লালমনিরহাটের কিছু খবর :

বুড়িমারী স্থলবন্দর : কয়লা আমদানি করে ব্যবসায়ীরা বিপাকে

আমদানি-রফতানি কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকলেও লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলাধীন বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় কয়লা আমদানি কারক শতাধিক বাংলাদেশি ব্যবসায়ী কয়লা আমদানি করে বিক্রি করতে না পারায় চরম বিপাকে পড়েছেন।

বুড়িমারী স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, দেশে কয়লার চরম সংকট দেখা দিলে গত বছরের ২৯ নভেম্বর থেকে দেশের একমাত্র বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়েই ভারতীয় কয়লা আমদানি শুরু হয়। ফলে সারাদেশের কয়লা আমদানি কারক ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের ভিড় জমে এ স্থলবন্দরে। আর তাই দেশে পর্যাপ্ত কায়লার চাহিদা উর্দ্ধমুখীর কারণে অনেকেই ভারতীয় কয়লা এ স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি শুরু করে।

এ স্থলবন্দর দিয়ে গত দেড় মাসে কয়েক লাখ মেট্রিকটন ভারতীয় কয়লা আমদানি হয়। চাহিদার দিক থেকে কায়লার বাজার কিছুটা স্থিতিশীল হতে না হতেই দেশে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট চলতি মাসের ৫ জানুয়ারী হতে টানা অবরোধ কর্মসূচির পাশাপাশি দফা দফায় বিক্ষিপ্তভাবে হরতাল কর্মসূচিও পালন করে আসছে। ফলে কয়লা আমদানি কারক ব্যবসায়ীরা পরিবহন ও ক্রেতা সংকটের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েন। তবে টানা অবরোধ-হরতাল কর্মসূচির কারণে সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক পুলিশ ও বিজিবি প্রহরায় কিছু পণ্যবাহী বাস-ট্রাক চলাচল করলেও পণ্য পরিবহনে ট্রাক ভাড়া বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে কয়লা ক্রেতারা পিছুটান দেয়। এতে কয়লা ক্রেতা সংকটে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন আমদানি কারক ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয় কয়লা আমদানি কারক ব্যবসায়ীদের তথ্য মতে, বর্তমানে বুড়িমারী স্থলবন্দর এলাকায় বিভিন্ন খোলা মাঠে প্রায় ১ লাখ মেট্রিক টন কয়লা ক্রেতা সংকটের কারণে অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এতে আমদানি কারক ব্যবসায়ীদের কোটি কোটি টাকা আটকে রয়েছে। এতে ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।

এ স্থল বন্দর ব্যবহারকারী মেসার্স মাইদুল ইসলামের স্বত্বাধিকারী আমদানি কারক ও সিএন্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ী মাইদুল ইসলাম বকুল ক্রেতা সংকটের কথা জানিয়ে বলেন, ‘টানা অবরোধ-হরতালে সার্বিক নিরাপত্তা জনিত কারণে ক্রেতা সংকট সৃষ্টি হয়েছে। পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধিতে আরো সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে দামও কমেছে প্রতিটন কয়লায় প্রায় দেড় থেকে আড়াই হাজার টাকা। এখন প্রতিটন কয়লা ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ দেশে কয়লার ব্যাপক চাহিদা থাকা স্বত্বেও এ দামেও কয়লা ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া কয়লা বিক্রি না হওয়ায় ব্যাংক সুদও বাড়ছে। ফলে ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির মধ্যে পড়েছে।’

অপরব্যবসায়ী আমদানি ও রফতানি কারক বন্ধু ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী শামীম হোসেন জানান, ‘ক্রেতা সংকট ও পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধির কারণে কয়লা আমদানি কারক ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন। ব্যাংক ঋণের টাকায় আমদানি করা কয়লা বিক্রি না হওয়ার কারণে ব্যবসায়ীদের ব্যাংকের সুদও পরিশোধ করতে হিমশিম ক্ষেতে হচ্ছে। ফলে সহিংস টানা অবরোধ-হরতাল কর্মসূচি অব্যাহত থাকায় আমদানি করা কয়লা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন আমদানি কারক ব্যবসায়ীরা। দ্রুত বিষয়টি সমাধান হওয়া প্রয়োজন বলে তিনি দাবি করেন।’

বুড়িমারী স্থলবন্দর কাস্টমস সহকারি কমিশনার (এসি) বিল্লাল হোসেন আমদানি-রফতানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমি এখানে সবেমাত্র যোগদান করেছি। এখনও বেশি কিছু জানি না। ফাইল দেখে পড়ে আপনাকে কয়লার প্রকৃত আমদানির পরিমাণ জানাতে পরবো।’

 
পাটগ্রামে পাথর উত্তোলনে ব্যবহৃত বোমা মেশিন ধ্বংস, ব্যবসায়ীর কারাদন্ড
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার ধরলা নদী থেকে পাথর উত্তোলনে ব্যবহৃত ৩টি বোমা মেশিন জব্দ করে পাথর উত্তোলন গর্তেই মেশিন ধ্বংস করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। একই সময়ে এ ঘটনায় ওই বোমা মেশিন ঝালাই (ইলেকট্রিশিয়ান) কারক মতিয়ার রহমান (৩৮) নামের এক ব্যবসায়ীকে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেছে ওই ভ্রাম্যমান আদালত। মতিয়ার ওই উপজেলার ধবলগুড়ি এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে। তিনি বুড়িমারী বাজারে বোমা মেশিন ঝালাইয়ের (ইলেকট্রিশিয়ান) কাজ করতেন। সেখান থেকে তাকে ধরে এনে কারাদন্ড প্রদান করা হয়।

থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাতে উপজেলার পাটগ্রাম ইউনিয়নের তেলিপাড়া ও বেংকান্দা এলাকায় ধরলা নদীতে এ অভিযান পরিচালনা করেন পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক রফিকুল হক।

পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল হক সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘ধরলা নদীসহ আশপাশের সকল নদীতে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন কাজে ব্যবহৃত বোমা মেশিন অপসারণে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান অব্যাহত থাকবে।



মন্তব্য চালু নেই