বিশ্বের প্রথম হিজাব পরিহীতা মুসলিম নৃত্যশিল্পী এক কিশোরীর গল্প!

খুব ছোটবেলা থেকেই নিজেকে একজন পেশাদার নৃত্যশিল্পী হিসেবে তৈরি করার ইচ্ছা ছিলো কিশোরী মেয়েটির । সেই লক্ষে অনুশীলনও চালিয়ে আসছিলো এতদিন। স্টেফানি কুর্লো নামের ঐ কিশোরীর বয়স এখন মাত্র ১৪ । কিন্তু এ বয়সেই অসামান্য এক স্বপ্ন তার চোখে। স্বপ্নটা অনেক বড়ই, ব্যালেরিনা হতে চায় সে । ব্যালেরিনা হয়েই সে বিশ্বের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে চায় । এতকিছু ঠিক ছিলো, কিন্তু ঐ কিশোরীর স্বপ্নটাযে আকাশছোঁয়া । কারনটা হলো বিশ্বের প্রথম হিজাবপরিহিতা মুসলিম ব্যালে নৃত্যশিল্পী হতে চায় সে। এর আগে মুসলিমদের মধ্যে এমনটা ঘটেনি কখনো ।

অস্ট্রেলিয়ার আর পাঁচটা মেয়ের মতো সেই ছোটবেলা থেকেই একজন নৃত্যশিল্পী হওয়ার স্বপ্ন দেখছিল সে। তবে এতদিন কোন বাঁধা ছিলোনা , কিন্তু ছয় বছর আগে হঠাৎ করেই তার বাবা-মাসহ পুরো পরিবার ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে৷ এরপর হিজাব পরতে শুরু করে স্টেফানি। আর সেখানেই ঘটে ‘বিপত্তি’। কারণ হিজাব পরার ফলে নাচের স্কুলে আর তাকে ঢুকতে দেয়া হয় না। অন্য কোনো নাচের স্কুলেও ভর্তি হতে পারে না সে । সিডনির যে স্কুলে এতকাল অনুশীলন চলছিল সে স্কুলে হিজাব পরে ব্যালে নাচার যে অনুমতি দেয়া হয়নি তাকে।

এমন প্রতিকুলতায় কি তবে নিজের লালিত স্বপ্ন চুর হয়ে যাবে ? হাল ছাড়ার মেয়ে নয় স্টেফানি নামের ঐ কিশোরী। বাবা-মায়ের প্রেরনা আর স্বপ্নপূরণে সে বিশ্বের আন্যান্য জায়গায় বিভিন্ন নাচের স্কুলে যোগাযোগ করতে শুরু করে । অবশেষে একটি স্কুল তাকে নিতে রাজিও হয়। তবে এখানেও বিপত্তি! অনেক টাকা ডোনেশান চেয়ে বসে তারা । সেখানে ভর্তি হতে অনেক অর্থের প্রয়োজন, থেমে থাকেনি কিশোরী স্টেফানি। নিজের ইচ্ছের কথা জানিয়ে ইভেন্ট খুলে অনলাইনে, একইসাথে তাকে সহযোগিতায় টাকাটা সংগ্রহ করার জন্য সে শুরু করে একটা ‘ফান্ডরেইজিং ক্যাম্পেইন’, যার নাম ‘লঞ্চগুড’ ।

এমন প্রতিকুল অবস্থাতেও কেন এমন স্বপ্ন ঐ কিশোরীর, সে প্রশ্নের জবাবে ডেইলি মেইলকে ঐ কিশোরী জানিয়েছে, শুধু নিজের জন্যই নয়, অন্য মুসলিম মেয়েদের জন্যও এই সুযোগ করে দিতে চায় সে। অনেকের কাছে ব্যাপারটা ‘অকাট্য’ মনে হলেও স্টেফানির মতে, সে দেখিয়ে দিতে চায় যে, ইসলাম শিল্পের পথে কোনো বাধা নয়। তাই বিশ্বের প্রথম হিজাবপরিহিতা ‘ব্যালেরিনা’ হয়ে সে বিশ্বের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে চায়। এভাবেই করতে চায় তার স্বপ্নপূরণ। প্রথম দিকে অনেকেই এই কিশোরীর দর্শন বা চিন্তার বিরোধীতা করলেও সারা মিলছে ধীরে ধীরে। ইতমধ্যে ডোনেশানের বিশাল অংকের টাকাটাও তাকে সমর্থন দেয়া মানুষদের কাছ থেকে যুগিয়ে ফেলেছে ঐ অদম্যপ্রান কিশোরী ।

https://youtu.be/4Pp8t5nrio0



মন্তব্য চালু নেই