বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের মাটিতে নামিয়ে যা পেলেন মাশরাফি

ভারতকে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৬ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ এক ম্যাচ হাতে রেখেই ২-০ তে জিতে নিল লাল সবুজের বাংলাদেশ।

মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বে বাংলাদেশের ২০১৪ সালটি কেমন গিয়েছিল তা সবারই জানা। বছরের শেষপ্রান্তে মাশরাফি বিন মর্তুজার হাতে ওয়ানডের অধিনায়কত্ব দেয়ার আগে ১৩ ম্যাচে ১২ পরাজয়ের স্বাদ নিতে হয়েছিল বাংলাদেশকে।

মাশরাফির হাতে অধিনায়কত্বের ভার দেয়ার পর দৃশ্যপট পাল্টে যায়। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম অ্যাসাইনমেন্টে মাশরাফি অ্যান্ড কোং ৫-০ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জিতে নেয়।

এরপর বিশ্বকাপে তার হাত ধরেই প্রথমবারের মত কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের পর ঘরের মাঠে পাকিস্তানকে হারানোর পর এবার ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতে নিল মাশরাফির দল।

পাকিস্তান             ২০১৫            ৩-০              বাংলাদেশ
ভারত                ২০১৫            ২-০              বাংলাদেশ

সব মিলিয়ে ঘরের মাঠে শেষ দশ ওয়ানডে ম্যাচে প্রতিটিতেই জয় বাংলাদেশের।মাশরাফির হাত ধরে পুরো বাংলাদেশ দলটাই পাল্টে গেছে। এ জন্য বিসিবি সভাপতি সেদিন গর্ব করে মাশরাফি বিন মর্তুজাকে ‘গ্রেট’ বলতেও দ্বিধাবোধ করেনি।

বিসিবির সভাপতির মত এখন পুরো বাংলাদেশ মাশরাফি বিন মর্তুজার দল নিয়ে গর্ববোধ করছে। দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের মাটিতে নামিয়ে এনে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় সত্যিই গর্বের বিষয়। দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের মাটিতে নামিয়ে দশে দশ পেলেন টাইগার মাশরাফি।

চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে র‍্যাঙ্কিংয়ের অষ্টম স্থানে থাকতেই পারলেই মিলবে ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলার সুযোগ। এজন্য হাতে ছিল ভারতের সঙ্গে তিন ম্যাচ এবং আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে তিন ম্যাচ, সব মিলিয়ে ছয়টি ওয়ানডে। এই ছয়টির মধ্যে দুইটি জিতলেই চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে পারবে বাংলাদেশ। আজ রবিবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে জিতে সেই লক্ষ্যে পৌঁছাল মাশরাফি-সাকিবরা। একই সঙ্গে ভারতের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো সিরিজ জিতলও টাইগার বাহিনী।

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর আগামী বিশ্বকাপও ইংল্যান্ডে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলাটা হবে বিশ্বকাপের জন্য অভিজ্ঞতা অর্জনের একটি সুযোগ। সেই সুযোগ পাওয়ার শর্ত ছিল এ বছর ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে থাকতে হবে র‍্যাঙ্কিংয়ের আটে। র‍্যাঙ্কিংয়ে সেরা আট দল খেলবে ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। সেরা আট দল সুযোগ পাবে ২০১৯ বিশ্বকাপে সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ। ফলে আট নম্বর জায়গাটি বাংলাদেশের জন্য ছিল দারুণ গুরুত্বপূর্ণ। সেই জায়গাটি নিয়ে লড়াই শুরু হয় পাকিস্তানের সঙ্গে। সেই লড়াইয়ে বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তান ধবল ধোলাই হয়েই নয়ে নেমে যায়। অন্যদিকে আটে উঠে আসে বাংলাদেশ।

তবে পাকিস্তানের সঙ্গে টাইগার বাহিনীর লড়াই শেষে মাশরাফি-সাকিব বাহিনীর সামনের আরেকটি টার্গট চলে আসে। সেটি হলো পরবর্তী সিরিজে ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে জিতে ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিশ্চিত করা। আর সেই স্বপ্ন পূরণ করতেই ভারতের বিপক্ষে অসাধারণ   ব্যাটিং-বোলিং করে প্রথম ওয়ানডে জয় লাভ করে বাংলাদেশ। তারই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় ম্যাচেও ৯ ওভার হাতে রেখেই ৬ উইকেটের মনমাতানো জয় পেল টাইগাররা। আর এর মধ্যে দিয়ে নিশ্চিত হলো ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি তে স্বাংলাদেশের খেলা।

র‍্যাঙ্কিংয়ের হিসাব হচ্ছে, এগিয়ে থাকা দলের সঙ্গে খেলে জিতলে সেই দলের রেটিং পয়েন্টের সঙ্গে ৫০ পয়েন্ট যোগ করলে আপনি মোট পয়েন্ট পাবেন। হারলে সেই দলের রেটিং পয়েন্টের সঙ্গে ৫০ বিয়োগ করলে পাবেন মোট পয়েন্ট। র‍্যাঙ্কিংয়ের দুইয়ে থাকা ভারতের রেটিং পয়েন্ট ১১৬। প্রতিটা ম্যাচ জিতলে বাংলাদেশ পাবে ১৬৭ পয়েন্ট, হারলেও পাবে ৬৭ পয়েন্ট। ওদিকে একই নিয়মে শ্রীলঙ্কার (রেটিং পয়েন্ট ১০৬) বিপক্ষে প্রতিটা ম্যাচ জিতলে পাকিস্তান পাবে ১৫৬ পয়েন্ট, হারলে ৫৬ পয়েন্ট।

বাংলাদেশের জন্য সুখবর হলো, ভারতের বিপক্ষে সিরিজটা ২-১ ব্যবধানে হারলেও তাদের রেটিং পয়েন্ট হবে ৮৯। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টপকে চলে যাবে সাতে। ২-১ সিরিজ জিতলে বাংলাদেশের রেটিং পয়েন্ট হবে ৯৩। আর বাংলাওয়াশ করতে পারলে বাংলাদেশের রেটিং পয়েন্ট হবে ৯৬। ছয়ে থাকা ইংল্যান্ডের রেটিং পয়েন্টও ৯৮।



মন্তব্য চালু নেই