বিয়ের আগেই অন্তঃসত্ত্বা, অত:পর যা ঘটল কলেজ ছাত্রীর জীবনে

জোর করে বিয়ের কথা বলে অবৈধ সম্পর্ক মেলামেশা অন্তঃসত্ত্বার পর অস্বীকার। আকাশ ভেঙ্গে পরে কলেজ ছাত্রী জান্নাতুল ইসলাম নাঈম আকলিমার (১৮) মাথায়। গর্ভবতী আকলিমা সন্তানের পিতার স্বীকৃতির দাবিতে আইনের আশ্রয় নেয়ার পর অবশেষে সন্তানের ও স্বামীর স্বীকৃতি পায় আকলিমা। কালীগঞ্জ থানায় প্রেমিকের পরিবারের লোকজনের উপস্থিতিতে বিবাহ রেজিস্ট্রি হয় আকলিমা-বিলু দম্পত্তির।

মামলার বিবরনে জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের পূর্ব দুহুলী গ্রামের দুলাল মিয়ার মেয়ে নামুড়ি মহাবিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী জান্নাতুল ইসলাম নাঈম আকলিমার (১৮) সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে একই উপজেলার কাকিনা চাপারতল এলাকার সবুজ মিয়ার ছেলে কাকিনা উত্তর বাংলা ডিগ্রী কলেজের ছাত্র নাঈম ইসলাম বিলুর(২৫)।

একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভনে জোর করে আকলিমাকে নিজ কলেজ হোষ্টলে একাধিক বার ধর্ষণ করে বিলু। এতে করে আকলিমা অন্তঃসত্ত্বা হলে বিয়ের জন্য চাপ দিলে যাবতীয় সম্পর্কের কথা অস্বীকার বিলু। আকলিমা গর্ভস্থ সন্তনের পিতৃী পরিচয় দাবি করে চলতি বছরের ১৯ মার্চ লালমনিরহাট আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে একটি মামলা করেন। এরই মধ্যে ২৩ মে নিজ বাড়িতে একটি ফুটফুটে ছেলে সন্তান জন্ম দেন ধর্ষিতা আকলিমা। কুমারী মায়ের এ সন্তন নিয়ে রীতিমত হৈ চৈ পড়ে যায় পুরো উপজেলায়। আকলিমার পরিবারকে দেয়া হয় নানা ধরণের অপবাদ। গত রোজার ঈদে স্থানীয় মাষ্টার বাড়ি জামে মসজিদ কমিটি ওই পরিবারের দান খয়রাত বর্জন করে তাদেরকে এক ঘরে করে।

অবশেষে লালমনিরহাট পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ সাড়াশী অভিযান চালিয়ে পলাতক প্রেমিক বিলুর সন্ধান পান। আটকের পর বিলু আকলিমার সাথে সম্পর্ক মেলামেশা স্বীকার করে আকলিমাকে বিয়ে করতে রাজি হলে শুক্রবার(১৮সেপ্টেম্বর) কালীগঞ্জ থানায় বিয়ের আয়োজন করেন ওই থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) রাশেদুজ্জামান। প্রেমিক বিলু তার পরিবারের লোকজনকে নিয়ে ৪ লাখ টাকা দেন মোহরনায় বিয়ে করেন প্রেমিকা আকলিমাকে। বিয়ে শেষে কালীগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মঞ্জুরুল রহমান আকলিমার সাড়ে ৪ মাসের ছেলে সন্তানসহ আকলিমাকে বিলুর হাতে তুলে দেন।

নববধু জান্নাতুল নাঈম আকলিমা বলেন, ‘পুলিশ আর সাংবাদিকদের জন্য আজ আমি আমার অধিকার ফিরে পেয়েছি। এ জন্য তিনি সবার নিকট কৃতজ্ঞ।

লালমনিরহাট পুলিশ সুপার টিএম মোজাহেদুল ইসলাম কালীগঞ্জ থানা পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘পুলিশ বরাবরই সমাজের শান্তি-শৃংখলা বজায় রাখতে চেষ্টা করে।’



মন্তব্য চালু নেই