বিয়ারের বোতলের রং কেন সব সময়েই সবুজ বা ব্রাউন হয়

কড়া পানীয়ের ইতিহাস নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করেন, এমন মানুষের সংখ্যা পৃথিবীতে অগণিত। মদ-মদিরা-সুরার ইতিহাস রাজারাজড়ার ইতিবৃত্তের চাইতে যে কম রোমাঞ্চকর নয়, তা প্রমাণ করেছেন ফরাসি ও ইতালিয় ইতিহাসবিদরা। পানীয়ের স্বাদ বা গন্ধের মতো তার বোতলও গবেষকের কৌতূহল জাগায়। লক্ষ্য করলেই বোঝা যায়, পানীয়ের বোতলের গড়ন ও রংয়ের বৈচিত্র্য সাংঘাতিক। ফরাসি আনাল ঘরানার ইতিহাসবিদরা জানান, এই বোতল শিল্প বেলজিয়াম ও ফারান্সে শিল্প বিপ্লবের আগেই এক বিরাট কর্মসংস্থানের সুযোগ এনে দিয়েছিল।

অন্য পানীয়ের কথা থাক। বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় পানীয় বিয়ারের বোতলের বৈশিষ্ট্যও কিছু কম নয়। কিন্তু একটা ব্যাপারে বিশ্বসুদ্ধ বিয়ারের বোতল এক। সেটা তাদের রং। আজ পর্যন্ত কেউ সবুজ বা ব্রাউন রং ব্যতিরেকে বিয়ারের বোতল দেখেছেন কি? কেন স্বচ্ছ হয় না এই বিশেষ পানীয়ের বোতল?

পানীয়ের ইতিহাসবিদরা জানাচ্ছেন, ১৯ শতকের আগে বিয়ার বোতলজাত করাই হত না। পিপেতে ভরে পাব-এ সরবরাহ করা হতো। বড়িতে যাঁরা বিয়ার রাখতেন, তাঁরাও পিপেই কিনতেন। সেখান থেকে ডাইরেক্ট মাগ-এ ঢেলে পান করা হত বিয়ার। কিন্তু ১৯ শতক নাগাদ বিয়ার প্রস্তুতকারকরা উপলব্ধি করেন কাচের বোতলে বিয়ার অনেক বেশি তাজা থাকবে। প্রথমে বিয়ার স্বচ্ছ বোতলেই পোরা হতো শুরু করে। কিন্তু সেই বোতল কোনও কারণে রোদে রাখলেই কেলেঙ্কারি ঘটে, এটাও দেখা যায়। আসলে রোদের সংস্পর্শে এলে বিয়ারে একটা বাজে গন্ধ হয়। এর কারণ অতিবেগনি রশ্মির স্পর্শদোষ।

সেই উপলব্ধি থেকেই ব্রাউন বোতলে পোরা হতে থাকে এই পানীয়। ইতিহাসবিদরা আরও জানান, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ব্রাউন কাচের উৎপাদনে চাপ পড়ে। তাই পরিবর্ত হিসেবে সবুজ বোতলে পোরা হতে থাকে বিয়ার।

আজ স্বচ্ছ বোতলে অতিবেগনি রশ্মিকে প্রতিহত করার কৌশল তেমন কোনও খরচসাপেক্ষ বিষয়ই নয়। তবু সেই প্রাচীন ঐতিহ্যকে সম্মান জানিয়ে আজও সবুজ বা ব্রাউন বোতলেই পোরা হয় বিয়ার।



মন্তব্য চালু নেই