বিয়ের এই মৌসুমে এক কারণে সংকটে বিবাহ-অভিযান

বাতিল নোটের জেরে কিঞ্চিৎ বিভ্রাটে বিয়ের প্রস্তুতি। বিয়ের মৌসুমে কার্যত মাছি মারার অবস্থায় ভারতের উত্তর কলকাতার ছোট বিউটি পার্লারগুলো। বিয়েতে সাজার আগে কনে এবং তাঁর পরিবারকে মাথায় রাখতে হচ্ছে টাকার হিসেব। খুচরোর অভাবে বিয়েতে সাজগোজের জন্য নির্দ্বিধায় টাকা খরচ করছেন না কেউই।

বাগবাজারে ‘স্যাফায়ার’ পার্লারের কর্ণধার নিলম সিংহ জানিয়েছেন, অগ্রহায়ণ মাসে এখনও পর্যন্ত তিনি ছ’জন কনেকে সাজিয়েছেন। বেশি অঙ্কের টাকা কার্ডেই নিয়েছেন। তিনি আরও জানান, ‘‘লোকসানটা হচ্ছে অন্য জায়গায়। অন্যবার এই মরসুমে অনেকে আসত পার্টি মেকআপ করতে। এবার সেই সংখ্যাটা অবিশ্বাস্যভাবে কম।’’ আগে ৫০০ টাকার কমে কার্ডে পেমেন্ট নিতেন না। এখন যা পরিস্থিতি, বাধ্য হয়ে ১০০-১৫০ টাকাও কার্ডে নিতে হচ্ছে।

শ্যামবাজারের আরেক বিউটি পার্লার ‘শতরূপা’র কর্ণধার কাবেরী সুরও এ ব্যাপারে একমত। তাঁর ব্যবসা চলে পুরোটাই ক্যাশে। নোট বাতিলের আগেও তিনি কার্ডে টাকা নিতেন না। এখনও নেন না। ফলে কিছু ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়ছেন তাঁর কাস্টমাররা। তাঁর কথায়, ‘‘এখন বিয়ের আগে কনেরা খুব বেশি সার্ভিস নিচ্ছেন না। এমনকী, ফেশিয়াল বা স্পা’এ সব চেয়ে কম দামি যেটা, সেটার দিকে নজর দিচ্ছেন কাস্টমাররা।’’ অনেক পুরনো কাস্টমার আবার ধারে কাজ সারছেন।

৩২ বছর ধরে বিয়ের কনে সাজাচ্ছেন কাবেরী। বাড়ি গিয়ে সাজানোর চার্জ বেশি। এ বছর অনেকেই প্রথমে বাড়িতে এসে সাজানোর কথা বললেও শেষ মুহুর্তে পার্লারে এসে সেজে গিয়েছেন। তাতে হাজার-দেড় হাজার টাকা কম দিতে হচ্ছে। আগে কনের আত্মীয়েরাও সাজানোর অনুরোধ করতেন। এবার সেটা নেই বললেই চলে, জানালেন তিনি। হাতিবাগানের আরেক বিউটি পার্লারের মালিকও জানালেন, কাস্টমারের সংখ্যা আগের থেকে অনেক কমে গিয়েছে। অনেকেই দু’হাজার টাকার নোটের ক্ষেত্রে ব্যালান্স ফেরত না নিয়ে পরের বারের জন্য ‘ডিউ’ রাখছেন।

যদিও ‘হাবিব্স, ‘সাজো’র মত বড় বিউটি পার্লারগুলোর ব্যবসা আগের মতোই চলছে। কারণ কার্ড আগেও নিতেন তাঁরা। চেকেও পেমেন্ট করছেন অনেকে। শ্যামবাজার ‘হাবিব্‌স’এর স্টোর ম্যানেজার কমলিকা সান্যাল জানিয়েছেন, অনেকেই অনলাইনে অফারে জিনিস কেনেন। সেক্ষেত্রে খুচরো লেনদেন করতে হয় না তাঁদের। -এবেলা।



মন্তব্য চালু নেই