বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ায় শ্রেচ্ছাশ্রমে বাঁশের সাকো নির্মাণ

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীর বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ায় স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত হচ্ছে বাঁশের সাকো। স্থানীয় লোকজন বাড়ী বাড়ী বাঁশ সংগ্রহ করে গায়ে খেটে এ বাঁশের সাকো নির্মান করছেন। বিভিন্ন জনের কাছে দেন দরবার করে কোন সহযোগিতা না পাওয়ায় নিজেরা কোমড় বেধেঁ নেমেছেন সাকো নির্মানে। নীল কোমল নদীর উপর ব্রীজ নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। কিন্তু বরাদ্দ না আসায় কষ্ট দূর করতে গ্রামের মানুষ নিজেরাই সাকো নির্মান করে অনন্য নজির স্থাপন করলেন। ফলে ছিটমহলসহ অন্যান্য এলাকার কয়েক সহ¯্রাধিক মানুষ এ সাকো দিয়ে পারাপার করতে পারবেন।

ফুলবাড়ীর বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ার মাঝ দিয়ে বয়ে চলেছে ভারত থেকে বয়ে আসা কৃশকায় নদী নীলকোমল। শুকনো মৌসুমে যাকে নালার মতো দেখায়। এই নীলকোমল নদী পেরিয়ে যেতে হয় উপজেলা শহর ফুলবাড়ীতে। অনেক প্রতিশ্রুতির কথা শোনা গেলেও এই নদীর উপর একমাত্র বাঁশের তৈরি পারাপারের সাকোটি অকেজো হয়ে গেলেও গত এক বছরেও সরকারিভাবে নির্মাণের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে ভরা মৌসুমে দুর্বল সাকোটি পারাপারের অনুপযোগী হয়ে পড়ায় লোকজন চরম ঝুকির মধ্যে কলার ভেলায় পারাপার করছে। এই ভেলা করেই পাড় করা হচ্ছে অসুস্থ্য রোগী, গর্ভবতী মা, সাইকেল-মোটর সাইকেলসহ ভারী জিনিসপত্র।

সাবেক ছিট আন্দোলনের নেতা ময়নুল হক ও গোলাম মোস্তফা জানান, দীর্ঘ এক বছর পেরিয়ে গেল আমরা বাংলাদেশের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছি। আমরা বিদ্যুৎ পেয়েছি, রাস্তা সংস্কার করা হচ্ছে। কিন্তু নীলকোমল নদীর উপর দিয়ে পারাপারের একমাত্র সাকোটি ভেঙে পড়ায় এখন অনেক পথ ঘুরে আমাদের ফুলবাড়ী উপজেলা শহরে যেতে হচ্ছে। অনেকে ঝুকিতে ভেলায় পারাপার করছে। বিভিন্ন জায়গায় কথা বলেও কোন প্রতিশ্রুতি না পাওয়ায় এলাকার জনগণ নিজ উদ্যোগে সাকোটি মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে।

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দাসিয়ারছড়া ছিটমহলে আসার সময় উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে বাঁশের সাকোটি নির্মাণ করা হয়। এরপর থেকে সেটি আর সংস্কার করা হয়নি।। চলতি বর্ষা মৌসুমে সাকোটি দুর্বল হয়ে ভেঙে পড়ায় লোক চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি হয়। এরপর থেকেই এলাকার লোকজন বিভিন্ন মানুষের কাছে দেনদরবার করে সহযোগিতার জন্য। কিন্তু কেউ এগিয়ে আসেনি। ফলে স্থানীয় কয়েকজন মানুষ উদ্যোগ নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে সাকোটি সংস্কারের কাজ শুরু করেন।

কালিরহাট বাজারের আব্দুল হাকিম ও শিক্ষক নূর আলম মাস্টার জানান, এই এলাকার ময়নুল হক, হানিফ উদ্দিন, আমিনুল ইসলাম ও মনির হোসেনসহ বেশ কয়েকজন মিলে এলাকার লোকজনের কাছ থেকে বাঁশ সংগ্রহ করে নিজেদের শ্রমে সাকোটি মেরামত করছি।
আমাদের দীর্ঘদিনে দাবি এই নদীর উপর দ্রুত ব্রীজ নির্মাণের। ব্রীজ না থাকার কারণে অসুস্থ্য রোগী বা গর্ভবতী মায়েদের পারাপারে খুব সমস্যা হচ্ছে। এটি নির্মিত হলে কৃষক তার উৎপাদিত ফসল বাইরে নিয়ে যেতে পারবে। উপকৃত হবে ছিটমহলসহ অন্যান্য এলাকার কয়েক সহ¯্রাধিক মানুষের।

এ ব্যাপারে ফুলবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী শামসুল আরেফিন খান জানান, দাসিয়ারছড়া উন্নয়নে একটি প্যাকেজ প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে। এই ব্রীজটি পিপিতে আছে। এখনো বরাদ্দ পাইনি। বরাদ্দ পেলে দ্রুততম সময়ে ব্রীজ নির্মাণ করা হবে।



মন্তব্য চালু নেই