুর কলা
বানর দেখেতে পেলেই ওসব
ছিটিয়ে দেবো ওদের
ওরা তখন বাদরামি ভুলে
আপন হবে তোমার
চলো চলো এইতো এসে গেলাম
আরে আরে অই দেখো
ডাহুক ডাহুকী ছুটছে কেমন করে
বনের ভেতর
সাথে তাদের মিষ্টি কটি ছানা
ঠিক যেনো আমাদের কুসুমিতা
সুভ মিতার মতো
কি যে দেখতে মায়া মায়া
দেখছ পথটা কেমন ভেজা ভেজা
বেশি দুরে নযতো

 

—( দুই)

এই থামলে কেনো ?
পায়ে চলা পথটা যে কি নরম
যেনো শিমুল তুলা
নয়তো তাপে গলা মোম
আসতো এই মাটির সাথে
আমার তোমার শরীরের , গায়ের রং মিলাই
এই মাটির সন্তান যে আমরাই
সেখানে দেখতে পাবে
তোমার আমার শিকড় বড় বেশি গভীরে পোতা

আচ্চা ডাহুক ডাহুহিকীরা পালোলো কেনো
তোমার আমার কথা বলার শব্দ শুনে
ভয় পেয়েছে ওরা
দেখেনি আমাদের সেই কবে থেকে
ওই দেখো ওরা ভয়পেয়ে লুকাচ্চে
বাঁশ ঝাড়ে
ওদের একটু ডাকোনা কয়েকটি কথা বলি
ওদের সাথে
কেমন আছে ওরা
কি খায় , কেমন কাটছে ওদের দিনকাল
বনবাদার উজাড় হয়ে গেলে
ওরা থাকবে কোথায়
কেমন করে বাসবে বাসা
ডিম পাড়বে কোথায়
আমরা নয আবার চলে যাবো ভিনদেশে
মেঠো পথের এই গণ্ধটা একটু আগলে ধরো
আমি ভরি কিছু তার ঘ্রান মনের শিশিতে
নিয়ে যাবো সাথে করে ভিনদেশে

কি যে বলোনা তুমি আজও রয়ে গেছ গেঁও
তাই নাকি? তা হলে তুমি যাও
আমি ঘুঘুর ডাক শুনতে
কবুতরের নৃত্য দেখতে বনে গেলাম
দোযেলও আসবে এক্ষুনি
এবার বামদিকে না হয় একটু হাটো।
ঠিক আছে। বামদিকের পথটাও বেশ গেও
বাদিকে গেলে,ঘণ কালো সবুজ ঝোপ দেখবে
বা ঝোপরে আড়ালে লুকিয়ে থাকা বনমোরগ
তোমাকে শুভেচ্ছা জানাবে
একটু হাজামজা পুকুর পাড়টা ডানে ফেলে
বামের দিকে পথটা ধরবো
বড় বেশি সোদাগন্ধ
আরো চেনাচেনা জানা
আমাদের মা জননী এই পথে
পুকুরে স্নান করতে যেতো
এই পথে আজও চলেনা গাড়ি
মায়ের ভেজা চুলে লাগেনা ধুলো কাদা
চলেনা মটর গাড়ি
বোমাত্ঙ্কোর মতো শব্দ করে না
মস্ত বড় মোটা তাজা গাড়ি
মা, কে যে পালর্কী নিয়েসেছিলো
বাবার বাড়ি
অই দেখ তা দুলছে বাতাসে
ছয়বেহারা হাসছে তা দেখে

এসে গেছি এইতো,
বেশি দুরে নযতো।


https://www.youtube.com/watch?v=QfMFUu5mVH0


Popular Culture’s Poet: Poet and novelist Azizur Rahman Aziz wrote about 1800 poems. He was the Secretary of the Government of Bangladesh, Chief Information Commissioner, Governor of the Governor’s board of Islamic Foundation and Chairman of the Trustee Board of the National Museum and is currently the Chairman of the Ambala Foundation. He is best known for his fame, especially as he is known as “Living Poet in the City” among his peers and friends, ally and familiar communities. Azizur Rahman Aziz is a Bangladeshi poet, literary, novelist, musician, and lyricist. He wrote 30 numbers of novels, the number of songs are approx. 1000, he has written many stories, children literature, TV serials, plays & drama and Bengali films have been made based on his novel. He has been writing since 1980. His published stories, poems and novels, and songs are very Popular in Bangladeshi Culture. His writings topics are rural and urban life, women, liberation war, Shahbag movement, love & affairs, history and young generation. Azizur Rahman Aziz’s one of prominent poem is “Not Too Far (বেশি দুরে নয়তো)”. The poem has recited by Hatashe. This poetry described about a story of a master and his lovely fellow together is visiting his childhood village, wherever the master told to his fellow about the story & nature of his village. So let’s hear of the poetry “Beshi Dure Noytoh” the Pop Poetry.



মন্তব্য চালু নেই