‘বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলতে নিষেধ করেছিল রিয়াল’

২৪ বছর পর ব্রাজিল বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল আর্জেন্টিনা। মারাকানায় স্বপ্ন ভাঙার বেদনায় পুড়তে হয়েছে আর্জেন্টাইনদের, ঠিক যেমনটা হয়েছিল ১৯৯০ সালে। সেই একই প্রতিপক্ষ জার্মানির কাছে। বিশ্বকাপের পর দু’মাস পার হতে চললো। আর্জেন্টিনা চরম বদলা নিয়েছে প্রীতি ম্যাচে জার্মানিকে ৪-২ গোলে হারিয়ে। এর অগ্রভাগে ছিলেন অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। যিনি চোটের কারণে মিস করেছিলেন বিশ্বকাপ ফাইনাল। ম্যাচটি দেখার পর থেকেই আর্জেন্টাইন সমর্থকরা বলছেন, যদি ফাইনালে থাকতেন ডি মারিয়া তাহলে ট্রফিটা জার্মানিতে না গিয়ে চলে যেত আর্জেন্টিনার ঘরে!

সমর্থকরা যখন তাকে নিয়ে এমন আফসোস করছেন সেই সময় ডি মারিয়া তার সাবেক ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদকে নিয়ে বোমা ফাটালেন। ডি মারিয়া জানাচ্ছেন, বিশ্বকাপ ফাইনালের কয়েক ঘণ্টা আগে রিয়াল প্রেসিডেন্ট তাকে একটা চিঠি পাঠায়। ওই চিঠিতে লেখা ছিল ডি মারিয়া যেন কোনভাবেই বিশ্বকাপ ফাইনাল না খেলে।

অথচ তখন চোটের সঙ্গে যুদ্ধ করে ডি মারিয়া আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন ফাইনাল খেলতে। সেই সময় ক্লাব প্রেসিডেন্ট ফিওরেন্তিনা পেরেজের ওই চিঠি তাকে ক্ষুব্ধ করে তোলে। বাকিটা শুনুন ডি মারিয়ার মুখে, ‘বিশ্বকাপের ফাইনাল শুরুর কথা ছিল স্থানীয় সময় বিকেল চারটায়। ওই দিন সকাল ১১ টায় মাদ্রিদ থেকে একটা চিঠি আসে আমার কাছে। তাতে লেখা ছিল আমি যেন ফাইনালে না খেলি। একবার চিন্তা করুণ ওই মহূর্তটির কথা। আমি নিজেকে বিশ্বকাপ ফাইনালের জন্য তৈরি করছি, যেভাবেই হোক মাঠে নামার জন্য। আবার চোট লাগতে পারে জেনেও ঝুঁকি নিতে চেয়েছিলাম। চিঠিটা হাতে পেয়ে এতই বিরক্ত হয়েছিলাম যে, সঙ্গে সঙ্গে ছিঁড়ে ফেলি। মনে মনে ভেবেছিলাম যা ঘটে ঘটুক এই চিঠিকে গুরুত্বই দেব না।’

রিয়ালের খেলোয়াড়দের সঙ্গে ক্লাব প্রেসিডেন্টের সম্পর্ক যে মোটেও ভাল নয় এদিন সেটাও অকপটে বলে দিয়েছেন ডি মারিয়া। তবে রিয়ালের সতীর্থরা তার খুব ঘনিষ্ঠ সেটা জানাতেও ভোলেননি সদ্য ম্যানচেষ্টার ইউনাইটেডে যোগ দেওয়া এই আর্জেন্টাইন, ‘আমি কখনোই রিয়াল ছাড়তে চাইনি। আসলে ক্লাব অন্য ফুটবলার কিনবে বলে ঠিক করেছিল। ওখানে সতীর্থদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুবই ভাল। তবে পেরেজের সঙ্গে কোনদিনই সম্পর্ক ভাল ছিল না। এমনকি যখন চুক্তি হয়েছিল তখনও আমি উপস্থিত ছিলাম না।’

তবে ডি মারিয়াকে রিয়ালে রেখে দিতে কম চেষ্টা করেননি সময়ের সেরা ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। প্রথমে আকারে-ইঙ্গিতে বলেছেন, পরে ক্লাব কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন যেন ডি মারিয়াকে বিক্রি করা না হয়। তার কথা কর্ণপাত করেনি রিয়াল কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে প্রকাশ্যে হতাশা প্রকাশ করে রোনালদো বলেন, ‘ডি মারিয়াও চলে গেল। ক্লাব ভাল খেলবে কি করে।’ রোনালদোর সব কথাই কানে গিয়েছে ডি মারিয়ার। আর এ জন্য রোনালদোর প্রতি কৃতজ্ঞই জানাচ্ছেন তিনি, ‘ক্রিশ্চিয়ানো বরাবরই আমার পাশে দাঁড়িয়েছে। রিয়েলে আমাকে রেখে দেওয়ার জন্য অনুরোধও করেছিল ক্লাব কর্তৃপক্ষকে। জানি না, ও রিয়েলে আর কতদিন থাকবে।’



মন্তব্য চালু নেই