বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা চুলের নারী; বাস্তব জগতের র‌্যাপুঞ্জেলের সম্পর্কে জানুন

র‌্যাপুঞ্জেলের গল্পটা মনে আছে? প্রেমিকের জন্য ঘরের জানলা দিয়ে বিনুনি ঝুলিয়ে দিয়ে অপেক্ষা করত র‌্যাপুঞ্জেল। তবে বাস্তবে কি এমনটা হতে পারে?

তবে আসুন, চিনে নিন বাস্তবের এই র‌্যাপুঞ্জেলকে। ইনি ফ্লোরিডার আশা ম্যানডেলা। বয়স ৫০। আর চুলের দৈর্ঘ ৫৫ ফুট। বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা চুলের মহিলা ইনিই।

র‌্যাপুঞ্জেলের মতো রাজপুত্র এসেছে তার জীবনেও। চুলই যখন আশার নেশা, তখন চুল না ভালোবাসলে কি আর প্রেমে পড়া যায়? আশা তাই ভালোবেসে বিয়ে করেছেন কেনিয়ার হেয়ার ড্রেসার ইমানুয়েল চেগকে।

একটি হেয়ার ওয়েবসাইটে আশার ছবি দেখে প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন ইমানুয়েল। তখনই আশার সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। তার আট মাস পর যখন আশা ব্যবসার কাজে কেনিয়া আসেন তখনই শুরু হয় দু’জনের সম্পর্কের।

অনেক দিন ধরে দূর থেকে আশার চুল দেখে মুগ্ধ ইমানুয়েল তা ছুঁয়ে দেখতে চেয়েছিলেন। বললেন, ‘এত চুল দেখে আমি অভিভূত হয়ে গিয়েছিলাম। আমার কল্পনার অতীত। প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো চুল হাঁটু পর্যন্ত লম্বা বা বড়জোর গোড়ালি পর্যন্ত। কিন্তু প্রথম দেখাতেই আমি থ হয়ে যাই! অসাধারণ।’

আমেরিকায় বিয়ে করেছেন তারা। আর এখন বিয়ের দু’বছর পর চুলের পুরো ভার স্বামী ইমানুয়েলের উপরই ছেড়ে দিয়েছেন আশা।

১৫ বছর ধরে হেয়ার স্টাইলিং যার পেশা তার উপর চুলের ভার দিয়ে আশা এখন অনেকটাই নিশ্চিন্ত। পুরো চুলে শ্যাম্পু করতে প্রায় দু’দিন লেগে যায়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে পরিচর্যা করতে হয়।

আশা বলেন, ‘স্বামী আমার চুলের খুব যত্ন নেন। আমি খুব অলস। স্বামীই আমার মাথায় মাসাজ করে দেন, শ্যাম্পু করেন, চুল আঁচড়ে দেন।’ চুল নিয়ে বিশ্ব রেকর্ডের দাবি তোলার কথা ভাবছেন তারা।

শুধু আশা নন, স্ত্রীর থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে চুল বড় করছেন ইমানুয়েলও। আসলে এই চুলের বিশেষ আধ্যাত্মিক অর্থ রয়েছে ইমানুয়েলের কাছে। জানালেন, ‘আমি রাস্তাফারিয়ান। চুল আমার কাছে প্রতীকী। চুল থেকে আমি পজিটিভ এনার্জি পাই। চুল আমার শরীরের অংশ। ভগবানের সৃষ্টি।’

রাস্তায় পড়ে নোংরা হওয়া থেকে বাঁচাতে অনেক সময়ই হ্যান্ড ব্যাগে চুল ভরে নেন আশা। উত্সাহে রাস্তার লোকজন তাকিয়ে দেখেও তাদের। আশা বলেন,‘লোকজনের মুখ সত্যিই দেখার মতো হয়। ইচ্ছা হয় ছবি তুলে রাখি।’

নিজে হেয়ার প্রডাক্টের ব্যবসা করেন আশা। চিকিৎসকরা তাকে বলেছিলেন, যে ভাবে চুলের ওজন বাড়ছে তাতে চুল না কাটলে প্যারালিসিসের সমস্যা হতে পারে তার।

আর তাই এখন জিমে গিয়ে তাকে ঘাড়ের এক্সারসাইজ করতে সাহায্য করেন ইমানুয়েল। এ ভাবে ৬৫ পাউন্ড কমিয়েছেন আশা।

তবে চুল কি কখনোই বাধা হয়ে দাঁড়ায় না তাদের দাম্পত্য জীবনে? আশা জানালেন, ‘আমাদের শোওয়ার ঘরের শোভা বাড়িয়েছে চুল। কখনো কখনো আমাদের সঙ্গে খাটেই থাকে চুল। কখনো দুজনের মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। আবার কখনো কখনো আমরা মাটিতেও নামিয়ে রাখি।’



মন্তব্য চালু নেই