বেগমগঞ্জের যৌথ বাহিনীর অভিযান ॥ জনমনে আতঙ্ক ॥ এলাকা পুরুষ শূন্য

নোয়াখালী বেগমগঞ্জের আলাইয়াপুরে যৌথবাহিনীর অভিযানে ভাঙচুর, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের আলাইয়াপুর ইউনিয়নের কয়েকটি বাড়িতে যৌথবাহিনীর অভিযানের সময় নারীদের মারধর এবং ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এসময় যৌথবাহিনীর সদস্যদের পিটুনিতে অন্তঃসত্বা এবং সত্তরোর্ধ্ব মহিলাসহ ৫ জন আহত হয়েছেন। তাদের বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ওই এলাকাসহ পুরো নোয়াখালীতে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিরোধী জোটের নেতাকর্মী এমনকি সমর্থকরা পর্যন্ত এলাকা ছাড়া। পুরো এলাকা এখন পুরুষশূন্য।

ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী মামুন হোসেন বান্টি বলেন, গতকাল রাত ৮টার দিকে ১১টি গাড়ি নিয়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, ডিবি, বিজিবি, আর্মড পুলিশ, র‌্যাব ও সাদা পোশাকধারী বাহিনী আলাইয়াপুরে প্রবেশ করে। এসময় ইউপি’র জুগিখালী আফতারামপুর গ্রামের মুন্সি বাড়িতে গিয়ে জোরপূর্বক তাদের ঘরে প্রবেশ করে। ঘরে কোন পুরুষ লোককে না পেয়ে যৌথবাহিনীর সদস্যরা মহিলাদের অশ্লীল গালমন্দ ও ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করতে থাকে।

এসময় প্রতিবাদ করলে মামুনের ভাতিজি নোয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী ফারহানা আক্তার জুঁথিকে মারধর করে। তাকে রক্ষা করতে গেলে তার ফুফু অন্তঃসত্ত্বা নাজমুন নাহার (২৮) ও তার বৃদ্ধ দাদি দিলরুবা বেগম (৭২) কে প্রহার করে মাটিতে ফেলে দেয়। এসময় তাদের চিৎকারে বাড়ির অন্যান্য ঘরের লোকজন এগিয়ে আসলে তাদেরকে গুলি করার হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থলে আসতে বাধা দেয়া হয়। মামুন আরো জানান, ১৯৯৬ সাল থেকে তিনি প্রবাসে ছিলেন। ২০১২ সালে দেশে এসে মৎস্য ও ব্রিকফিল্ডের ব্যবসা করছেন। কোন দলের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি জড়িত নন। কোন ধরনের পদবিও নেই। ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ করেন, একই রাত সাড়ে ৮টা থেকে প্রায় ১০টা পর্যন্ত আলাইয়াপুর ইউনিয়নের একাব্বরপুর গ্রামের ডাক্তার আবদুল মালেকের ঘরে, এনায়েতপুর গ্রামের আবুল কালাম মাস্টারের ঘরে, একই গ্রমের কাজী আবুল কাশেমের ঘরে, বালুচরা গ্রামে ইউনিয়ন যুবদল যুগ্ম আহ্বায়ক আলমের ঘরে পুরুষ লোকদের না পেয়ে যৌথবাহিনীর সদস্যরা ব্যাপক ভাঙচুর করে।

এসময় পুরো এলাকা জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কে সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হয়ে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়ার জন্য দিগ্বিদিক ছুটাছুটি করতে থাকেন। এই ঘটনায় পুরো এলাকার মানুষের মাঝে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে বেগমগঞ্জ থানার ওসি আইনুল হকের নিকট জানতে চাইলে তিনি অভিযানের ঘটনা নিশ্চিত করেছেন। ভাঙচুর ও গালমন্দের বিষয়ে তিনি জানান, ডাকাতের বউতো ডাকাত, তারা অনেক কথা বলবে। ব্যবসায়ীর বাড়িতে নারীদের মারধরের ঘটনার জবাবে তিনি জানান এটি অনেক বড় অভিযান ছিল। এতে পুলিশ, ডিবি, র‌্যাব, আর্মড পুলিশ বিজিবিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ছিলেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এগুলো করবে কেন বলে জানান।

এদিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রকাশ্য ও গোপনে জিজ্ঞাসাবাদ করে দেখা যায়, যে যে বাড়ীতে অভিযান চালানো হয় তাদের ২/৪ জন করে প্রত্যেকের নামে প্রায় ১৫/২০টি করে মামলা রয়েছে বলে জানা যায় এবং তাদের ভয়ে দিনে দুপুরে জনসাধারণ চলাচল করতে সাহস পায় না। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজি, ধর্ষন, চুরি, ডাকাতি সহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। ভাংচুর ও মারধরের বিষয়টি সঠিক পাওয়া যায়নি।



মন্তব্য চালু নেই