বিয়ের উপহার হিসেবে ব্যাগে ভরে ২১টি বিসাক্ত সাপ দেওয়ায় এই জায়গার রীতি!

আত্মীয়ের বিয়েতে কী দেবেন ভাবছেন ? মোবাইল, ল্যাপটপ না শাড়ি, গয়না ? উপহার পেলে সবাই খুশি হয়৷ তবে ছত্তিসগড়ের যোগীনগরের কেউ যদি আপনার পরিচিত হয় তাঁকে ভুলেও নেমতন্ন করবেন না ! তিনি বিয়েতে এলেই সবাই আঁতকে উঠবে৷ কারণ ২১টি জ্যান্ত সাপ নিয়ে আসবেন আপনার সেই বন্ধু ! সৌজন্য রক্ষার খাতিরে উপহার নিতেই হবে৷ এটাই দস্তুর ছত্তিসগড়ের মহাসমুন্দ জেলার যোগীনগরের বাসিন্দাদের৷ তাঁরা বিয়েতে সাপ উপহার দেন৷ স্থানীয় নিয়মানুসারে সেই ২১টি সাপকে পুরো দু মাস খাইয়ে দাইয়ে তোয়াজ করতে হবে৷ বুঝুন কাণ্ড ! ঘরের মধ্যে একটা বা দুটো হাঁড়িতে ২১টি সাপ অনবরত কিলবিল করছে৷ মাঝে মধ্যেই ফোঁসফোঁস করে চলেছে৷ এরকম চলবে পুরো দুটো মাস৷ তারপর সেই সাপগুলোকে আবার জঙ্গলে ছেড়ে দিতে হবে৷

এক অদ্ভুত নিয়ম এই যোগীনগরের৷ এখানে সাপ সন্তানের মতো পালিত হয় প্রতি বাড়িতে৷ কেউ যদি সাপ মেরে ফেলেন তাহলে তাঁকে বিশাল অনুষ্ঠান করে শেষকৃত্যের অনুষ্ঠান করতে হবে৷ সঙ্গে অনেক খাওয়া দাওয়া৷

যোগীনগর এলাকাটি সাপুড়েদের জন্য প্রসিদ্ধ৷ এখানকার বাসিন্দাদের মূল পেশা সাপ ধরা৷ আর সাপের খেলা দেখানো৷ছোট-বড় সবাই মনের আনন্দে গোখরো, কেউটে, চন্দ্রবোড়া, শাঁখামুটিসহ বিভিন্ন ধরণের সাপ ধরতে ওস্তাদ৷ যোগীনগরের প্রচলিত রীতি জঙ্গল থেকে সাপ ধরে মাস দুয়েক পর আবার সাপকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া৷ আবার বিভিন্ন ওষধি গাছের পাতা দিয়ে চিকিৎসা করেন তাঁরা৷ ছত্তিসগড় বনবিভাগ লাগাতার প্রচার চালিয়েছে-সাপ ধরা নিষেধ৷৷ যোগীনগরের বাসিন্দারা তা মানেননি৷ তাদের দাবি প্রচুর সাপ ধরলেও তাদের কোনোরকম ক্ষতি করা হয়না৷ সাপ ধরা তাদের সামাজিক রীতি৷ সেই রীতি অনুসারে যোগীনগরে কোনও বিয়ে অনুষ্ঠিত হলে কন্যাপণ হিসেবে অন্যান্য উপহারের পাশাপাশি ২১টি সাপ দেওয়া হয়৷ সাপ না দিলে বিয়েই হবে না৷ সাপের সংখ্যা কম পড়লে অন্যদের কাছে সাপ ধার করা হয়৷

যোগীনগরের আর্থিক অবস্থা খারাপ৷ অভিযোগ, সরকারী প্রকল্পের অধীনে কোনও কাজ মেলেনা৷ এলাকায় পৌঁছায়নি বিদ্যুতের লাইন৷ রোজগারের জন্য তাই সাপ ধরাকেই মূল পেশা হিসেবে রেখে দিয়েছেন যোগীনগরবাসী৷



মন্তব্য চালু নেই