বিশ্বকে তাক লাগিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প

হিলারি যদি জেতেন তা হবে ট্রাম্পের প্রতি নেতিবাচক মনোভাবের জন্য, জরিপের এমন ফল ছিলো নির্বাচনের আগে। তবে শেষ মুহূর্তে জরিপের সব ফল উল্টে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

সব জল্পনা-কল্পনা এবং উত্তেজনার অবসান ঘটিয়ে রিপাবলিকান ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটে ট্রাম পেয়েছেন ২৮৮ ভোট এবং হিলারি পেয়েছেন ২১৫ ভোট। যা শতকরা হিসেবে ট্রাম্প পেয়েছেন ৪৮ শতাংশ ও হিলারি পেয়েছেন ৪৭.২ শতাংশ।

আমেরিকাকে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে, প্রেসিডেন্ট হয়ে হোয়াইট হাউসে যাওয়ার বাসনার কথা জানিয়ে ভোটারদের সামনে হাজির হওয়ার অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চেনে সবচেয়ে রঙদার, সবচেয়ে জাঁকালো ধনকুবের হিসেবে।

ব্যবসায়ী ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির একেবারে কেন্দ্রে আবির্ভূত হবেন, কয়েক বছর আগেও তা তার ঘনিষ্ঠরা ভাবতে পারেননি। সেই ট্রাম্প আজ রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন নিয়ে পৌঁছে গেলেন হোয়াইট হাউসে।

অনেকে ভেবেছিলেন, প্রেসিডেন্ট ওবামার রেকর্ড পরিমাণ জনসমর্থন হিলারির বিজয়ে সাহায্য করবে। কিন্তু যে ব্যাপকভিত্তিক কোয়ালিশন ওবামার দুই দফা বিজয়ের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলো, শেষ পর্যন্ত তাদের মধ্যে কোনো লক্ষ্যণীয় উৎসাহ জাগেনি। শুধু তরুণদের মধ্যে নয়, আফ্রিকান-আমেরিকান ও হিস্পানিকদের মধ্যে যে সমর্থন হিলারি আশা করেছিলেন, তা-ও শেষ পর্যন্ত মেলেনি।

তবে নির্বাচনী প্রচারণার শুরু থেকেই ট্রাম্প কম বিতর্কে জড়াননি। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ওবামার চেয়ে অধিক যোগ্য বলায় সব মহলেই সমালোচিত হয়েছেন তিনি। ট্রাম্প ইউনিভার্সিটি নিয়ে যাতে তদন্ত না হয়, সেই আশায় তিনি ফ্লোরিডার অ্যাটর্নি জেনারেলের নির্বাচনী তহবিলে মোটা চাঁদা দিয়েছেন, এমন অভিযোগও উঠেছে। আয়কর দাখিল না করা নিয়েও তার বিরুদ্ধে সমালোচনা হয়েছে। এত বিরুদ্ধ প্রচারণা সত্ত্বেও তার সমর্থন বিন্দুমাত্র কমেনি।

তবে রিপাবলিকান পার্টি খুব দক্ষতার সঙ্গে এই নির্বাচনকে ওবামার দুই দফার শাসনের একটি ‘রেফারেন্ডাম’ হিসেবে উপস্থিত করেছে। তারা এ কথাও বোঝাতে সক্ষম হয়েছে, হিলারির প্রেসিডেন্ট হওয়ার অর্থ ওবামার তৃতীয় দফা। তার চেয়েও বড় কথা, তারা এই বলে রক্ষণশীলদের মনে কাঁপন ধরাতে সক্ষম হয়েছেন, প্রেসিডেন্ট হিলারির অধীনে সুপ্রিম কোর্টের নিয়ন্ত্রণ উদারনৈতিকদের হাতে চলে যাবে।

এদিকে, অনেক নির্বাচনী বিশেষজ্ঞের অবশ্য শেষ পর্যন্ত বিশ্বাস ছিলো হিলারি ঘুরে দাঁড়াবেন। সে কথা ভাবার যথেষ্ট কারণও ছিলো। কেননা ট্রাম্পের তুলনায় তার নির্বাচনী প্রচারণা অনেক বেশি পেশাদারি, মাঠ পর্যায়েও তার ছিলো অনেক বিস্তৃত ক্যাম্পেইন। এসবের চেয়েও বড় কথা, পরপর তিনটি নির্বাচনী বিতর্কে হিলারিরই জয় হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনো কিছুই কাজে লাগেনি হিলারির।



মন্তব্য চালু নেই